মুম্বাইয়ের একটি পাচতারা হোটেলে টেরোরিস্টরা অবস্থান নিয়েছে। ভেতরের লোকজনদের জিম্মি করা হয়েছে। অতিথীরা সবাই সমাজের হোমরা চোমরা লোকজন। এর মধ্যে বেশ কিছু বিদেশী ট্যুরিস্টও রয়েছে। সাধারণ কোন লোকে এ ধরনের হোটেলে ঢুকার কল্পনাও করতে পারবেনা। টেরোরিস্টদের এ হোটেলটা বেছে নেবার এটাও একটা কারণ।
এদের সব বিদ্বেষ সমাজের উপরতলার পয়সাওয়ালা লোকদের প্রতি। মাঝে মধ্যে অবশ্য অপারেশন চালাতে গিয়ে নিরীহ লোকজনও মারা পড়ে। এটা তেমন কিছু নয়। বড় কিছু পেতে হলে ছোট খাট কিছু আত্নত্যাগ সবাইকেই করতে হয়।
সবাই খুব টেনশনে রয়েছে। সরকার কি এদের অন্যায্য দাবী মেনে নেবে। এদের গ্রুপ লিডার বলেছে সরকার তাদের দাবী মেনে না নিলে কাউকেই বাইরে যেতে দেয়া হবে না। এক সময় এরা কেউই আর জীবিত থাকবে না।
সবাই মনে মনে প্রার্থনা করছে সরকার এদের দাবী মেনে নিক। যদিও এদের দাবী কি তারা কেউই তা জানেন না। অন্য সময় হলে এরা সবাই প্রতিবাদের ঝড় উঠাত। দরকার হলে প্রাণ দিয়ে দেব কিন্তু অন্যায়ের কাছে মাথা নত করব না।
কিন্ত এই জীবন মৃত্যুর মাঝখানে সেই সব চিন্তা ভাবনা কেমন হাস্যকর মনে হচ্ছে। চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে প্রতিদিনের সংবাদপত্র পড়ে দেশ আর সমাজ নিয়ে মন্তব্য করা কত সহজ। অথচ প্রকৃতিপক্ষে বাস্তবতা কত কঠিন জিনিস।
প্রত্যেকেই চাচ্ছে এরা গুলি করা শুরু করলে তার সিরিয়াল য়েন সবার শেষে আসে। এতে কিছু বেশী সময় ধরে বেচে থাকার সুযোগ পাওয়া যাবে। অন্য সময় হলে এ ধরনের চিন্তাভাবনা কত স্বার্থপরের মত শুনাত। কিন্তু এখন তা কত স্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছে।
আচ্ছা এরা কোন ধর্মের। ভারত সরকার দাবী করছে এরা পাকিস্তানী। তাহলে এই টেরোরিস্টরা মুসলিম টেরোরিস্ট। কিন্তু টেরোরিজমের তো কোন ধর্ম নেই। তাহলে মুসলিম টেরোরিস্ট-হিন্দু টেরোরিস্ট বলে কোন কিছু নেই। টেরোরিস্টদের একটাই পরিচয়। তারা টেরোরিস্ট। এদের কোন জাতি নেই, কোন ধর্ম নেই। এদের কোন দেশ নেই। সন্ত্রাসবাদ হচ্ছে এদের ধর্ম। তাই টেরোরিস্টরা কি পাকিস্তানের না ভারতের তাতে কি আসে যায়।
এদের অস্ত্র থেকে যে বুলেট বের হবে সেই বুরেটের গায়ে কোন কিছু লেখা থাকবে না। এক নিমিষে তা কোন মায়ের বুক খালি করে দেবে। এখন এই মুহুর্তে হোটেলে আটকা পড়া লোকজন আর এই সন্ত্রাসীরা, এদের হাতের অস্ত্রই বাস্তব। আর সব কিছু অবাস্তব। জাতি, ধর্ম, দেশ, সমাজ, রাজনীতি অবেগ, মূল্যবোধ সবকিছু।
Friday, December 5, 2008
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment