মা বাবার হয়ত ইচ্ছে ছিল ছেলে বড় হয়ে একটা কিছু হবে। হতে পারলাম না কিছুই।
শৈশবে ভাবতাম কখন বড় হব। শৈশব কাল এত দীর্ঘ কেন। ইচ্ছে হলেই বৃষ্টির পানির পানিতে গা ভেজানো যাবে না। রয়েছে ঠান্ডা লেগে যাবার ভয়। খালি সীমাবদ্ধতা। এরই মাঝে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠা।
তারপর একদিন বড় হলাম। হয়নি কিছুই। মাঝে মাঝে শুধু পিছনে ফিরে দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া। হায় কোথায় হারিয়ে ফেললাম আমার সেই সোনালী শৈশব। এখনও সীমাবদ্ধতার শেকল পিছু ছাড়েনি। এখন আর বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছে করে না। মনে হয ছেলেমানুষী।
কিছুইতো দেখা হল না। করা হয়নি অনেক কিছুই। কাছ থেকে শুনা হয়নি সমুদের গর্জন। দেখা হয়নি আকাশ ছুতে চাওয়া পাহাড়ের সারি। নেয়া হয়নি অরণ্যের বুনো গন্ধ। কি অর্থ এই বেচে থাকার।
তারপরও দেখা হয়েছে অনেক কিছুই। দেখা হয়েছে মাথার উপরে বিশাল আকাশ। কারণ আকাশ দেখতে কোথাও যেতে হযনা। ইচ্ছে হল উপরে তাকিয়ে দেখে নাও। পেজা তুলার মত মেঘ যখন ভেসে বেড়ায় প্রতিবারই মনে হয় আগেতো এটা দেখা হয়নি। দেখা হয়েছে ভোরের প্রথম আলো যখন কুয়াশার চাদর ভেদ করে পৃথিবীতে এসে পড়ে। যেন কোন নবজাতক মাতৃ গর্ভ থেকে পৃথিবীতে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে।দেখা হয়েছে পৃথিবী যখন রাতের আধারে ঢেকে যেতে শুরু করে সেই সময়ে গোধূলীর আলো আধারের খেলা। নেযা হয়েছে বর্ষার প্রথম বৃষ্টিতে ভেসে আসা মাটির ঘ্রাণ।বৃষ্টির পর আকাশের গাযে ভেসে উঠা চোখ ধাধানো রংধনুর রং দেখে বিস্ময়ে অভিভূত হতে হয়েছে। কৃ্ষণচূড়া গাছে যখন প্রথম ফুল আসে মনে হয় যেন সমস্ত গাছটাতে আগুন ধরে গেছে।বর্ষায় ফোটা কদম ফুলের গাছ দেখে মনে হয় হায় বর্ষার পর গাছটির এই অপার্থিব সোন্দর্য কোথায় মিলিয়ে যাবে।
তারপরও অনেক সীমাবদ্ধতা, না পাবার যন্ত্রনার মাঝেও কেন বার বার মনে হয় হায় জীবন এত তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যাচ্ছে কেন। এক জীবনের এই স্বল্প আয়ুর মাঝে এখনতো বাকী রয়ে গেছে অনেক কিছু করার অনেক কিছু দেখার।
Sunday, December 14, 2008
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment