একটি গল্প ও একটি পোস্ট
একটি গল্প
এক নৈশ প্রহরী রাজার বাড়ী পাহাড়া দিত। একদিন সে স্বপ্ন দেখল রাজা একটি গ্রাম পরিদর্শনে গিয়েছেন। হঠাৎ ভূমিকম্পে রাজা সহ সেই গ্রামের সব লোক মারা গেল।
পরদিন দেখা গেল রাজা সত্যি সত্যি স্বপ্নে দেখা গ্রাম পরিদর্শনে যাচ্ছেন। নৈশ প্রহরী রাজাকে রাতে দেখা স্বপ্নের কথা বর্ণনা করে না যাবার অনুরোধ করল। ঐ দিন দুপুরে ভূমিম্পে ঐ গ্রামের অনেক লোক মারা গেল।
রাজা ঐ নৈশ প্রহরীকে ডেকে এনে খুশি হয়ে অনেক বখশিস দিলেন এবং তাকে চাকুরি থেকে বরখাস্থ করলেন। নৈশ প্রহরী অবাক হয়ে জানতে চায়- মহারাজ আমি আপনার প্রাণ বাচিয়েছি তাই খুশি হয়ে আপনি আমাকে বখশিস দিয়েছেন কিন্তু পুনরায় আবার চাকরি থেকে বের করে দিচ্ছেন। এটা কেমন বিচার।
রাজা উত্তর দেন-বখশিস দিয়েছি কারণ তুমি আমার প্রাণ বাচিয়েছ। আর চাকরি থেকে তোমাকে ছাটাই করেছি কারণ তুমি কর্তব্য পালনে অবহেলা করেছ। রাতে পাহারা দেবার বদলে তুমি সারা রাত ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে কাটিয়েছ।
গল্পের ব্লগীয় রূপান্তর
একবার এক সাইটে মুসলিমদের কোরআন শরীফে লেখা একটি সংখ্যা নিয়ে ভুল ব্যাখা প্রদান করা হয়। বলা হয় ধর্মগ্রন্থে ঐ সংখ্যাটির যে অর্থ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। এই সংখ্যাটি মূলত হিন্দু বেদ গ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে এবং মুসলমানরা নিজেদের অজ্ঞতার কারণে এতদিন এর ভুল ব্যাখা প্রদান করে আসছে।
এক ব্লগার একটি পোস্টের মাধ্যমে এই তথ্য একটি ব্লগ সাইটে সবার কাছে প্রকাশ করে দেয়। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল মুসলমান সম্প্রদায়কে আসন্ন ধর্মীয় বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করা।
কিন্তু সবাই তাকে ভুল বুঝল। কেউ বুঝার চেষ্টা করল না যে এর পেছনে তার কোন অসৎ উদ্দেশ্য নাই। তারা ধরে নিল এটা ঐ পেস্টদাতার নিজস্ব মতামত। তার মনে নিশ্চয়ই কু রয়েছে। ফলে সবাই ইয়া আলি বলে তার উপর ঝাপিয়ে পড়ল। কেউ তাকে ছাগল, কেউ তাকে গাধা উপাদিতে ভূষিত করল। সন্মিলিত আক্রমণের কাছে ঐ ব্লগার কোণঠাসা হয়ে পড়ল এবং এক পর্যয়ে সেও সবাই কে তুই তুকারি করা শুরু করে দিল।
ইয়া মাবুদ- তুমি মানবকূলকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা, আমাদের সবার শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। আমিন।
Sunday, March 21, 2010
Tuesday, March 9, 2010
আমি আবার আসিব ফিরে
ফাদার মারিনো রিগন এর জন্ম ইটালির ভেনিসের অদূরে ভিচেন্সার ভিল্লাভেরলা গ্রামে। ১৯৫৩ সালের ৭ জানুয়ারী কলকাতা হয়ে বেনাপোল সীমান্ত পথে এ দেশে আসেন। সেই থেকে আজ অবধি বাংলাদেমের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে তিনি ধর্ম প্রচার করে চলেছেন। এখন স্থায়ী ভাবে বাস করছেন সমুদ্রবন্দর মংলা পৌর এলাকার শেলাবুনিয়ায়। সেখানে তিনি গড়ে তুলেছেন সাধুপলের গীর্জা। ১০০ টির মত বাংলা বই তিনি ইটালি ভাষায় অনুবাদ করেছেন। তিনি এ দেশে বসবাস করছেন প্রায় ৫৮ বছর ধরে। ২৬ বছর বয়সে তিনি ফাদার পদে অভিষিক্ত হওয়ার দুই বছর পর এ দেশে চলে আসেন।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন বানিয়ারচর গ্রামের ক্যাথলিক গির্জার প্রধান যাজক। দিনের বেলায় গির্জা, রাতের বেলায় তিনি গির্জাটাকে বানিয়ে ফেলতেন হাসপাতাল। ১৯৭১ সালে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ফরিদপুর অঞ্চলের সাব সেক্টর কমান্ডার হেমায়েত উদ্দিন বীর বিক্রমসহ অনেক মুক্তিযুদ্ধাকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন জীবনের ঝুকি নিয়ে।হাজার হাজার শরণার্থী ও মুক্তি যোদ্ধাদের দিয়েছেন আশ্রয়, খাদ্য সবোর্পরি খ্রিস্টীয় মিশনের ছত্রছায়ায় নিরাপদে বিভিন্ন স্থানে পৌছে দেয়ার সুযোগ।
ফাদার মারিনো রিগন ২০০৮ সাল পর্যন্ত বারবার আবেদন করেছেন তাঁকে এ দেশের নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য অথচ তাঁকে নাগরিকত্ব দেয়া হয়নি। অবশেষে, ২০০৯ সালে তিনি এ দেশের নাগরিত্ব পান। এর জন্য উনাকে অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে। কিন্তু তারপরও মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ দেশের সন্মানসূচক নাগরিকত্ব প্রাপ্তিকে তিনি স্মরণ করেন পরম কৃতজ্ঞতার সাথে।
দীর্ঘ ৩৮ বছরে এটা নিয়ে কথা বলার মত কেউকি আমাদের দেশে ছিলেন না? আমাদের দেশে এত সব বুদ্ধিজীবিরা রয়েছেন। যারা স্বাধীনতা, বিজয় দিবসের মাস এলেই ধবধবে সাদা পাঞ্জাবী গায়ে দিয়ে টিভি পর্দায় উপস্থিত হন। মুক্তিযুদ্ধের আবেগে উনাদের গলা কাঁপতে শুরু করে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে কাঁপতে থাকে টিভি পর্দা। এদের অনলবর্ষী বক্তব্যে কাঁপতে থাকি আমরাও। আফসোস এদের মুখ দিয়ে যে ভাবে আগুন নির্গত হতে থাকে দেখে মনে হয় আহারে লোকটা কেন ড্রাগন হয়ে জন্মাল না।
আমার খালি মনে হয় এটা কি করে সম্ভব হয়। বিদেশী একটি মানুষ কিভাবে একটি দেশকে সেই দেশের মানুষকে এভাবে ভালবাসতে পারেন। এই অসম্ভব হৃদয়বান মানুষটাকে আমরা কি দিয়েছি। এরকম অনেক ফাদার মারিনো রিগন রয়েছেন আমাদের দেশে। আমরা মুক্তিযুদ্ধে এদের অসামান্য অবদানের কথা জানি না। মুক্তিযুদ্ধের কথা আসলে শিয়ারের কুমিরের বাচ্চা দেখানোর মত করে গুটিকতক মানুষের চেহারাই আমরা বার বার ঘুরে ফিরে দেখি।
ফাদার মারিনো রিগন এর মনে কি এই প্রজন্মের প্রতি কি কোন ক্ষোভের সঞ্চার হয় না। নিশ্চয়ই না। কারণ এই জন্যেই উনার মত মানুষেরা অসাধারণ আর আররা অতি সাধারণ। কি পেলাম আর কি হারালাম তা দেখার জন্য উনার মত মানুষেরা কখনও পেছনে ফিরে তাকান না। না হলে তিনি এভাবে বলতে পারতেন না-
গতবছর তিনি জটিল অপারেশনের জন্য ইতালী যাওয়ার আগে গির্জার লোকজনকে বলে গিয়েছিলেন, ইতালীতে তাঁর মৃত্যু হলে তাঁকে যেন বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়, এখানেই সমাহিত করা হয়।
যাওয়ার আগে তিনি বলে গিয়েছিলেন কবি জীবনানন্দের ভাষায়- আবার আসিব ফিরে এই বাংলায়, এই ধানসিঁড়ি নদীর তীরে...।
মাঝে মাঝে মনে হয় একবার গিয়ে দেখে আসি আজ এত বছর পর কেমন আছেন ফাদার মারিনো রিগন নামের ৮৪ বছরের অশিতপর লোকটি। জানি আমার সীমাবদ্ধ জীবনের গন্ডিতে এই কাজটি হয়ত কখনও করা হয়ে উঠবে না।
তারপরও যদি কখনও সুযোগ আসে তাহলে আমি উনার কাছে জানতে চাইব- ফাদার, আপনি আপনার জীবনের শ্রেষ্ট সময়টুকু এই দেশ এই দেশের লোকদের দিয়ে দিয়েছেন। কখনও কি আপনার নিজের দেশ ইতালি, নিজের গ্রাম যেখানে আপনি আপনার শৈশবের শ্রেষ্ট সময়টুকু কাটিয়েছেন, সেই গ্রামের মানুষের জন্য মন কাঁদে না।
হয়ত ফাদার উত্তর দিবেন-মাই সান, আমার মনও তাদের জন্য কাঁদে বৈকি। কিছু চোখের পানি আছে যা দেখা যায়, কিছু আছে দেখা যায় না- এইটুকুই খালি যা পার্থক্য।
তথ্য ঋণ: ১. দৈনিক ইত্তেফাক (০৭.০৩.২০১০)
২. click the link
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন বানিয়ারচর গ্রামের ক্যাথলিক গির্জার প্রধান যাজক। দিনের বেলায় গির্জা, রাতের বেলায় তিনি গির্জাটাকে বানিয়ে ফেলতেন হাসপাতাল। ১৯৭১ সালে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ফরিদপুর অঞ্চলের সাব সেক্টর কমান্ডার হেমায়েত উদ্দিন বীর বিক্রমসহ অনেক মুক্তিযুদ্ধাকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন জীবনের ঝুকি নিয়ে।হাজার হাজার শরণার্থী ও মুক্তি যোদ্ধাদের দিয়েছেন আশ্রয়, খাদ্য সবোর্পরি খ্রিস্টীয় মিশনের ছত্রছায়ায় নিরাপদে বিভিন্ন স্থানে পৌছে দেয়ার সুযোগ।
ফাদার মারিনো রিগন ২০০৮ সাল পর্যন্ত বারবার আবেদন করেছেন তাঁকে এ দেশের নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য অথচ তাঁকে নাগরিকত্ব দেয়া হয়নি। অবশেষে, ২০০৯ সালে তিনি এ দেশের নাগরিত্ব পান। এর জন্য উনাকে অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে। কিন্তু তারপরও মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ দেশের সন্মানসূচক নাগরিকত্ব প্রাপ্তিকে তিনি স্মরণ করেন পরম কৃতজ্ঞতার সাথে।
দীর্ঘ ৩৮ বছরে এটা নিয়ে কথা বলার মত কেউকি আমাদের দেশে ছিলেন না? আমাদের দেশে এত সব বুদ্ধিজীবিরা রয়েছেন। যারা স্বাধীনতা, বিজয় দিবসের মাস এলেই ধবধবে সাদা পাঞ্জাবী গায়ে দিয়ে টিভি পর্দায় উপস্থিত হন। মুক্তিযুদ্ধের আবেগে উনাদের গলা কাঁপতে শুরু করে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে কাঁপতে থাকে টিভি পর্দা। এদের অনলবর্ষী বক্তব্যে কাঁপতে থাকি আমরাও। আফসোস এদের মুখ দিয়ে যে ভাবে আগুন নির্গত হতে থাকে দেখে মনে হয় আহারে লোকটা কেন ড্রাগন হয়ে জন্মাল না।
আমার খালি মনে হয় এটা কি করে সম্ভব হয়। বিদেশী একটি মানুষ কিভাবে একটি দেশকে সেই দেশের মানুষকে এভাবে ভালবাসতে পারেন। এই অসম্ভব হৃদয়বান মানুষটাকে আমরা কি দিয়েছি। এরকম অনেক ফাদার মারিনো রিগন রয়েছেন আমাদের দেশে। আমরা মুক্তিযুদ্ধে এদের অসামান্য অবদানের কথা জানি না। মুক্তিযুদ্ধের কথা আসলে শিয়ারের কুমিরের বাচ্চা দেখানোর মত করে গুটিকতক মানুষের চেহারাই আমরা বার বার ঘুরে ফিরে দেখি।
ফাদার মারিনো রিগন এর মনে কি এই প্রজন্মের প্রতি কি কোন ক্ষোভের সঞ্চার হয় না। নিশ্চয়ই না। কারণ এই জন্যেই উনার মত মানুষেরা অসাধারণ আর আররা অতি সাধারণ। কি পেলাম আর কি হারালাম তা দেখার জন্য উনার মত মানুষেরা কখনও পেছনে ফিরে তাকান না। না হলে তিনি এভাবে বলতে পারতেন না-
গতবছর তিনি জটিল অপারেশনের জন্য ইতালী যাওয়ার আগে গির্জার লোকজনকে বলে গিয়েছিলেন, ইতালীতে তাঁর মৃত্যু হলে তাঁকে যেন বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়, এখানেই সমাহিত করা হয়।
যাওয়ার আগে তিনি বলে গিয়েছিলেন কবি জীবনানন্দের ভাষায়- আবার আসিব ফিরে এই বাংলায়, এই ধানসিঁড়ি নদীর তীরে...।
মাঝে মাঝে মনে হয় একবার গিয়ে দেখে আসি আজ এত বছর পর কেমন আছেন ফাদার মারিনো রিগন নামের ৮৪ বছরের অশিতপর লোকটি। জানি আমার সীমাবদ্ধ জীবনের গন্ডিতে এই কাজটি হয়ত কখনও করা হয়ে উঠবে না।
তারপরও যদি কখনও সুযোগ আসে তাহলে আমি উনার কাছে জানতে চাইব- ফাদার, আপনি আপনার জীবনের শ্রেষ্ট সময়টুকু এই দেশ এই দেশের লোকদের দিয়ে দিয়েছেন। কখনও কি আপনার নিজের দেশ ইতালি, নিজের গ্রাম যেখানে আপনি আপনার শৈশবের শ্রেষ্ট সময়টুকু কাটিয়েছেন, সেই গ্রামের মানুষের জন্য মন কাঁদে না।
হয়ত ফাদার উত্তর দিবেন-মাই সান, আমার মনও তাদের জন্য কাঁদে বৈকি। কিছু চোখের পানি আছে যা দেখা যায়, কিছু আছে দেখা যায় না- এইটুকুই খালি যা পার্থক্য।
তথ্য ঋণ: ১. দৈনিক ইত্তেফাক (০৭.০৩.২০১০)
২. click the link
Thursday, February 25, 2010
কবি আপনিও!!!
লোকটাকে প্রথম দেখে আমি চমকে উঠি। আরে ইনি যে অনেকটা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মত দেখতে। মুখে লম্বা দাড়িঁ। চোখে চশমা। হাঁটেন মাথা নীচু করে। স্বল্পভাষী লোকটা সব সময় কি যেন চিন্তা করেন। অনেকটা আপন খেয়ালে মগ্ন।
পরে জানতে পারলাম ইনি কবি নির্মলেন্দু গুণ। কবিতা আমি বুঝি না। কিন্তু কবি নির্মলেন্দু গুণ কি এক অজানা কারণে আমাকে আকৃষ্ট করতেন। হয়ত উনার সাধাসিধা চলন। হয়তবা উনার ব্যক্তিত্ব। আমি ঠিক জানি না।
‘আবদুল গাফফার চৌধুরী ও নির্মলেন্দুগুণের দৃষ্টিতে জয়নাল হাজারী’-তরফদার প্রকাশনী। বইটি একুশের বই মেলায় পাওয়া যাচ্ছে। দাম ২০ টাকা। আমি বিস্মিত হইনি। এখন আর আমি কোন কিছুতে তেমন একটা বিস্মিত হই না।
বইটি আমি পড়িনি, পড়ার কোন আগ্রহও নেই। বইয়ে কি লেখা আছে আমার জানা নাই। কিন্তু আমি যেটা জানি সেটা হচ্ছে-প্রতিনিয়ত আমরা দানবীয় শক্তির কাছে কত সহজেই না পরাজিত হচ্ছি। কিন্তু তারপরও বুকের মাঝে কেমন এক চাপা কষ্টের অনুভূতি এসে ভিড় করে। মন বিদ্রোহ করে উঠে। কেন এমন হয়। এত সহজে কেন আমরা হার মানি।
শুধু দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ভাবি গুণ দা শেষ পর্যন্ত আপনিও.......
ছবি সূত্র: কালের কন্ঠ, ২২.০২.২০১০
পরে জানতে পারলাম ইনি কবি নির্মলেন্দু গুণ। কবিতা আমি বুঝি না। কিন্তু কবি নির্মলেন্দু গুণ কি এক অজানা কারণে আমাকে আকৃষ্ট করতেন। হয়ত উনার সাধাসিধা চলন। হয়তবা উনার ব্যক্তিত্ব। আমি ঠিক জানি না।
‘আবদুল গাফফার চৌধুরী ও নির্মলেন্দুগুণের দৃষ্টিতে জয়নাল হাজারী’-তরফদার প্রকাশনী। বইটি একুশের বই মেলায় পাওয়া যাচ্ছে। দাম ২০ টাকা। আমি বিস্মিত হইনি। এখন আর আমি কোন কিছুতে তেমন একটা বিস্মিত হই না।
বইটি আমি পড়িনি, পড়ার কোন আগ্রহও নেই। বইয়ে কি লেখা আছে আমার জানা নাই। কিন্তু আমি যেটা জানি সেটা হচ্ছে-প্রতিনিয়ত আমরা দানবীয় শক্তির কাছে কত সহজেই না পরাজিত হচ্ছি। কিন্তু তারপরও বুকের মাঝে কেমন এক চাপা কষ্টের অনুভূতি এসে ভিড় করে। মন বিদ্রোহ করে উঠে। কেন এমন হয়। এত সহজে কেন আমরা হার মানি।
শুধু দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ভাবি গুণ দা শেষ পর্যন্ত আপনিও.......
ছবি সূত্র: কালের কন্ঠ, ২২.০২.২০১০
Tuesday, February 23, 2010
দেশ কাঁপানো এক দিন।
গ্রামীণ ফোন এর দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিট। মিডিয়া পার্টনার প্রথম আলো, চ্যানেল আই। পুরো দুনিয়াকে এরা কাঁপাতে পেরেছেন কিনা জানি না। তবে মিডিয়াকে ভাল ভাবেই কাঁপাতে পেরেছেন। এদের শ্রদ্ধা প্রদর্শনের নমুনা-
মোবাইল কোম্পানীগুলি টয়লেটে কোন টিস্যু পেপার ব্যবহার করে প্রতিকাওয়ালারা এটাও ফলাও করে প্রকাশ করে। কিন্তু এই খবরটি বেমালুম হজম করে ফেলেছে।
বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানীগুলি থেকে শুরু করে দেশীয় আলকাতরা কোম্পানী কেউই পিছিয়ে নেই। পত্রিকা টিভিতে অনেক টাকা খরচ করে এদের একেক জনের ঢাউস সাইজের বিজ্ঞাপন-ভাষা আন্দোলনের সকল সৈনিক ও অমর শহীদদের প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
শহীদ মিনারে ভোর বেলায় খালি পায়ে কার আগে কোন দল ফুল দেবে তা নিয়ে রীতিমতো মারামারি লেগে যায়। একজন বুদ্ধিজীবি টিভিটে সাক্ষাতকার দিচ্ছেন-আজকাল একুশের চেতনা সবার মাঝেই ছড়িয়ে পড়েছে। আমার কাজের মেয়েটি বলছে-স্যার কাইল আমারে ছুটি দেন। শহীদ মিনারে ফুল দিতে যামু।
বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিশিষ্ট ব্যক্তি বর্গরা (সবাই নন) সেখানে তাদের বক্তব্য পেশ করেন। টিভিতে শহীদ দিবসের নাটক, অনুষ্ঠান প্রচারের ধুম পড়ে যায়।
চা-পান-সিগারেটের দোকানগুলিতে সারাদিন বাজতে থাকে-আমার ভাই এর রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি।
এরকম এক আবেগপ্রবণ জাতি আমরা। একজন বাঙালী হিসেবে আমাদের আর এর বেশী কিই বা চাইবার থাকতে পারে।
সারা বছর আমরা ঘুমিয়ে থাকি শুধু বিশেষ বিশেষ দিনগুলিতে আমরা হঠাৎ করে ঘুম থেকে জেগে উঠি। ঐ এক দিনেই দুনিয়া না হোক দেশকে অন্তত আমরা কাঁপিয়ে ফেলি।
১৯৫২ এর ২১ ফেব্রুয়ারিতে শহীদ আবুল বরকতের ছোট ভাই এর ছেলে আলাউদ্দিন বরকত বলেন- চাচা শহীদ হবার পর আজ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয়ভাবে একুশের অনুষ্ঠানে কিংবা বই মেলায় আমাদের কেউ কোন দিন ডাকেনি। ডাকা হয় না জেলা পর্যায়ের কোন অনুষ্ঠানেও। যাঁদের আত্নত্যাগ নিয়ে এত আয়োজন তাঁদের পরিবারের সদস্যদের শহীদ দিবসের জাতীয় অনুষ্ঠানে ডাকা হয় না। এ বছরও প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে চেয়েছিলেন বরকতের পরিবারের সদস্যরা। যোগাযোগও করেছিলেন বাংলা একাডেমীর কর্তৃপক্ষের সাথে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য হুমকি বিবেচনা করে তাদের সেখানে যাবার অনুমতি দেয়া হয়নি। (তথ্য সূত্র: দৈনিক কালের কন্ঠ)
আমরা বাঙালীরা সব কিছুতেই ব্যবসা খুজে ফিরি। একজন দেহপসারিণী তার দেহ বিক্রি করে। কিন্তু আমরা বিক্রি করি জন্মভূমি দেশকে, মায়ের ভাষা কে।
তারপরও দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি বুকের কোথায় যেন এক ধরণের বেদনার অনুভব হয়। যারা নিঃস্বার্থ ভাবে প্রাণ দিয়ে এ দেশকে দেশের ভাষাকে রক্ষা করেছেন তারাও এ দেশেরই সন্তান।
মোবাইল কোম্পানীগুলি টয়লেটে কোন টিস্যু পেপার ব্যবহার করে প্রতিকাওয়ালারা এটাও ফলাও করে প্রকাশ করে। কিন্তু এই খবরটি বেমালুম হজম করে ফেলেছে।
বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানীগুলি থেকে শুরু করে দেশীয় আলকাতরা কোম্পানী কেউই পিছিয়ে নেই। পত্রিকা টিভিতে অনেক টাকা খরচ করে এদের একেক জনের ঢাউস সাইজের বিজ্ঞাপন-ভাষা আন্দোলনের সকল সৈনিক ও অমর শহীদদের প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
শহীদ মিনারে ভোর বেলায় খালি পায়ে কার আগে কোন দল ফুল দেবে তা নিয়ে রীতিমতো মারামারি লেগে যায়। একজন বুদ্ধিজীবি টিভিটে সাক্ষাতকার দিচ্ছেন-আজকাল একুশের চেতনা সবার মাঝেই ছড়িয়ে পড়েছে। আমার কাজের মেয়েটি বলছে-স্যার কাইল আমারে ছুটি দেন। শহীদ মিনারে ফুল দিতে যামু।
বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিশিষ্ট ব্যক্তি বর্গরা (সবাই নন) সেখানে তাদের বক্তব্য পেশ করেন। টিভিতে শহীদ দিবসের নাটক, অনুষ্ঠান প্রচারের ধুম পড়ে যায়।
চা-পান-সিগারেটের দোকানগুলিতে সারাদিন বাজতে থাকে-আমার ভাই এর রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি।
এরকম এক আবেগপ্রবণ জাতি আমরা। একজন বাঙালী হিসেবে আমাদের আর এর বেশী কিই বা চাইবার থাকতে পারে।
সারা বছর আমরা ঘুমিয়ে থাকি শুধু বিশেষ বিশেষ দিনগুলিতে আমরা হঠাৎ করে ঘুম থেকে জেগে উঠি। ঐ এক দিনেই দুনিয়া না হোক দেশকে অন্তত আমরা কাঁপিয়ে ফেলি।
১৯৫২ এর ২১ ফেব্রুয়ারিতে শহীদ আবুল বরকতের ছোট ভাই এর ছেলে আলাউদ্দিন বরকত বলেন- চাচা শহীদ হবার পর আজ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয়ভাবে একুশের অনুষ্ঠানে কিংবা বই মেলায় আমাদের কেউ কোন দিন ডাকেনি। ডাকা হয় না জেলা পর্যায়ের কোন অনুষ্ঠানেও। যাঁদের আত্নত্যাগ নিয়ে এত আয়োজন তাঁদের পরিবারের সদস্যদের শহীদ দিবসের জাতীয় অনুষ্ঠানে ডাকা হয় না। এ বছরও প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে চেয়েছিলেন বরকতের পরিবারের সদস্যরা। যোগাযোগও করেছিলেন বাংলা একাডেমীর কর্তৃপক্ষের সাথে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য হুমকি বিবেচনা করে তাদের সেখানে যাবার অনুমতি দেয়া হয়নি। (তথ্য সূত্র: দৈনিক কালের কন্ঠ)
আমরা বাঙালীরা সব কিছুতেই ব্যবসা খুজে ফিরি। একজন দেহপসারিণী তার দেহ বিক্রি করে। কিন্তু আমরা বিক্রি করি জন্মভূমি দেশকে, মায়ের ভাষা কে।
তারপরও দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি বুকের কোথায় যেন এক ধরণের বেদনার অনুভব হয়। যারা নিঃস্বার্থ ভাবে প্রাণ দিয়ে এ দেশকে দেশের ভাষাকে রক্ষা করেছেন তারাও এ দেশেরই সন্তান।
Saturday, February 20, 2010
একটি গাধার আত্নজীবনী
ফেনীর গড ফাদার জয়নাল হাজারী তার আত্নজীবনী ‘জয়নাল হাজারী বলছি’ এই বারের বই মেলায় প্রকাশ করতে যাচ্ছেন আর এর মোড়ক উন্মোচন করবেন প্রখ্যাত কলামিষ্ট আববদুল গাফফার চৌধুরী। আপনিও আমন্ত্রিত।
কিছু দিন পূর্বে জেনেছি হাজারী সাহেব সিনেমায় মাফিয়া ডন এর ভূমিকায় অভিনয় করতে যাচ্ছেন। ছেলেবেলা থেকেই নাকি উনার অভিনয়ের শখ। এইবার জানলাম তিনি একজন লেখকও বটে। হায় এত গুণের অধিকারী এই লোকটি এত দিন কোথায় লুকিয়ে ছিলেন।
বইয়ের মোড়ক উন্মোচন জিনিসটা বই মেলায় প্রথম কে চালু করেছেন আমার জানা নাই। লেখক প্রকাশক সবাই ক্যামেরার সামনে পোজ দিয়ে দাড়াবেন। একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে মোড়ক আবদ্ধ বইটি ধরিয়ে দেয়া হবে। তিনি ধীরে ধীরে নববধূর অবগুন্ঠন উন্মোচনের মত বই এর মোড়ক খুলবেন। ক্লিক ক্লিক করে ক্যামেরার ফ্লাশ ঝলসে উঠবে। বিশিষ্ট ব্যক্তিটি কাপা কাপা গলায় লেখক আর তার বই এর গুণগান করতে শুরু করে দেবেন। সেই বিশিষ্ট বেচারা জানেও না যে বই এর ভিতরে কি আছে। এটা দেখার উনার সময়ই বা কোথায়। পরক্ষণেই উনাকে আরেক বই এর মোড়ক উন্মোচনের জন্য ছুটতে হবে।
প্রখ্যাত কলামিষ্ট আববদুল গাফফার চৌধুরী। উনাকে এই টাইটেল কে দিয়েছেন? তিনি প্রখ্যাত না অখ্যাত সেই বিতর্কে আমি যেতে চাচ্ছি না। আমি খালি সবিনয়ে জানতে চাই, স্যার আপনার রেইট কত? কলগার্লদের সাথে আগে ভাগে দর দাম ঠিক না করে রাখলে পরে সমস্যায় পড়তে হয়। স্যার আপনি মাইন্ড করবেন না। এটা অন্য প্রসঙ্গে বলা। আপনার সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। আপনার জন্য নীচে আমার একটি অফার রয়েছে-
আমরা আত্নজীবনী ‘আমি গাধা বলছি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের জন্য আকর্ষনীয় প্যাকেজে একজন প্রখ্যাত কলামিস্ট প্রয়োজন। আগ্রহীরা অতিসত্বর যোগাযোগ করুন। সময় সীমিত।
না এইবারের বই মেলায় আমার কোন বই যাচ্ছে না। আমি লেখক নই। তবে যে হারে সবাই বই লেখা শুরু করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে জয়নাল হাজারী সেখানে আমিই বা পিছিয়ে থাকি কেন। চেষ্টা করতেই বা দোষ কোথায়। এই বার সম্ভব না হলে আগামী বছর ইনশাল্লাহ। আর বিশিষ্ট কলামিষ্টরাতো বই এর মোড়ক উন্মোচন করার জন্যতো মুখিয়েই থাকেন। আর কাউকে না পাওয়া গেলে প্রখ্যাত কলামিষ্ট আববদুল গাফফার চৌধুরীতো রয়েছেনই। কারণ উনিতো আবার কাউকে না বলতে পারেন না।
ছবি সূএ: দৈনিক কালের কন্ঠ
০৭.০২.২০১০
কিছু দিন পূর্বে জেনেছি হাজারী সাহেব সিনেমায় মাফিয়া ডন এর ভূমিকায় অভিনয় করতে যাচ্ছেন। ছেলেবেলা থেকেই নাকি উনার অভিনয়ের শখ। এইবার জানলাম তিনি একজন লেখকও বটে। হায় এত গুণের অধিকারী এই লোকটি এত দিন কোথায় লুকিয়ে ছিলেন।
বইয়ের মোড়ক উন্মোচন জিনিসটা বই মেলায় প্রথম কে চালু করেছেন আমার জানা নাই। লেখক প্রকাশক সবাই ক্যামেরার সামনে পোজ দিয়ে দাড়াবেন। একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে মোড়ক আবদ্ধ বইটি ধরিয়ে দেয়া হবে। তিনি ধীরে ধীরে নববধূর অবগুন্ঠন উন্মোচনের মত বই এর মোড়ক খুলবেন। ক্লিক ক্লিক করে ক্যামেরার ফ্লাশ ঝলসে উঠবে। বিশিষ্ট ব্যক্তিটি কাপা কাপা গলায় লেখক আর তার বই এর গুণগান করতে শুরু করে দেবেন। সেই বিশিষ্ট বেচারা জানেও না যে বই এর ভিতরে কি আছে। এটা দেখার উনার সময়ই বা কোথায়। পরক্ষণেই উনাকে আরেক বই এর মোড়ক উন্মোচনের জন্য ছুটতে হবে।
প্রখ্যাত কলামিষ্ট আববদুল গাফফার চৌধুরী। উনাকে এই টাইটেল কে দিয়েছেন? তিনি প্রখ্যাত না অখ্যাত সেই বিতর্কে আমি যেতে চাচ্ছি না। আমি খালি সবিনয়ে জানতে চাই, স্যার আপনার রেইট কত? কলগার্লদের সাথে আগে ভাগে দর দাম ঠিক না করে রাখলে পরে সমস্যায় পড়তে হয়। স্যার আপনি মাইন্ড করবেন না। এটা অন্য প্রসঙ্গে বলা। আপনার সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। আপনার জন্য নীচে আমার একটি অফার রয়েছে-
আমরা আত্নজীবনী ‘আমি গাধা বলছি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের জন্য আকর্ষনীয় প্যাকেজে একজন প্রখ্যাত কলামিস্ট প্রয়োজন। আগ্রহীরা অতিসত্বর যোগাযোগ করুন। সময় সীমিত।
না এইবারের বই মেলায় আমার কোন বই যাচ্ছে না। আমি লেখক নই। তবে যে হারে সবাই বই লেখা শুরু করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে জয়নাল হাজারী সেখানে আমিই বা পিছিয়ে থাকি কেন। চেষ্টা করতেই বা দোষ কোথায়। এই বার সম্ভব না হলে আগামী বছর ইনশাল্লাহ। আর বিশিষ্ট কলামিষ্টরাতো বই এর মোড়ক উন্মোচন করার জন্যতো মুখিয়েই থাকেন। আর কাউকে না পাওয়া গেলে প্রখ্যাত কলামিষ্ট আববদুল গাফফার চৌধুরীতো রয়েছেনই। কারণ উনিতো আবার কাউকে না বলতে পারেন না।
ছবি সূএ: দৈনিক কালের কন্ঠ
০৭.০২.২০১০
এপিটাফ
কত দিন এখানে আসা হয় না। চারদিকে কেমন ঘাসের জঙ্গলে ছেয়ে গেছে। চারদিকে কুয়াশার চাদর ভেদ করে সূর্যের আলো উকি ঝুকি মারছে। ঘাসের ডগায় ফোটা ফোটা শিশির জমে রয়েছে। রোদ পড়ে কেমন ঝলমল করছে। কাব্য হাত দিয়ে ছোযার চেস্টা করে। শিশির ফোটা কেমন হাত বেয়ে গড়িয়ে পড়ে যাচ্ছে। তার বাবার এপিটাফের লেখাগুলি কালের বিবর্তনে অস্পষ্ট হয়ে পড়েছে । কাব্যের লজ্জা লাগে। হাত বাড়িয়ে এপিটাফের উপর জমে থাকা ধুলা পরিস্কার করতে চেষ্টা করে।
ছেলে বেলায় বাবার সাথে কাটানো অসংখ্য স্মুতি মনের পর্দায় এক সাথে এসে ভিড় করে। কাব্যের গাল বেয়ে চোখের পানি গড়িয়ে পড়ে। কাব্য মুছার কোন চেষ্টা করে না। কারো সমাধির সামনে দাড়িয়ে নাকি চোখের পানি ফেলতে নেই। কেন এই কথা বলা হয়েছে কাব্যের জানা নাই। সে কেমন করে হারিয়ে যাওয়া অসম্ভব ভাল লাগার স্মুতিগুলি তার মন থেকে মুছে ফেলবে।
নিজেকে তার কেমন স্বার্থপর মনে হয়। আজ কত দিন পর সে এখানে এসেছে। খুব ছোট বেলায় সে যখন হাটতে পারত না তখন বাবার হাত ধরে দাড়াতে চেষ্টা করত। বাবা তার হাত কখনও ছাড়েননি। আজ যখন তাকে তার বাবার সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন সে কত অবলিলায় তার বাবার হাত ছেড়ে দিয়েছে।
মৃত্যুর সাথে সাথেই কি একটা মানুষের সব কিছু শেষ হয়ে যায়। সমস্ত স্মৃতি, ভাল লাগা, মন্দ লাগার সমস্ত অনুভূতি। তার সামনে বাবার নামের সেই মানুষটা নাই। বিপদে পড়লে আজ আর সেই মানুষটা তাতে আগলে দাড়াবে না। বলবে না- খোকা ভয় নেই আমি আছি। কিন্তু আর সব কিছুতো ঠিকই রয়ে গেছে। এই যে সে তার বাবার সামনে দাড়িয়ে রয়েছে তার বাবাতো তাকে দেখতে পাচ্ছেন। এখনই বুঝি ধরা গলায় বলে উঠবেন-কিরে খোকা, কত কাল পরে এলি। এত দিন পরে বুঝি বাবার কথা মনে পড়ল।
কাব্য ধীরে ধীরে হাত বাড়িয়ে তার বাবার সমাধিটা ছোয়ার চেষ্টা করে। ধরা গরায় বলে উঠে-বাবা আমি তোমার অপরাধী। ভুল মানুষকে নিয়ে তুমি স্বপ্ন দেখেছ। কই কোন স্বপ্নইতো আমি তোমার পূরণ করতে পারলাম না। কেন তবে ছেলে বেলায় শুনিয়েছ ঘুম পাড়ানির গান। কেন স্বপ্ন দেখেতে শিখিয়েছ। তা না হলেই বুঝি ভাল ছিল। আজ বুকের মাঝে এক কষ্ট অনুভব হত না।
কাব্য যখন ধীরে ধীরে বড় হতে শুরু করে তখন বাবার ছেলে মানুষী কান্ডে খুব লজ্জা পেত। রাস্তা পার হবার সময় বাবা হাত ধরে রাখতেন, ছেলে দিলেই বুঝি কাব্য হারিয়ে যাবে। বাবা বুঝতেন না সে এখন বড় হয়ে গেছে। হাত ধরে রাখার এখন আর দরকার নেই। রাস্তার লোকজনরাই বা কি বলবে। দেখ দেখি কত বড় ছেলে বাবার হাত ধরে হেটে যাচ্ছে। বাবা কতই না বোকা ছিলেন। আজও কাব্য সেই ছেলে মানুষী লজ্জা অনুভব করে। বাবার উপর এক রাশ অভিমান এসে জমা হয়। বাবা কেন তুমি আমার হাত ছেড়ে দিলে। এখনও যে তোমার সেই ভালবাসার হাতখানি আমার বড়ই প্রয়োজন।
কাব্য এপিটাফটাতে হাত বুলায়। বাব তোমার কানে কানে বলি-আবার আমাদের দেখা হবে। যেখানেই তুমি থাক, যতই দূরে। তোমার হাত ধরে ছেলেবেলার মত আমরা দুইজনে আবার রাস্তা ধরে হেটে যাব। এখনও যে আমাদের অনেক পথ হাটা বাকী। বিদায় বাবা, ভাল থেকো।
ছেলে বেলায় বাবার সাথে কাটানো অসংখ্য স্মুতি মনের পর্দায় এক সাথে এসে ভিড় করে। কাব্যের গাল বেয়ে চোখের পানি গড়িয়ে পড়ে। কাব্য মুছার কোন চেষ্টা করে না। কারো সমাধির সামনে দাড়িয়ে নাকি চোখের পানি ফেলতে নেই। কেন এই কথা বলা হয়েছে কাব্যের জানা নাই। সে কেমন করে হারিয়ে যাওয়া অসম্ভব ভাল লাগার স্মুতিগুলি তার মন থেকে মুছে ফেলবে।
নিজেকে তার কেমন স্বার্থপর মনে হয়। আজ কত দিন পর সে এখানে এসেছে। খুব ছোট বেলায় সে যখন হাটতে পারত না তখন বাবার হাত ধরে দাড়াতে চেষ্টা করত। বাবা তার হাত কখনও ছাড়েননি। আজ যখন তাকে তার বাবার সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন সে কত অবলিলায় তার বাবার হাত ছেড়ে দিয়েছে।
মৃত্যুর সাথে সাথেই কি একটা মানুষের সব কিছু শেষ হয়ে যায়। সমস্ত স্মৃতি, ভাল লাগা, মন্দ লাগার সমস্ত অনুভূতি। তার সামনে বাবার নামের সেই মানুষটা নাই। বিপদে পড়লে আজ আর সেই মানুষটা তাতে আগলে দাড়াবে না। বলবে না- খোকা ভয় নেই আমি আছি। কিন্তু আর সব কিছুতো ঠিকই রয়ে গেছে। এই যে সে তার বাবার সামনে দাড়িয়ে রয়েছে তার বাবাতো তাকে দেখতে পাচ্ছেন। এখনই বুঝি ধরা গলায় বলে উঠবেন-কিরে খোকা, কত কাল পরে এলি। এত দিন পরে বুঝি বাবার কথা মনে পড়ল।
কাব্য ধীরে ধীরে হাত বাড়িয়ে তার বাবার সমাধিটা ছোয়ার চেষ্টা করে। ধরা গরায় বলে উঠে-বাবা আমি তোমার অপরাধী। ভুল মানুষকে নিয়ে তুমি স্বপ্ন দেখেছ। কই কোন স্বপ্নইতো আমি তোমার পূরণ করতে পারলাম না। কেন তবে ছেলে বেলায় শুনিয়েছ ঘুম পাড়ানির গান। কেন স্বপ্ন দেখেতে শিখিয়েছ। তা না হলেই বুঝি ভাল ছিল। আজ বুকের মাঝে এক কষ্ট অনুভব হত না।
কাব্য যখন ধীরে ধীরে বড় হতে শুরু করে তখন বাবার ছেলে মানুষী কান্ডে খুব লজ্জা পেত। রাস্তা পার হবার সময় বাবা হাত ধরে রাখতেন, ছেলে দিলেই বুঝি কাব্য হারিয়ে যাবে। বাবা বুঝতেন না সে এখন বড় হয়ে গেছে। হাত ধরে রাখার এখন আর দরকার নেই। রাস্তার লোকজনরাই বা কি বলবে। দেখ দেখি কত বড় ছেলে বাবার হাত ধরে হেটে যাচ্ছে। বাবা কতই না বোকা ছিলেন। আজও কাব্য সেই ছেলে মানুষী লজ্জা অনুভব করে। বাবার উপর এক রাশ অভিমান এসে জমা হয়। বাবা কেন তুমি আমার হাত ছেড়ে দিলে। এখনও যে তোমার সেই ভালবাসার হাতখানি আমার বড়ই প্রয়োজন।
কাব্য এপিটাফটাতে হাত বুলায়। বাব তোমার কানে কানে বলি-আবার আমাদের দেখা হবে। যেখানেই তুমি থাক, যতই দূরে। তোমার হাত ধরে ছেলেবেলার মত আমরা দুইজনে আবার রাস্তা ধরে হেটে যাব। এখনও যে আমাদের অনেক পথ হাটা বাকী। বিদায় বাবা, ভাল থেকো।
টুকরো খবর।
খবর-১
চারদিনের ভারত সফর শেষ করে গতকাল প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলেন। আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন স্তরের জনগণ বিমানবন্দরে উনাকে সংবর্ধনা জানায়। সংবর্ধনা দিতে আসা রাস্তার দুই পাশের মানুষ ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানায়। বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীর গাড়ী বহর প্রধান সড়কে আসলে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো এলাকা। প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দিতে দুপুর থেকেই পুরো বিমানবন্দর এলাকা লোকেলোকারণ্য হয়ে উঠে। নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে বিমান বন্দরে ট্রাক-বাসে করে আসা নেতাকর্মীরা সঙ্গে নিয়ে আসে ব্যান্ড পার্টি আর মাইক। ট্রাকের উপর নেচে গেয়ে তারা আনন্দ প্রকাশ করে। শুভেচ্ছাবার্তা সম্বলিত ব্যানারে ছেয়ে যায় পুরো বিমান বন্দর এলাকা।
অনেক দিন পর এমন আনেন্দর সংবাদ পড়লাম ভাল লাগল। আরও ভাল লাগল দেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে এত ভালবাসে জেনে। কিন্তু তারপর নিচের খবরটি আর ভাল লাগল না-
খবর-২
গতকাল নগরবাসীকে দীর্ঘ যানজটের দুভোর্গ পোহাতে হয়েছে। পুরো এলাকায় ভয়াবহ জানজটের সৃষ্টি হয়। একদিকে শীতের তীব্রতা আর অপর দিকে ভয়াবহ যানজট। বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত ২ ঘন্টা সড়কের একদিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় এর প্রভাব রাত ১১ টা পর্যন্ত বিরাজ করে। হাজার হাজার নেতাকর্মীদের পদচারণায় উত্তরা থেকে মহাখালী পর্যন্ত যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমনের পোনে এক ঘন্টা আগেই যানচলাচল বন্ধ করে দেয় ডিএমপির প্রোটেকশন বিভাগ। এতে ঘরমুখী মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ঘন্টার পর ঘন্টা বাস স্ট্যান্ডে দাড়িয়ে থেকে যাত্রীরা বাস পায়নি। যারা বাসে চরতে পেরেছেন যানজটের কারণে তাদের গাড়ীগুলি ঠায় দাড়িয়ে থাকে। অনেকেই বাধ্য হয়ে বাস থেকে নেমে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
** আমার বক্তব্য হচ্ছে গতকাল কি সরকারী ছুটি ছিল। যদি না হয়ে থাকে তাহলে সারাদিন কাজ করে কর্মজীবি মানুষরা কিভাবে বাড়ী যাবেন এটা ভেবে দেখার মত কোন লোক কি সরাকারের ডিপার্টমেন্টে ছিলেন না। আর প্রধানমন্ত্রী কি এই প্রথম বিদেশ থেকে দেশে আসলেন। তাহলে হঠাৎ করে এত বিশাল আয়োজনের কি দরকার ছিল। উনার নেতাকর্মীদের যদি আনন্দ করার এতই ইচ্ছে থেকে থাকে তাহলে উনারা বিমানবন্দরের কাছাকাছি কোন খালি মাঠে গিয়ে নাচ গান করতে পারতেন, রাজপথে কেন। প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই পত্রিকা পড়েন সেখান থেকে তিনি জনগণের কালকের দুর্ভোগের কথা জানতে পারবেন। তা থেকে তিনি কি ভবিষ্যতের জন্য উনার কর্মীদের সতর্ক করবেন নাকি তাদের সুরেই সুর মিলাবেন।
যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে ঐ দিন তিনি যেন ঢাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে দেন। কারণ আমি নিজেও গতকালকের দুর্ভোগের একজন ভোক্তভূগী। পুনরায় আর এর পুনরাবৃত্তি কামনা করি না।
চারদিনের ভারত সফর শেষ করে গতকাল প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলেন। আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন স্তরের জনগণ বিমানবন্দরে উনাকে সংবর্ধনা জানায়। সংবর্ধনা দিতে আসা রাস্তার দুই পাশের মানুষ ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানায়। বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীর গাড়ী বহর প্রধান সড়কে আসলে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো এলাকা। প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দিতে দুপুর থেকেই পুরো বিমানবন্দর এলাকা লোকেলোকারণ্য হয়ে উঠে। নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে বিমান বন্দরে ট্রাক-বাসে করে আসা নেতাকর্মীরা সঙ্গে নিয়ে আসে ব্যান্ড পার্টি আর মাইক। ট্রাকের উপর নেচে গেয়ে তারা আনন্দ প্রকাশ করে। শুভেচ্ছাবার্তা সম্বলিত ব্যানারে ছেয়ে যায় পুরো বিমান বন্দর এলাকা।
অনেক দিন পর এমন আনেন্দর সংবাদ পড়লাম ভাল লাগল। আরও ভাল লাগল দেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে এত ভালবাসে জেনে। কিন্তু তারপর নিচের খবরটি আর ভাল লাগল না-
খবর-২
গতকাল নগরবাসীকে দীর্ঘ যানজটের দুভোর্গ পোহাতে হয়েছে। পুরো এলাকায় ভয়াবহ জানজটের সৃষ্টি হয়। একদিকে শীতের তীব্রতা আর অপর দিকে ভয়াবহ যানজট। বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত ২ ঘন্টা সড়কের একদিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় এর প্রভাব রাত ১১ টা পর্যন্ত বিরাজ করে। হাজার হাজার নেতাকর্মীদের পদচারণায় উত্তরা থেকে মহাখালী পর্যন্ত যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমনের পোনে এক ঘন্টা আগেই যানচলাচল বন্ধ করে দেয় ডিএমপির প্রোটেকশন বিভাগ। এতে ঘরমুখী মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ঘন্টার পর ঘন্টা বাস স্ট্যান্ডে দাড়িয়ে থেকে যাত্রীরা বাস পায়নি। যারা বাসে চরতে পেরেছেন যানজটের কারণে তাদের গাড়ীগুলি ঠায় দাড়িয়ে থাকে। অনেকেই বাধ্য হয়ে বাস থেকে নেমে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
** আমার বক্তব্য হচ্ছে গতকাল কি সরকারী ছুটি ছিল। যদি না হয়ে থাকে তাহলে সারাদিন কাজ করে কর্মজীবি মানুষরা কিভাবে বাড়ী যাবেন এটা ভেবে দেখার মত কোন লোক কি সরাকারের ডিপার্টমেন্টে ছিলেন না। আর প্রধানমন্ত্রী কি এই প্রথম বিদেশ থেকে দেশে আসলেন। তাহলে হঠাৎ করে এত বিশাল আয়োজনের কি দরকার ছিল। উনার নেতাকর্মীদের যদি আনন্দ করার এতই ইচ্ছে থেকে থাকে তাহলে উনারা বিমানবন্দরের কাছাকাছি কোন খালি মাঠে গিয়ে নাচ গান করতে পারতেন, রাজপথে কেন। প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই পত্রিকা পড়েন সেখান থেকে তিনি জনগণের কালকের দুর্ভোগের কথা জানতে পারবেন। তা থেকে তিনি কি ভবিষ্যতের জন্য উনার কর্মীদের সতর্ক করবেন নাকি তাদের সুরেই সুর মিলাবেন।
যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে ঐ দিন তিনি যেন ঢাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে দেন। কারণ আমি নিজেও গতকালকের দুর্ভোগের একজন ভোক্তভূগী। পুনরায় আর এর পুনরাবৃত্তি কামনা করি না।
গ্রাহকসেবা
সিটিসেল মোবাইল থেকে SMS পাঠিয়েছে- এই শীতে আপনার ত্বকের যত্ন নিয়ে ভাবছেন? সিটিসেল নিয়ে এর শীতকালীন বিউটি টিপস। ডায়েল করুন ২৫২৫ আর জেনে নিন বিউটি টিপস। গুরুত্ব বুঝাতে একই ম্যাসেজ দুই বার পাঠানো হয়েছে। যাতে কোন ভাবে মিস না হয়ে যায়।
আহা মোবাইল কোম্পানীগুলির তাদের গ্রাহকদের প্রতি কত সজাগ দৃষ্টি। গ্রাহকদের সেবা দিতে দিতে এখন গ্রাহকের ত্বকের যত্ন নিয়েও উনারা মাথা ঘামাচ্ছেন। এ রকম এক মোবাইল কোম্পানীর গ্রাহক হতে পেরে আমি গ...গ....গর্বিত। আমি আমার ত্বকের যত্নের ভার নিশ্চিত্নে সিটি সেলের উপর ছেড়ে দিয়েছি, আর আপনি?
ম্যাসেজ পেয়েই আমি আনন্দে লাফিয়ে উঠে ছিলাম। ২৫২৫ এ ডায়াল করে এক্ষুণি জেনে নিতে হবে বিউটি টিপস। কিন্তু না বল চলে গেল মাঠের বাইরে। কারণ পুরো ম্যাসেজ এখনও শেষ হয়নি। নীচে লেখা রয়েছে- প্রতি মিনিট চার্জ ২ টাকা+ ভ্যাট। ধান্দাবাজি কত প্রকার ও কি কি তা এদের কাছ থেকে শিখতে হবে।
এবার সারা দেশে প্রচন্ড শীতের কারণে বহু লোকের মৃত্যু ঘটেছে। হাইতিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে এই পর্যন্ত লক্ষাধিক লোকের উপরে মারা গেছে। সেই জায়গায় শীতে ত্বকের যত্ন নিয়ে মাথা ঘামানোটা বোধ হয় ঠিক না। ত্বর্কবাগিশরা হয়ত বলতে পারেন আমি মাথা না ঘামালে কি এই মৃত্যুগুলি ঠেকানো যেত। আমি সেই বিতর্কে যেতে চাচ্ছি না।
মোবাইল কোম্পানীগুলির কথাবার্তা শুনলে মনে হবে এদের মত দেশ প্রেমিক আমাদের দেশে বোধ হয় আর একটাও নেই। আরেকবার আরেকটি মোবাইল কোম্পানী আবেগময় একটি বিজ্ঞাপন বানাল পপ সম্রাট আজম খানকে নিয়ে। সাধাসিধে একজন আজম খান, ৭১-এ যার হাতে স্ট্যান গান গর্জে উঠেছিল গিটারের ধ্বনির মত। বিজ্ঞাপন এর শেষে আরেক পপ গায়ক আইয়ুব বাচ্চু পপ সম্রাটকে স্যালুট করেন-গুরু তোমায় সালাম বলে।
বুকের মধ্যে এক ধরণের চিনচিনে ব্যাথা অনুভব হয়-আহা মোবাইল কোম্পানী কি চমৎকার একটি বিজ্ঞাপনই না তৈরী করেছে।
এর কিছু দিন পর জানা যায় পপ সম্রাট আজম খান অসুস্থ। টাকার অভাবে উনার চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না। সবচেয়ে কষ্ট লাগে তখন যখন কোন একজনও শিল্পী উনাকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসে না। এমনকি সেই স্যালুট জনানো ব্যাক্তিটিও। প্রচন্ড ক্ষোভ জন্মে সেই মোবাইল কোম্পানীটির প্রতি। তাদের পক্ষে কি একটু সহযোগিতার হাত বাড়ানো সম্ভব ছিল না। উনারা বিজ্ঞাপন তৈরী করেই উনাদের দায় সেরেছেন। কে মরল আর কে বাঁচল তাতে তাদের কি বা যায় আসে।
রাস্তায় মাঝে মধ্যে পিজা হার্ট এর মুক্তি যোদ্ধাদের ছবি সম্বলিত কিছু বিলবোর্ডে চোখ পড়বে। মুক্তি যোদ্ধের সেই সব সাহসী মানুষদের আমরা জানাই শ্রদ্ধা। আহা দেখলেই বুকের রক্ত কেমন ছলকে উঠে।
কিন্তু পিজা হার্ট আজ পর্যন্ত মুক্তি যোদ্ধাদের নিয়ে কোন কিছু করেছে বলে আমার জানা নাই। তারা পিজা বিক্রি করতেই ব্যস্ত তাদের এত সময় কোথায়।
তাও আবার যেন তেন পিজা নয়।পিজা হার্ট এর এক বিক্রয় প্রতিনিধি একবার কতগুলি পিজা কেনার কূপন নিয়ে এসে হাজির। একটি কূপন কিনলে আরেকটি ফ্রি। অর্থাৎ একটি পিজা কিনলে সাথে আরেকটি পিজা ফ্রি। আজকেই অফার শেষ। আনন্দে আমি লাফিয়ে উঠলাম। কিন্তু না পরক্ষণেই আমার আশা ভঙ্গ হল। কারণ একেকটি পিজার মূল্য হাজার টাকার উপরে। আমি তাকে যতই বিদায় করার চেষ্টা করি সে ততই চীনা জোকের আঠার মত লেগে থাকে। আমি বিনীত ভাবে ঐ প্রতিনিধিকে বোঝাতে চেষ্টা করলাম একটি পিজা কেনার পয়সা দিয়ে আমার সারা মাসের দুপুরের লাঞ্চ এর খরচ চলে। বেচারা সম্ভবত আমার কথা বুঝতে পারেনি ভাবল আমি বুঝি ঠাট্রা করছি। কারণ তাদের এই অফারে খুব সাড়া পাওয়া গেছে। অফারের সময় বাড়ানোর জন্য লোকজন তাদের অনুরোধ করছে। সভাবতই আমার এই উদাসিনতাকে সে ভাল ভাবে গ্রহণ করতে পারেনি।
আহা মোবাইল কোম্পানীগুলির তাদের গ্রাহকদের প্রতি কত সজাগ দৃষ্টি। গ্রাহকদের সেবা দিতে দিতে এখন গ্রাহকের ত্বকের যত্ন নিয়েও উনারা মাথা ঘামাচ্ছেন। এ রকম এক মোবাইল কোম্পানীর গ্রাহক হতে পেরে আমি গ...গ....গর্বিত। আমি আমার ত্বকের যত্নের ভার নিশ্চিত্নে সিটি সেলের উপর ছেড়ে দিয়েছি, আর আপনি?
ম্যাসেজ পেয়েই আমি আনন্দে লাফিয়ে উঠে ছিলাম। ২৫২৫ এ ডায়াল করে এক্ষুণি জেনে নিতে হবে বিউটি টিপস। কিন্তু না বল চলে গেল মাঠের বাইরে। কারণ পুরো ম্যাসেজ এখনও শেষ হয়নি। নীচে লেখা রয়েছে- প্রতি মিনিট চার্জ ২ টাকা+ ভ্যাট। ধান্দাবাজি কত প্রকার ও কি কি তা এদের কাছ থেকে শিখতে হবে।
এবার সারা দেশে প্রচন্ড শীতের কারণে বহু লোকের মৃত্যু ঘটেছে। হাইতিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে এই পর্যন্ত লক্ষাধিক লোকের উপরে মারা গেছে। সেই জায়গায় শীতে ত্বকের যত্ন নিয়ে মাথা ঘামানোটা বোধ হয় ঠিক না। ত্বর্কবাগিশরা হয়ত বলতে পারেন আমি মাথা না ঘামালে কি এই মৃত্যুগুলি ঠেকানো যেত। আমি সেই বিতর্কে যেতে চাচ্ছি না।
মোবাইল কোম্পানীগুলির কথাবার্তা শুনলে মনে হবে এদের মত দেশ প্রেমিক আমাদের দেশে বোধ হয় আর একটাও নেই। আরেকবার আরেকটি মোবাইল কোম্পানী আবেগময় একটি বিজ্ঞাপন বানাল পপ সম্রাট আজম খানকে নিয়ে। সাধাসিধে একজন আজম খান, ৭১-এ যার হাতে স্ট্যান গান গর্জে উঠেছিল গিটারের ধ্বনির মত। বিজ্ঞাপন এর শেষে আরেক পপ গায়ক আইয়ুব বাচ্চু পপ সম্রাটকে স্যালুট করেন-গুরু তোমায় সালাম বলে।
বুকের মধ্যে এক ধরণের চিনচিনে ব্যাথা অনুভব হয়-আহা মোবাইল কোম্পানী কি চমৎকার একটি বিজ্ঞাপনই না তৈরী করেছে।
এর কিছু দিন পর জানা যায় পপ সম্রাট আজম খান অসুস্থ। টাকার অভাবে উনার চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না। সবচেয়ে কষ্ট লাগে তখন যখন কোন একজনও শিল্পী উনাকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসে না। এমনকি সেই স্যালুট জনানো ব্যাক্তিটিও। প্রচন্ড ক্ষোভ জন্মে সেই মোবাইল কোম্পানীটির প্রতি। তাদের পক্ষে কি একটু সহযোগিতার হাত বাড়ানো সম্ভব ছিল না। উনারা বিজ্ঞাপন তৈরী করেই উনাদের দায় সেরেছেন। কে মরল আর কে বাঁচল তাতে তাদের কি বা যায় আসে।
রাস্তায় মাঝে মধ্যে পিজা হার্ট এর মুক্তি যোদ্ধাদের ছবি সম্বলিত কিছু বিলবোর্ডে চোখ পড়বে। মুক্তি যোদ্ধের সেই সব সাহসী মানুষদের আমরা জানাই শ্রদ্ধা। আহা দেখলেই বুকের রক্ত কেমন ছলকে উঠে।
কিন্তু পিজা হার্ট আজ পর্যন্ত মুক্তি যোদ্ধাদের নিয়ে কোন কিছু করেছে বলে আমার জানা নাই। তারা পিজা বিক্রি করতেই ব্যস্ত তাদের এত সময় কোথায়।
তাও আবার যেন তেন পিজা নয়।পিজা হার্ট এর এক বিক্রয় প্রতিনিধি একবার কতগুলি পিজা কেনার কূপন নিয়ে এসে হাজির। একটি কূপন কিনলে আরেকটি ফ্রি। অর্থাৎ একটি পিজা কিনলে সাথে আরেকটি পিজা ফ্রি। আজকেই অফার শেষ। আনন্দে আমি লাফিয়ে উঠলাম। কিন্তু না পরক্ষণেই আমার আশা ভঙ্গ হল। কারণ একেকটি পিজার মূল্য হাজার টাকার উপরে। আমি তাকে যতই বিদায় করার চেষ্টা করি সে ততই চীনা জোকের আঠার মত লেগে থাকে। আমি বিনীত ভাবে ঐ প্রতিনিধিকে বোঝাতে চেষ্টা করলাম একটি পিজা কেনার পয়সা দিয়ে আমার সারা মাসের দুপুরের লাঞ্চ এর খরচ চলে। বেচারা সম্ভবত আমার কথা বুঝতে পারেনি ভাবল আমি বুঝি ঠাট্রা করছি। কারণ তাদের এই অফারে খুব সাড়া পাওয়া গেছে। অফারের সময় বাড়ানোর জন্য লোকজন তাদের অনুরোধ করছে। সভাবতই আমার এই উদাসিনতাকে সে ভাল ভাবে গ্রহণ করতে পারেনি।
Wednesday, January 13, 2010
সভ্যতা বনাম অসভ্যতা
ফ্রান্স বোরকার বিরুদ্ধে একটি কঠোর আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। যে সব নারী বোরকা পড়ে জনসমক্ষে যাবেন তাদের ১ হাজার ৮০ ডলার জরিমানা করা হবে। 
ফরাসি পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীন ইউএমপি দলের সভাপতি জীন ফ্রানসয়েস কোপ বলেছেন, আইনটি করা হবে নারীদের আত্নমর্যাদা রক্ষা করতে। কোপ বলেছেন বোরকা চরমপন্থাকে উৎসাহিত করে।।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোল সারকোজি দীর্ঘদন ধরে নারীদের বোরকা পড়ার তীব্র বিরোধিতা করে আসছেন।
জনসমক্ষে প্রকাশ্যে রাস্তায় কিংবা সরকারী ভবনগুলিতে বোরকা পরে যাওয়া যাবে না। কেবল বোরকা নয় আপাদমস্তক ঢেকে প্রকাশ্যে গেলেই তারা এই আইনের আওতায় পড়বেন।
সাধু সাধূ। এই আইনটি নাকি নারীদের আত্নমযার্দা রক্ষা করতে করা হচ্ছে। ফ্রান্সের কোন নারী কি কখনও ফ্রানসয়েস কোপ এর কাছে আবেদন করেছেন যে বোরকা পড়ার কারণে তাদের আত্নমর্যাদা ক্ষুন্ন হচ্ছে। তাহলে ফ্রানসয়েস কোপ এই তথ্য কোথায় পেলেন। স্বপ্নে পেয়ে থাকলে আমাদের কিছু বলার নাই। স্বপ্নে কত লোক কত রোগের অষুধ লাভ করছে আর এটাতো সামান্য জিনিস।
তার মতে বোরকা চরমপন্থাকে উৎসাহিত করে। চরমপন্থীরা কবে থেকে আবার বোরকা পড়া শুরু করে দিল। চরমপন্থীরা কোট, টাই, শার্ট প্যান্ট ও পড়ে থাকে। তাহলে অচিরেই কি আইন করা হবে রাস্তায় শার্ট, প্যান্ট পরে বের হওয়া যাবে না। তাহলেতো ভালই এই শীতে মাইনাস জিরো ডিগ্রী সেলসিয়াস টেম্পেরাচারে দিগম্বর অবস্থায় রাস্তায় বের হতে হবে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোল সারকোজি দীর্ঘদন ধরে নারীদের বোরকা পড়ার তীব্র বিরোধিতা করে আসছেন। জনসমক্ষে প্রকাশ্যে রাস্তায় কিংবা সরকারী ভবনগুলিতে বোরকা পরে গেলেই ১ হাজার ৮০ ডলার জরিমানা করা হবে। কেন?
প্রত্যেক দেশের নাগরিকের কিছু নাগরিক অধিকার রয়েছে। সরকারের তাতে হস্থক্ষেপ করার কোন অধিকার নেই। ফ্রন্সের নারীদের অধিকার রয়েছে তাদের পছন্দ অনুযাযী পোশাক নির্বাচন করা। কোন নারী যদি তার ধর্মীয় মূল্যবোধ থেকে বোরকা বেছে নেয় তাহলে তাতে বাধা দেয়ার কোন অধিকার আমাদের নেই। এটা তার স্বাধীনতা। মিনি স্কার্ট পরতে যদি কোন বাধা না থাকে তাহলে বোরকা পড়াতে বাধা কোথায়।
কোন বাঙ্গালী যদি পশ্চিমা বিশ্বের কোন দেশে যায় তবে লুঙ্গি, পাঞ্জাবী পরে সে বাইরে বের হতে পারবে না। তাতে সাহেবদের মান যায়। আবার পাশ্চাত্যের একজন লোক আমাদের এখানে তার দেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাক কোট, টাই পরে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে করে কিন্তু আমাদের জাত যাচ্ছে না।
সম্ভবত আমরা এখনও সভ্য হতে পারিনি। তথাকথিত ঐ সব সভ্য দেশ থেকে আমাদেরকে হয়ত আরও অনেক কিছু শেখার বাকী।
সূত্র: সিডনি মর্নিং হেরাল্ড

ফরাসি পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীন ইউএমপি দলের সভাপতি জীন ফ্রানসয়েস কোপ বলেছেন, আইনটি করা হবে নারীদের আত্নমর্যাদা রক্ষা করতে। কোপ বলেছেন বোরকা চরমপন্থাকে উৎসাহিত করে।।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোল সারকোজি দীর্ঘদন ধরে নারীদের বোরকা পড়ার তীব্র বিরোধিতা করে আসছেন।
জনসমক্ষে প্রকাশ্যে রাস্তায় কিংবা সরকারী ভবনগুলিতে বোরকা পরে যাওয়া যাবে না। কেবল বোরকা নয় আপাদমস্তক ঢেকে প্রকাশ্যে গেলেই তারা এই আইনের আওতায় পড়বেন।
সাধু সাধূ। এই আইনটি নাকি নারীদের আত্নমযার্দা রক্ষা করতে করা হচ্ছে। ফ্রান্সের কোন নারী কি কখনও ফ্রানসয়েস কোপ এর কাছে আবেদন করেছেন যে বোরকা পড়ার কারণে তাদের আত্নমর্যাদা ক্ষুন্ন হচ্ছে। তাহলে ফ্রানসয়েস কোপ এই তথ্য কোথায় পেলেন। স্বপ্নে পেয়ে থাকলে আমাদের কিছু বলার নাই। স্বপ্নে কত লোক কত রোগের অষুধ লাভ করছে আর এটাতো সামান্য জিনিস।
তার মতে বোরকা চরমপন্থাকে উৎসাহিত করে। চরমপন্থীরা কবে থেকে আবার বোরকা পড়া শুরু করে দিল। চরমপন্থীরা কোট, টাই, শার্ট প্যান্ট ও পড়ে থাকে। তাহলে অচিরেই কি আইন করা হবে রাস্তায় শার্ট, প্যান্ট পরে বের হওয়া যাবে না। তাহলেতো ভালই এই শীতে মাইনাস জিরো ডিগ্রী সেলসিয়াস টেম্পেরাচারে দিগম্বর অবস্থায় রাস্তায় বের হতে হবে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোল সারকোজি দীর্ঘদন ধরে নারীদের বোরকা পড়ার তীব্র বিরোধিতা করে আসছেন। জনসমক্ষে প্রকাশ্যে রাস্তায় কিংবা সরকারী ভবনগুলিতে বোরকা পরে গেলেই ১ হাজার ৮০ ডলার জরিমানা করা হবে। কেন?
প্রত্যেক দেশের নাগরিকের কিছু নাগরিক অধিকার রয়েছে। সরকারের তাতে হস্থক্ষেপ করার কোন অধিকার নেই। ফ্রন্সের নারীদের অধিকার রয়েছে তাদের পছন্দ অনুযাযী পোশাক নির্বাচন করা। কোন নারী যদি তার ধর্মীয় মূল্যবোধ থেকে বোরকা বেছে নেয় তাহলে তাতে বাধা দেয়ার কোন অধিকার আমাদের নেই। এটা তার স্বাধীনতা। মিনি স্কার্ট পরতে যদি কোন বাধা না থাকে তাহলে বোরকা পড়াতে বাধা কোথায়।
কোন বাঙ্গালী যদি পশ্চিমা বিশ্বের কোন দেশে যায় তবে লুঙ্গি, পাঞ্জাবী পরে সে বাইরে বের হতে পারবে না। তাতে সাহেবদের মান যায়। আবার পাশ্চাত্যের একজন লোক আমাদের এখানে তার দেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাক কোট, টাই পরে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে করে কিন্তু আমাদের জাত যাচ্ছে না।
সম্ভবত আমরা এখনও সভ্য হতে পারিনি। তথাকথিত ঐ সব সভ্য দেশ থেকে আমাদেরকে হয়ত আরও অনেক কিছু শেখার বাকী।
সূত্র: সিডনি মর্নিং হেরাল্ড
Tuesday, December 29, 2009
তদন্ত কমিটি
রোগীর আত্নীয় স্বজনরা খুবই হই চই শুরু করে দিল। বেচারার দুইটা মাত্র পা। তার মধ্যে ভুলে ডাক্তাররা ভাল পাটা কেটে বাদ দিয়ে ফেলেছে। এখন বাকী যে একটা পা রয়েছে সেটাও যদি কেটে ফেলতে হয় তবে রোগী হাঁটবে কেমন করে।
সবাই মিলে হাসপাতালের জিনিসপত্র মনের আনন্দে (আসলে মনের দুঃখে হবে) ভাঙতে শুরু করে দিল। সাথে এসে যোগ দিল আরও লোকজন যারা রোগীর আত্নীয় নন এবং কখনও রোগীকে দেখেননি। কিন্তু এই ধরনের সুযোগতো আর প্রতিদিন আসে না। লক্ষ টাকা দামের যন্ত্রপাতি ভেঙে ফেল কেউ তোমাকে কিছু বলতে পারবে না। কারো হয়ত কোন পুরনো ক্ষোভ রয়েছে এদের প্রতি। এখন তার শোধ নাও।
অবশেষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সবাইকে আশ্বস্ত করলেন। তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষী ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং রোগীকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।
রোগী প্রতিক্ষার প্রহর গুণে। তদন্ত আর শেষ হয় না। এক দিন, দুই দিন, এক সপ্তাহ করে পার হয়ে যায় এক মাস। অবশেষে রোগী তার এক পা সম্বল করে ভয়ে ভয়ে হাসপাতারের প্রধান চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়।
-স্যার আমার কেইসটা একটু দেখবেন।
-তদন্ত কমিটিতো তাদের রিপোর্ট দিয়ে দিয়েছে। আপনার যে পাটা কাটা হয়েছিল সেই পায়ে গ্যাংগ্রিন ছড়িয়ে পড়ে ছিল। পা না কাটলে তা আপনার সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ত। তখন আপনাকে বাঁচানোই মুসকিল হত। আমিতো সেই তরিৎকর্মা ডাক্তারের প্রশংসা করি।
-কিন্তু স্যার আমার পা কাটতে হলে তো আমার কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। আর আমার পায়ে তেমন বড় কোন সমস্যা ছিল না যে পা একে বারেই কেটে ফেলতে হবে।
- সেটাতো আর আপনি বললে হবে না। আপনিতো আর ডাক্তার নন। তারপরও আমরা ঐ ডাক্তার প্রতি ব্যবস্থা নিয়েছি। তাকে তিন দিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। আর আপনার জন্য ভাল খবর হচ্ছে আপনার অপারেশনের টাকা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফেরত দিয়েছে। এখন আপনি আপনার পা নিয়ে যেতে পারেন। ফরমালিনে চুবানো একটি বড় পাত্রে করে কাটা পা ডাক্তার রোগীর সামনে এনে হাজির করেন।
-স্যার আমি এই পা দিয়ে কি করব। এই পা আমার কি কাজে লাগবে।
-সেটাতো ভাই আমি জানি না। আপনার জিনিস আপনি নিয়ে যান। আর এক মাস ধরে আপনার এই পা যত্নের সহিত সংরক্ষণ করতে গিয়ে আমাদের যে খরচ হয়েছে তার বিল আপনি দিয়ে যান।
-রোগী চোখ কপালে তুলে ফেলে। আপনাকে কে বলেছে পা রেখে দিতে। এখন আমি টাকা দেব কোথা থেকে।
-তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ততো আমরা কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। ঠিক আছে বিলের টাকা দিতে না পারলে অপারেশনের যে টাকা আপনি ফেরত পেতেন সেখান থেকে আমরা তা কেটে রাখছি। তা কেটে রাখার পরও হাসপাতাল আপনার কাছে টাকা পাওনা হয়। সেটা আমরা আপনার ক্ষতিপূরণ বাবদ মাফ করে দিচ্ছি। আমাদরেকে আপনার এখন আর কোন টাকা দিতে হবে না। কি, এবার খুশি তো।
(আমাদের দেশে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু ঘটে। তদন্ত করার দায়িত্ব পড়ে ডাক্তারদের উপর। পুলিশের হাতে আসামির মৃত্যু হয় তদন্তের ভার থাকে পুলিশের হাতে।
সম্প্রতি পর পর কয়েকটি লঞ্চ ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এখানেও তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। আমরা এই টুকুই জানি। তার পরের খবর আর পাই না। সেই তদন্ত কি কখনও আলোর মুখ দেখে আমরা জানতে পারি না। বেশীর ভাগ লঞ্চেরই ফিটনেস নেই। নেই যথাযথ প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা। যে লোকগুলি মারা গেল। যে পরিবারগুলি তাদের আপন জনদের হারাল তাদের খবর আর আমরা পরবর্তীতে নেই না।
লঞ্চ ডুবির ছাব্বিশ ঘন্টা পর উদ্ধারকারী জাহাজ (সবেধন নীল মণি রুস্তম আর হামজা) ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌছ। মানুষ না শুধু লাশ উদ্ধার করার জন্য। বড় জাহাজ উত্তোলনের মত ক্ষমতা তাদের নেই। রাজনৈতিক নেতারা গভীর শোক প্রকাশ করেন।
কয়েক দিন পত্রিকার পাতায় লেখা লেখি হবে তারপর সব হারিয়ে যাবে। বসুন্ধরা সিটিতে আগুন লাগলে টিভিতে লাইভ টেলিকাস্ট দেখানো হয়। সব পত্রিকার সাংবাদিক কে কার আগে খবর সংগ্রহ করবেন তার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন। আর লঞ্চ ডুবিতে বড় জোর কি হয়। কয়েকশ দরিদ্র কিছু মানুষের সলিল সমাধি ঘটে। ১৫ কোটি জনসংখ্যার দেশে এ আর এমন কি। )
সবাই মিলে হাসপাতালের জিনিসপত্র মনের আনন্দে (আসলে মনের দুঃখে হবে) ভাঙতে শুরু করে দিল। সাথে এসে যোগ দিল আরও লোকজন যারা রোগীর আত্নীয় নন এবং কখনও রোগীকে দেখেননি। কিন্তু এই ধরনের সুযোগতো আর প্রতিদিন আসে না। লক্ষ টাকা দামের যন্ত্রপাতি ভেঙে ফেল কেউ তোমাকে কিছু বলতে পারবে না। কারো হয়ত কোন পুরনো ক্ষোভ রয়েছে এদের প্রতি। এখন তার শোধ নাও।
অবশেষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সবাইকে আশ্বস্ত করলেন। তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষী ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং রোগীকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।
রোগী প্রতিক্ষার প্রহর গুণে। তদন্ত আর শেষ হয় না। এক দিন, দুই দিন, এক সপ্তাহ করে পার হয়ে যায় এক মাস। অবশেষে রোগী তার এক পা সম্বল করে ভয়ে ভয়ে হাসপাতারের প্রধান চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়।
-স্যার আমার কেইসটা একটু দেখবেন।
-তদন্ত কমিটিতো তাদের রিপোর্ট দিয়ে দিয়েছে। আপনার যে পাটা কাটা হয়েছিল সেই পায়ে গ্যাংগ্রিন ছড়িয়ে পড়ে ছিল। পা না কাটলে তা আপনার সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ত। তখন আপনাকে বাঁচানোই মুসকিল হত। আমিতো সেই তরিৎকর্মা ডাক্তারের প্রশংসা করি।
-কিন্তু স্যার আমার পা কাটতে হলে তো আমার কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। আর আমার পায়ে তেমন বড় কোন সমস্যা ছিল না যে পা একে বারেই কেটে ফেলতে হবে।
- সেটাতো আর আপনি বললে হবে না। আপনিতো আর ডাক্তার নন। তারপরও আমরা ঐ ডাক্তার প্রতি ব্যবস্থা নিয়েছি। তাকে তিন দিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। আর আপনার জন্য ভাল খবর হচ্ছে আপনার অপারেশনের টাকা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফেরত দিয়েছে। এখন আপনি আপনার পা নিয়ে যেতে পারেন। ফরমালিনে চুবানো একটি বড় পাত্রে করে কাটা পা ডাক্তার রোগীর সামনে এনে হাজির করেন।
-স্যার আমি এই পা দিয়ে কি করব। এই পা আমার কি কাজে লাগবে।
-সেটাতো ভাই আমি জানি না। আপনার জিনিস আপনি নিয়ে যান। আর এক মাস ধরে আপনার এই পা যত্নের সহিত সংরক্ষণ করতে গিয়ে আমাদের যে খরচ হয়েছে তার বিল আপনি দিয়ে যান।
-রোগী চোখ কপালে তুলে ফেলে। আপনাকে কে বলেছে পা রেখে দিতে। এখন আমি টাকা দেব কোথা থেকে।
-তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ততো আমরা কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। ঠিক আছে বিলের টাকা দিতে না পারলে অপারেশনের যে টাকা আপনি ফেরত পেতেন সেখান থেকে আমরা তা কেটে রাখছি। তা কেটে রাখার পরও হাসপাতাল আপনার কাছে টাকা পাওনা হয়। সেটা আমরা আপনার ক্ষতিপূরণ বাবদ মাফ করে দিচ্ছি। আমাদরেকে আপনার এখন আর কোন টাকা দিতে হবে না। কি, এবার খুশি তো।
(আমাদের দেশে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু ঘটে। তদন্ত করার দায়িত্ব পড়ে ডাক্তারদের উপর। পুলিশের হাতে আসামির মৃত্যু হয় তদন্তের ভার থাকে পুলিশের হাতে।
সম্প্রতি পর পর কয়েকটি লঞ্চ ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এখানেও তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। আমরা এই টুকুই জানি। তার পরের খবর আর পাই না। সেই তদন্ত কি কখনও আলোর মুখ দেখে আমরা জানতে পারি না। বেশীর ভাগ লঞ্চেরই ফিটনেস নেই। নেই যথাযথ প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা। যে লোকগুলি মারা গেল। যে পরিবারগুলি তাদের আপন জনদের হারাল তাদের খবর আর আমরা পরবর্তীতে নেই না।
লঞ্চ ডুবির ছাব্বিশ ঘন্টা পর উদ্ধারকারী জাহাজ (সবেধন নীল মণি রুস্তম আর হামজা) ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌছ। মানুষ না শুধু লাশ উদ্ধার করার জন্য। বড় জাহাজ উত্তোলনের মত ক্ষমতা তাদের নেই। রাজনৈতিক নেতারা গভীর শোক প্রকাশ করেন।
কয়েক দিন পত্রিকার পাতায় লেখা লেখি হবে তারপর সব হারিয়ে যাবে। বসুন্ধরা সিটিতে আগুন লাগলে টিভিতে লাইভ টেলিকাস্ট দেখানো হয়। সব পত্রিকার সাংবাদিক কে কার আগে খবর সংগ্রহ করবেন তার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন। আর লঞ্চ ডুবিতে বড় জোর কি হয়। কয়েকশ দরিদ্র কিছু মানুষের সলিল সমাধি ঘটে। ১৫ কোটি জনসংখ্যার দেশে এ আর এমন কি। )
Subscribe to:
Posts (Atom)