‘স্যার, আমি কিভাবে আপনার মত একজন জাদরেল ব্লগার হতে পারব? অল্প দিনের মধ্যেই আপনার পেইজের হিটের সংখ্যা এক লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে। একটি গাধার আত্ন কাহিনী লিখে ব্লগে ছেড়ে দিলেও হিটের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়। শ দুয়েক মন্তব্য চলে আসে। বেশীর ভাগ ব্লগারের প্রিয় পোস্টের লিস্টে আপনার পোস্ট শোভা পায়। এটা কিভাবে সম্ভব হয়েছে?’
-তুমি কি অল্প সময়ের মধ্যে একজন জনপ্রিয় ব্লগার হতে চাও?
'জ্বী স্যার, কিন্তু আমি তো ভাল লেখতে জানি না।'
-তোমাদের নতুন ব্লগারদের এই একটি সমস্যা। চট করে একটি কমেন্টস করে বসবে। তোমাকে কে বলেছে যে ভাল ব্লগার হতে হলে ভাল লেখালেখি জানতে হবে। এই পদ্ধতিতে আগালে কয়েক বছর লেগে যাবে তোমার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে। আমার পলিসি হচ্ছে অল্প সময়ে অধিক মুনাফা অর্জন।
'স্যার, আমাকে তাহলে দয়া করে কিছু টিপস দিয়ে দেন।'
-১ম টিপস: লগ ইন টা জরুরী। আমি অনেক সময় টানা কয়েক দিন লগ ইন অবস্থায় থাকি। তবে মনে করো না যে লগ ইন করে থাকা মানে তোমাকে সারাক্ষণ কম্পিউটারের সামনে বসে থেকে খাওয়া ,বাথরুম সেখানেই সারতে হবে। লগ ইন করে তুমি হাওয়া হয়ে গেলে কেউতো আর তোমাকে দেখতে পাচ্ছে না। কিছু ব্লগ সাইটে ঢুকলে কিছু ব্লগারকে তুমি সব সময় লগ ইন অবস্থায় পাবে। তোমার মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন জাগছে এরা তাহলে ঘুমায় কখন।
-২য় টিপস: তোমার কয়েকটা নিক থাকতে হবে। মানুষের যেমন কয়েকটি নাম থাকে। অফিসে এক নাম, বাড়ীতে এক নাম, গার্লফ্রেন্ড এর কাছে এক নাম। একটি পোস্ট দিবে তারপর নিজের অন্য একটি নিক থেকে সেই পোস্টে মন্তব্য করবে। মন্তব্য আর কিছুই নয়: + পিলাস দিলাম। এখানে আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করলে হৃদয়ের টান বাড়ে। সবশেষে পোস্ট নিয়ে যাবে প্রিয় পোস্টের তালিকায়।
-৩য় টিপস: আস্তিক নাস্তিক বিষয়ক পোস্ট। আস্তিক বিষয়ক পোস্ট হলে ড. জাকির নায়েকের কিছু বক্তব্য তুলে ধরা যেতে পারে। ইউ টিউব থেকে নিয়ে আসলেই হবে।
আর নাস্তিক বিষয়ক পোস্ট হলে আরজ আলী মাতুব্বর এর নাস্তিকের ধর্ম কথা থেকে কিছু অংশ তুলে ধরতে হবে। জাস্ট, কপি পেস্ট করে দিলেই হবে।
-৪র্থ টিপস: ধর্ম বিষয়ক পোস্ট। বাজার থেকে অখ্যাত কিছু মৌলানাদের সম্পাদিত হাদিসের সংকলন সংগ্রহ করা যেতে পারে। এর মধ্য থেকে যে সব হাদিস নিয়ে বেশী বিতর্ক রয়েছে সেগুলি দেয়া যেতে পারে। যেমন- ইসলামে পর্দা প্রথা, নারীর অধিকার, মাজার প্রসঙ্গ ইত্যাদি।
-৫ম টিপস: ১৮ + কৌতুক। এ ব্যাপারে তোমার আদর্শ হতে পারেন সাবেক সাপ্তাহিক হায় হায় ম্যাগাজিনের সম্পাদক। তিনি সেক্সকে রীতিমতো শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যেতে সমর্থ হয়ে ছিলেন। আর না হলে নেটে এ্যাডাল্ট জোকস এরতো কোন কমতি নেই সেখান থেকে দুই একটা মেরে দিলে কেউ বুঝতে পারবে না।
'স্যার, আমি এভাবে জনপ্রিয় ব্লগার হতে চাই না। একজন ব্লগার এখানে লেখবে তার আনন্দের জন্য। একজন মমতা নিয়ে একটি পোস্ট দিবে অন্যরা সেখানে মন্তব্য করবে। ভাল লাগলে ভাল বলবে, নতুবা খারাপ লাগার কারণ ব্যাখা করবে। অবশ্যই তা শালীন এবং যৌক্তিক ভাবে।
জঙ্গলে একটি হরিণ সব সময় হিংস্র প্রাণীদের ভয়ে আতংকগ্রস্থ হয়ে থাকে। এই বুঝি কোন বাঘ তার ঘাড়ে লাফিয়ে পড়ল। অরণ্যের যে একটু নিজস্ব সৌন্দর্য রয়েছে একটি হরিণ কখনই তা উপলব্ধি করতে পারে না।
তেমনি আমাদের মত নতুন ব্লগাররা আপনার মত ব্লগারদের কারণেই এখানে লেখালেখি করতে ভয পায়। এই বুঝি কোন একটা পোস্ট বা মন্তব্যে আমি কোন ভুল করে ফেললাম। আর বিন্দুমাত্র দেরী না করে সবাই আমার উপর ঝাপিয়ে পড়ল। ব্লগের যে একটা নিজস্ব চমৎকার পরিবেশ রয়েছে আপনাদের কারণে আমরা তা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হই। আমরা ভুলে যাই প্রত্যেকেই আমরা এখানে মায়ার এক অদৃশ্য বন্ধনে আবদ্ধ। আবার এমন ব্লগারও এখানে আছেন যারা খুব সাধারণ একটি পোস্ট নিয়ে যে মন্তব্যটুকু করেন তা অনেক সময় হৃদয় ছুয়ে যায়। তাদের জন্যেই অনেক সময় লেখতে ইচ্ছে করে।'
-ব্যাটা ফাজিল তুই তাহলে এতক্ষণ আমার এত সময় নষ্ট করলি কেন। তুমি জান জিন্দা লাশ, মরা গাধা, জানের দুশমন- এগুলি কাদের নিক?
'না স্যার, আমি জানি না।'
-তুমি কি ছাতার ব্লগার হে। কিছুই দেখি জান না। এরা সবাই বড় বড় ব্লগার। এরা আমার পদ্ধতি অনুসরণ করে অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয় ব্লগারে পরিণত হয়েছে।
'স্যার, আপনি কি জানেন পরাণ ব্ন্ধু কার নিক?'
-না, আমি জানি না।
'আপনিও দেখি কিছুই জানেন না। এটা হচ্ছে আপনার পাশের ভাড়াটিয়ার নিক।'
-তো, এটার সাথে আমার কি সম্পর্ক?
'আপনি যখন ব্লগে আপনার রেটিং বাড়াতে ব্যস্ত থাকেন, তখন এই ভদ্রলোক আপনার বউ এর সাথে ডেটিং এ ব্যস্ত থাকে।'
** এই পোস্টটি রিপোস্ট। রিপোস্ট করার কারণটি বলছি। সকাল বেলা ফোনের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল। কাঁচা ঘুম ভাঙ্গাতে মেজাজ খুব খারাপ। ফোন করেছে প্রবাসী এক বন্ধু।
বন্ধুর হুংকার-তোরা কি শুরু করেছিস।
বেচারা মরুর দেশে পড়ে আছে। আরবরা এমনিতেই বাঙ্গালীদের দেখতে পারে না। নিশ্চয়ই কোন সমস্যা হয়েছে।
আমি উদ্বিগ্ন গলায় জানতে চাই-কি হয়েছে?
বন্ধু অনেক্ষণ হৈ চৈ করল। সারমর্ম যা বুঝলাম- জার্মানির আন্তর্জাতিক সম্প্রচার কেন্দ্র ডয়চে ভেলে বেস্ট অফ ব্লগস বা সেরা ব্লগ প্রতিযোগিতার ষষ্ঠ আসরের চূড়ান্ত বিজয়ীদের নাম ঘোষণার পর বিভিন্ন ব্লগে যে সব উল্টা পাল্টা মন্তব্য করা হচ্ছে তাই তার রাগের কারণ।
বন্ধুর পুনরায় হুংকার-আমি ভাবতাম আরবরা বর্বর অসভ্য। অথচ দেখ্ এখানে এই প্রতিযোগিতা নিয়ে তাদের কি উচ্ছাস। মিডিয়া থেকে শুরু করে সবাই ঝাপিয়ে পড়েছে কিভাবে আরবী ব্লগকে সব ভাষার ব্লগের মধ্যে শ্রেষ্ট করা যায়। প্রতিযোগিতায় কারা কারা আছে এটা তাদের কাছে মূখ্য নয়, মূখ্য হচ্ছে নিজের ভাষাটাকে যে কোন ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে হবে আমরাও পারি। আমি তাদের এই আবেগে মুগ্ধ।
আমি মিনমিন করে বলি-আমরাও উচ্ছাসিত।
আমার সাথে ফাজলামি করলে একটা চড় খাবি। তোদের ব্লগে যে সব আজে বাজে মন্তব্য করা হচ্ছে তোদের কি ধারণা আমরা প্রবাসীরা এইগুলি দেখে খুব আনন্দিত হচ্ছি। বিদেশীরা এমনিতেই আমাদের দেখতে পারে না। তারা যখন এইগুলি সম্পর্কে আমাদের কাছে জানতে চায় আমরা কোন উত্তর দিতে পারি না। এমনিতেই তারা আমাদের কাছে অনেক সময় জানতে চায় আমাদের দেশে ইলেকট্রিসিটি, খাবার পানি আছে কিনা। কারণ বাংলাদেশ থেকে সাহায্য চেয়ে তাদের দেশে যে সব ভিডিও পাঠানো হয় তাতে শুধু বন্যা আর জলোচ্ছাসে ঘর-দোর ভাসিয়ে নেয়ার ছবি। অথচ আমরা আবার তাদের কাছে বড় গলায় বলি বাঙ্গালী আবেগপ্রবণ জাতি। তোদের মোটা মাথায় কেন ঢুকছে না এটা করে তোরা প্রবাসী বাঙ্গালীদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলছিস। বাংলাকে তালিকাভুক্ত করতে দেরি হয়নি এরমধ্যেই তোদের ক্যাচাল শুরু হয়ে গেছে।
আমি তো তো করে বলার চেষ্টা করি-কিন্তু এদের দাবীওতো একেবারে উড়িয়ে দেয়ার মত না। তাদের মতে এমন অনেক ব্লগকে সিলেক্ট করা হয়েছে যেখানে ভিজিটর নাই, হিটের সংখ্যা নগন্য।
বন্ধু একটি গালি (সেন্সর) দিয়ে শুরু করল-সবচেয়ে বেশী হিট এবং ভিজিটরের আনাগোণা থাকে পর্ণো সাইটগুলিতে। ফাজিলের ফাজিল তোদের দরকার ছিল সেখান থেকে একটাকে বিজয়ী করা।
আমি পাল্টা যুক্তি হাতড়াতে শুরু করি। তার আগেই বন্ধুর রিসিভার আছড়ে ফেলার শব্দ আমি এত দূর থেকেও স্পষ্ট শুনতে পাই।
(এটি জাস্ট একটি ফান পোস্ট। একে গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করার কোনই প্রয়োজন নাই।)
Tuesday, April 20, 2010
Saturday, April 17, 2010
শ্রেষ্ঠ বাংলা ব্লগ এবং কিছু কথা।
'কি করা হয়?'
-কিছু করা হয় না।
'এইটা কেমন কথা বললা। একজন ঝাড়ুদারওতো কিছু না কিছু করে। ঝাড়ু দিয়া আবর্জনা দূর করে।'
-আমি ব্লগিং করি।
'এইটা আবার কোন ধান্দাবাজি।'
-আমি লিখি।
'কোন পত্রিকায়?'
-কোন পত্রিকায় না।
'তাইলে কি বাজারের ফর্দ লেখ।'
-ঐ যে বললাম। আমি ব্লগে লেখি।
'বুঝাইয়া বল।'
-ব্লগ হচ্ছে একটি ইন্টারনেট ভিত্তিক সাইট। যেখানে সবাই তাদের চিন্তা ভাবনা শেয়ার করতে পারে।
'কেমন টাকা পয়সা দেয়।'
-কোন টাকা পয়সা দেয় না।
'তাইলে এখানে সময় নষ্ট করার দরকার কি। বাসে কান পাকার ওষুধ বিক্রি করলেওতো কিছু পয়সা কঁড়ি পাওয়া যায়।'
-এখানে আমরা নিজের আনন্দের জন্য লিখি।
'ভাল। পেট খালি থাকলেও যে আনন্দ করা যায় জানা ছিল না।
তা কি লেখা হয়। নতুন কোন ছবি মুক্তি পাইল। কোন নায়িকা কোন নায়কের সাথে পলায়ন করিল।'
-কোন নির্ধারিত একটি বিষয়ের উপরে এখানে লেখা হয় না। দৈনন্দিন ঘটনাবলি থেকে শুরু করে এমন কোন বিষয় নাই যা নিয়ে এখানে আলোচনা করা হয় না।
'তাইলে পত্রিকা আর নিউজ চ্যানেলগুলি কি বইসা বইসা মাছি মারব।'
-আপনি পত্রিকায় কোন খবর পরদিন সকালে জানতে পারছেন। আর টিভি চ্যানেলের কোন খবরের তাৎক্ষণিক কোন প্রত্রিক্রিয়া আপনি জানাতে পারছেন না। কিন্তু ব্লগে এটা সম্ভব। আপনি প্রতি মুহূর্তে বিভিন্ন ঘটনাবলি জানতে পারছেন এবং সাথে সাথে আমরা আমাদের প্রত্রিক্রিয়া জানাতে পারছি।
'ভাল। কিন্তু বিনা পারিশ্রমিকে এইসব কইরা লাভ কি।'
-এটা একটা ভার্চুয়াল জগত। এখানে আমরা কেউ কাউকে চিনি না। তারপরও সবাই এক মায়ার অদৃশ্য বাধনে বাঁধা। মনে হয় হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যাবে। কি দেশ থেকে কি বিদেশ থেকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একজন আরেক জনের সাথে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ি। এই ঝগড়া করছি আবার পরক্ষণেই মমতামাখা হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি। এই অনুভূতিকে কোন কিছুর সাথে তুলনা করা যাবে না। এ অনেকটা বর্ষার প্রথম ভেসে আসা ভেজা মাটির গন্ধের মত। বৃষ্টিতে ভেজা কদম ফুলের স্পর্শ। ছেলেবেলার মত বৃষ্টির পানিতে ভাসানো কাগজের নৌকার খেলা। আকাশে ভেসে বেড়ানো মেঘের খেলা। সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের সময় মায়াবী আলোর খেলা।
'ব্যাস ব্যাস আর বলতে হবে না। বুঝাই যাচ্ছে অনেক খেলাধুলা হয় এখানে। ঠিক আছে চালাই যাও। তোমার জন্য বিনা পয়সায় উপদেশ হচ্ছে-যতই তর্ক বির্তক কর না কেন সবার আগে মানুষকে শ্রদ্ধা করতে শিখ। মানুষকে ভালবাস তার মতামতকে সন্মান কর। না হলে কখনই একজন ভাল ব্লগার, সর্বোপরি একজন ভাল মানুষ হতে পারবা না।'
** বেস্ট অফ ব্লগস বা সেরা ব্লগ প্রতিযোগিতার ষষ্ঠ আসরের চূড়ান্ত বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করলো জার্মানির আন্তর্জাতিক সম্প্রচার কেন্দ্র ডয়চে ভেলে৷ যাতে আলী মাহমেদ-এর ব্লগ উঠে এলো শ্রেষ্ঠ বাংলা ব্লগ হিসেবে৷
অভিনন্দন এই প্রতিযোগিতার সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে। যারা অংশগ্রহণ করেছেন। যারা ভালবাসার ভোট দিয়েছেন। আমি এই প্রতিযোগিতা সম্পর্কে জানতে পারি অনেক পরে। সম্ভবত আরও ব্যাপক প্রচারনার দরকার ছিল। মনিটরের পর্দায় অন্যান্য ভাষার সাথে যখন আমার বাংলা ভাষাকে ধ্রুব তরার মত জ্বল জ্বল করে জ্বলতে দেখি তখন কি এক অজানা আনন্দে বুক ভরে আসে।
একটা জিনিস আমাকে খুব আহত করছে। বিভিন্ন ব্লগে এই প্রতিযোগিতা নিয়ে কিছু ব্লগার বিরূপ মন্তব্য করছেন। এটা করে এইসব ব্লগারদের যারা ভোট দিয়েছেন তাদের ভালবাসাকে অসন্মান করা হচ্ছে। কে কোন দলের, কে কোন সাইটে লেখেন এইসব দেখেতো আর আমরা তাদের ভোট করিনি। আমার বাংলা ভাষা বিশ্বের অন্যান্য ভাষার সাথে প্রতিযোগিতা করছে এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় কথা।
এভারেস্টের চূড়ায় অন্য দেশের পতাকার সাথে আমার দেশের পতাকাও উড়ছে। পতাকা যে বাঁশের মাথায় বাঁধা সেটা কোন ধরণের বাঁশ এটাতো আমাদের দেখার দেরকার নাই। যিনি এই পতাকা সেখানে নিয়ে গেছেন তিনি কি ঘোড়া না গাধায় চড়ে হিমালয় পাড়ি দিয়েছেন এটা নিয়েতো বিতর্ক করার কোন প্রয়োজন দেখি না। যে কাজটা আমি করতে পারিনি সেটা আরেকজন করে দেখিয়ে দিয়েছেন। অন্য দেশের পতাকা নিয়েতো কোন বিতর্ক নাই। তবে সমস্ত বিতর্ক আমার দেশের পতাকা নিয়ে কেন। সব দেশের পতাকার সাথে আমার দেশের পতাকাও সমান তালে উড়ছে এরচেয়ে বড় আনন্দের আর কি হতে পারে।
Monday, April 5, 2010
টোব্যাকো
বিগত অনেক বছর যাবত প্রতি বছর বাংলাদেশে সর্ব্বেচ্চ ভ্যাটদাতা কোম্পানীর দুর্লভ সন্মান লাভ করে একটি বহুজাতিক টোব্যাকো কোম্পানী। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় এই সব কোম্পানীগুলিই বোধহয় দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে। এই ভ্যাটের টাকাটা আসলে কে দিচ্ছে ঐ কোম্পানী না কি এই টাকাটা জনগণের পকেট থেকে কেটে রাখা হচ্ছে। প্রতি শলাকা সিগারেটের জন্য সরকারকে যে ভ্যাট দিতে হয় তা কোম্পানী কনজুমারদের কাছ থেকে আদায় করে নিচ্ছে।
১. জাতীয় আয়ের এক শতাংশ ব্যায় হচ্ছে সিগারেটের পেছনে।
২. দেশে প্রতি বছর ধুমপান জনিত বিভিন্ন রোগে মারা যায় প্রায় ৫৭,০০০ জন। আরও প্রায় ২ লক্ষ লোক বিভিন্ন ধরণের রোগে আক্রান্ত হয়।
৩. যত টাকা সরকারের রাজস্ব আদায় হচ্ছে তার চেয়ে বেশী টাকা চলে যাচ্ছে চিকিৎসা খাতের পেছনে।
৪. তামাক ব্যবহারের কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার পেছনে খরচ হয়ে বছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকারও বেশী।
৫. তামাক থেকে সরকার যে রাজস্ব পায় তা বাদ দিলে বছরে বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের ফলে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
৬. বাংলাদেশে ১৯৯৪-১৯৯৫ সালে দেশে উৎপাদিত সিগারেটের পরিমাণ ছিল ১৬০০ কোটি শলাকা যা ২০০৯-২০১০ সাল নাগাদ বেড়ে দাঁড়ায় ২৫০০ কোটি শলাকা।
৭. জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কতৃপক্ষের সূত্র অনুযাযী দেশে মোট জনসংখ্যার ৪৩.৩ শতাংশ তামাক ব্যবহার করে।
৮. তামাক চাষে ব্যবহার হয় ৪৯ হাজার হেক্টর জমি। উৎপাদিত হয় ৯৮ হাজার টন তামাক। বেসরকারী হিসাবে এর পরিমাণ অন্তত আরও তিনগুণ বেমী।
৯. একজন ধূমপাযী গড়ে প্রতিদিন ৫টি সিগারেট খান। সেই হিসাবে একজন ধূমপায়ী সিগারেটের পেছনে মাসে খরচ করেন গড়ে ৩৭৮ টাকা।
১০. রংপুর, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইলসহ দেশের অন্তত বিশটি জেলায় তামাক চাষ হচ্ছে। বিভিন্ন বিড়ি ও সিগারেট কোম্পানী চাষীদের বিনামূল্যে বীজ, সার, কিটনাশক দিয়ে সহায়তা করছে। অন্য যে কোন ফসলের চেয়ে কৃষকের তামাক চাষে তিনগুণ বেশী লাভ হয়।
১১. বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ এ সিনিয়র প্রজেক্ট অফিসার আমিনুল ইসলাম সুজন বলেন, বাংলাদেশে তামাক চাষের প্রসারের ফলে শাক-সবজির আবাদ কমায় এসব নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে। বৃহত্তর রংপুরে মঙ্গার জন্য তামাক চাষ দায়ী উল্লেখ করে তিনি বলেন-অর্তনীতিতে বিরুপ প্রভাব ফেলছে তামাক।
১২. তামাক চাষীরা থাকে সবচেয়ে ঝুকির মধ্যে। ত্বকের ক্যান্সার এর মধ্যে অন্যতম। সিগারেট কোম্পানীগুলি বাড়তি মুনাফার লোভ দেখিয়ে অন্য ফসলের পরিবর্তে চাষীদের তামাক চাষে উৎসাহিত করছে।
১৩. সিগারেটে মোট ৩০০০ এরও উপরে বিভিন্ন ধরণের ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে।
১৪. ধূমপান হার্ট এ্যাটাক, স্ট্রোক, ফুসফুস ক্যান্সার, মুখের ক্যান্সার, ব্রংকাইটিস, এর ঝুকি বাড়ায়। ধূমপায়ীদের তামাকের ধোয়ার আশে পাশে যারা থাকে তারাও সমান ঝুকির মধ্যে থাকে।
১৫. টোব্যাকো কোম্পানীগুলির মূল টার্গেট হচ্ছে ৩০ বছরের নীচের ধূমপায়ীরা। কারণ এরা হবে ভবিষ্যতের দীর্ঘমেয়াদী সম্পন্ন ভোক্তা।
১৬. World Health Organization (WHO) এর মতে ২০০৪ সাল নাগাদ বিশ্বে ধূমপানজনিত কারণে ৫.৪ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু ঘটেছে। এই আনুপাতিক হারে বিশ শতকের মধ্যে ১০০ মিলিয়ন লোক ধূমপানজনিত কারণে মারা যাবে।
১৭. ২০০০ সাল পর্যন্ত সারা বিশ্বে ধূমপায়ীর সংখ্যা ছিল ১.২২ বিলিয়ন। ২০১০ সাল নাগাদ তা বেড়ে দাঁড়ায় ১.৪৫ বিলিয়ন। ২০২৫ সাল নাগাদ তা বেড়ে দাঁড়াবে ১.৯ বিলিয়ন।
১৮. ২০০২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারা বিশ্বে শতকরা ২৫ ভাগ কিশোর (যাদের বয়স ১৩ থেকে ১৫ বছর) ধূমপানে আসক্ত। ৮০০০০ থেকে ১০০০০০ শিশু প্রতিদিন ধূমপানে আসক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে অর্ধেক শিশু এশিয়ান। এর মধ্যে অর্ধেক হচ্ছে আগামী ২০ থেকে ৩০ বছরের জন্য একেক জন ভোক্তা।
১৯. WHO এর মতে ২০০৪ সালে ৫৮.৮ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু ঘটে এর মধ্যে ৫.৪ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু হয় তামাক জনিত কারণে।
২০. প্রচারণার পেছনে সিগারেট কোম্পানীগুলি প্রতি বছর ১২.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে থাকে। এর বেশীর ভাগই ব্যয় হয়ে থাকে তৃতীয় বিম্বের দেশগুলিতে যেখানে টোব্যাকো সংক্রান্ত আইনগুলি তুলনামূলকভাবে শিথিল।
২১. একজন ধূমপায়ী পুরুষ এর জীবন থেকে গড়ে ১৩.২ বছর এবং একজন ধূমপায়ী মহিলার জীবন থেকে গড়ে ১৪.৫ বছর আয়ু হারিয়ে যাচ্ছে।
২২. বিশ্বব্যাংক পরিচালিত এক জরিযপ দেখা ১০ শতাংশ হারে তামাকের মূল্য বৃদ্ধির ফলে উন্নত বিশ্বে তামাকের ব্যবহার চার শতাংশ কমে। আর বাংলাদেমের মত উন্নয়শীল দেশে তামাকের ব্যবহার কমে ৮ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিসের ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. এম মোস্তফা জামান এর মতে দেশে তামাকের ব্যবহার বাড়ার পেছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে অন্য দ্রব্যের তুলনায় বিড়ি, সিগারেটের দাম বৃদ্ধি না পাওয়া।
তথ্য ষূত্র: উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন পত্রিকা।
ছবি সূত্র: ইন্টারনেট।
১. জাতীয় আয়ের এক শতাংশ ব্যায় হচ্ছে সিগারেটের পেছনে।
২. দেশে প্রতি বছর ধুমপান জনিত বিভিন্ন রোগে মারা যায় প্রায় ৫৭,০০০ জন। আরও প্রায় ২ লক্ষ লোক বিভিন্ন ধরণের রোগে আক্রান্ত হয়।
৩. যত টাকা সরকারের রাজস্ব আদায় হচ্ছে তার চেয়ে বেশী টাকা চলে যাচ্ছে চিকিৎসা খাতের পেছনে।
৪. তামাক ব্যবহারের কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার পেছনে খরচ হয়ে বছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকারও বেশী।
৫. তামাক থেকে সরকার যে রাজস্ব পায় তা বাদ দিলে বছরে বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের ফলে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
৬. বাংলাদেশে ১৯৯৪-১৯৯৫ সালে দেশে উৎপাদিত সিগারেটের পরিমাণ ছিল ১৬০০ কোটি শলাকা যা ২০০৯-২০১০ সাল নাগাদ বেড়ে দাঁড়ায় ২৫০০ কোটি শলাকা।
৭. জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কতৃপক্ষের সূত্র অনুযাযী দেশে মোট জনসংখ্যার ৪৩.৩ শতাংশ তামাক ব্যবহার করে।
৮. তামাক চাষে ব্যবহার হয় ৪৯ হাজার হেক্টর জমি। উৎপাদিত হয় ৯৮ হাজার টন তামাক। বেসরকারী হিসাবে এর পরিমাণ অন্তত আরও তিনগুণ বেমী।
৯. একজন ধূমপাযী গড়ে প্রতিদিন ৫টি সিগারেট খান। সেই হিসাবে একজন ধূমপায়ী সিগারেটের পেছনে মাসে খরচ করেন গড়ে ৩৭৮ টাকা।
১০. রংপুর, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইলসহ দেশের অন্তত বিশটি জেলায় তামাক চাষ হচ্ছে। বিভিন্ন বিড়ি ও সিগারেট কোম্পানী চাষীদের বিনামূল্যে বীজ, সার, কিটনাশক দিয়ে সহায়তা করছে। অন্য যে কোন ফসলের চেয়ে কৃষকের তামাক চাষে তিনগুণ বেশী লাভ হয়।
১১. বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ এ সিনিয়র প্রজেক্ট অফিসার আমিনুল ইসলাম সুজন বলেন, বাংলাদেশে তামাক চাষের প্রসারের ফলে শাক-সবজির আবাদ কমায় এসব নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে। বৃহত্তর রংপুরে মঙ্গার জন্য তামাক চাষ দায়ী উল্লেখ করে তিনি বলেন-অর্তনীতিতে বিরুপ প্রভাব ফেলছে তামাক।
১২. তামাক চাষীরা থাকে সবচেয়ে ঝুকির মধ্যে। ত্বকের ক্যান্সার এর মধ্যে অন্যতম। সিগারেট কোম্পানীগুলি বাড়তি মুনাফার লোভ দেখিয়ে অন্য ফসলের পরিবর্তে চাষীদের তামাক চাষে উৎসাহিত করছে।
১৩. সিগারেটে মোট ৩০০০ এরও উপরে বিভিন্ন ধরণের ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে।
১৪. ধূমপান হার্ট এ্যাটাক, স্ট্রোক, ফুসফুস ক্যান্সার, মুখের ক্যান্সার, ব্রংকাইটিস, এর ঝুকি বাড়ায়। ধূমপায়ীদের তামাকের ধোয়ার আশে পাশে যারা থাকে তারাও সমান ঝুকির মধ্যে থাকে।
১৫. টোব্যাকো কোম্পানীগুলির মূল টার্গেট হচ্ছে ৩০ বছরের নীচের ধূমপায়ীরা। কারণ এরা হবে ভবিষ্যতের দীর্ঘমেয়াদী সম্পন্ন ভোক্তা।
১৬. World Health Organization (WHO) এর মতে ২০০৪ সাল নাগাদ বিশ্বে ধূমপানজনিত কারণে ৫.৪ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু ঘটেছে। এই আনুপাতিক হারে বিশ শতকের মধ্যে ১০০ মিলিয়ন লোক ধূমপানজনিত কারণে মারা যাবে।
১৭. ২০০০ সাল পর্যন্ত সারা বিশ্বে ধূমপায়ীর সংখ্যা ছিল ১.২২ বিলিয়ন। ২০১০ সাল নাগাদ তা বেড়ে দাঁড়ায় ১.৪৫ বিলিয়ন। ২০২৫ সাল নাগাদ তা বেড়ে দাঁড়াবে ১.৯ বিলিয়ন।
১৮. ২০০২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারা বিশ্বে শতকরা ২৫ ভাগ কিশোর (যাদের বয়স ১৩ থেকে ১৫ বছর) ধূমপানে আসক্ত। ৮০০০০ থেকে ১০০০০০ শিশু প্রতিদিন ধূমপানে আসক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে অর্ধেক শিশু এশিয়ান। এর মধ্যে অর্ধেক হচ্ছে আগামী ২০ থেকে ৩০ বছরের জন্য একেক জন ভোক্তা।
১৯. WHO এর মতে ২০০৪ সালে ৫৮.৮ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু ঘটে এর মধ্যে ৫.৪ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু হয় তামাক জনিত কারণে।
২০. প্রচারণার পেছনে সিগারেট কোম্পানীগুলি প্রতি বছর ১২.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে থাকে। এর বেশীর ভাগই ব্যয় হয়ে থাকে তৃতীয় বিম্বের দেশগুলিতে যেখানে টোব্যাকো সংক্রান্ত আইনগুলি তুলনামূলকভাবে শিথিল।
২১. একজন ধূমপায়ী পুরুষ এর জীবন থেকে গড়ে ১৩.২ বছর এবং একজন ধূমপায়ী মহিলার জীবন থেকে গড়ে ১৪.৫ বছর আয়ু হারিয়ে যাচ্ছে।
২২. বিশ্বব্যাংক পরিচালিত এক জরিযপ দেখা ১০ শতাংশ হারে তামাকের মূল্য বৃদ্ধির ফলে উন্নত বিশ্বে তামাকের ব্যবহার চার শতাংশ কমে। আর বাংলাদেমের মত উন্নয়শীল দেশে তামাকের ব্যবহার কমে ৮ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিসের ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. এম মোস্তফা জামান এর মতে দেশে তামাকের ব্যবহার বাড়ার পেছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে অন্য দ্রব্যের তুলনায় বিড়ি, সিগারেটের দাম বৃদ্ধি না পাওয়া।
তথ্য ষূত্র: উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন পত্রিকা।
ছবি সূত্র: ইন্টারনেট।
Sunday, April 4, 2010
আই.কিউ
ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া এক বাচ্চার মা গর্ব করে বলছেন- আমার বাচ্চা বংলা লেখা দেখলে জানতে চায়-মম এটা কি বাংলা।
বাবাও চোখ বড় বড় করে বলতে শুরু করেন-বাসায় আমরা বাচ্চাদের সামনে তেমন একটা বাংলা বলি না। ইংরেজীতে ভাল দখল না থাকার কারণে আমরা দিন দিন পিছিয়ে পড়ছি। ইংরেজী হচ্ছে অভিজাত একটি ভাষা। সারা পৃথিবী জুড়ে এর ব্যবহার। বাচ্চাদের ছোট বেলা থেকেই ইংরেজী শিক্ষা দিতে হবে। না হলে গোড়া দুর্বল থেকে যাবে।
এই মাথা মোটাদের আমি কোন ভাবেই বোঝাতে পারি না যে, ইংরেজী হচ্ছে আর দশটা ভাষার মতই বিদেশী একটি ভাষা। আগে নিজের মার্তৃ ভাষার চর্চা তারপর কারো যদি শখ থাকে তবে সে অন্য কোন বিদেশী ভাষার চর্চা করতে পারে। নিজের ভাষা না জেনে অন্য ভাষা বলার মধ্যে কোন গৌরবের ব্যাপার নাই।
বাংলাই সম্ভবত পৃথিবীর একমাত্র ভাষা যার জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছে। এবং ঐ দিনটিকে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা হিসেবে পালন করা হয়। ইংরেজরা দুইশত বছর এ দেশ শাসন করে গেছে। ফলে তাদের চিন্তাধারা এখনও আমাদের মাঝে রয়ে গেছে।
ডি.জে, ভি.জে, আর.জে এই জিনিসগুলি কি আমার বুঝতে অনেক দিন সময় লেগেছে। এরা বাংলা-ইংরেজী মিশিয়ে নতুন একটা ভাষার উদ্ভাবন করছে। হাই ফ্রেন্ডস, সো ভিউয়ারস, সো লিসেনারস কি যেন বলছিলাম.... কোন এক বিচিত্র কারণে কিছুক্ষণ এদের বকবক শুনলে আমার মাথা ভার হয়ে যায়। দুই চোখ আপনিই ঘুমে বুজে আসতে চায়।
আমাদের মাথায় কোন ভাবে ঢুকে গেছে ব্রিটিশ শিশুরা আমাদের বাচ্চাদের চেয়ে টলার, স্ট্রংগার, শার্পার (সম্ভবত বেশী হরলিক্স খাবার কারণে।)। এদের সব কিছু আমাদের অনুকরণ করে যেতে হবে। আমরা অপেক্ষায় আছি কখন আমাদের বাচ্চারা ব্রিটিশ শিশুদের মত হড়বড় করে ইংরেজী বলতে পারবে।
ব্রিটিশ শিশুদের আই.কিউ এর কিছু নমুনা-
ওয়ানপোল জরিপ সংস্থা অনলাইনে ব্রিটেনের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক হাজার শিক্ষার্থীর উপর জরিপ চালায়। জরিপের ফলাফল নিম্নরূপ:
১. প্রশ্ন: টেলিফোনের আবিস্কারক কে?
উত্তর: শতকরা দশ জনের উত্তর ছিল:
ক. রানী এলিজাবেথ।
খ. চার্লস ডারউইন।
গ. নোয়েল এন্ডমন্ডস।
২. প্রশ্ন: চন্দ্রপৃষ্টে প্রথম পা দেয়া ব্যক্তির নাম কি?
উত্তর: শতকরা বিশ জনের উত্তর ছিল:
ক. স্টার ওয়ারস সিনেমার প্রধান চরিত্র লুকে স্কাইওয়াকার।
খ. শিল্পপতি রিচার্ড ব্রানসন।
৩. প্রশ্ন: স্যার আইজাক নিউটন কি আবিস্কার করেছেন?
উত্তর: জরিপে অংশ নেয়া এক তৃতীয়াংশের উত্তর ছিল:
ক. স্যার আইজাক নিউটন আগুনের আবিস্কাররক।
জরিপে অংশ নেয়া ষোল শতাংশের উত্তর ছিল:
ক. স্যার আইজাক নিউটন ইন্টারনেটের আবিস্কারক।
ক. স্যার আইজাক নিউটন সৌর পদ্ধতি আবিস্কার করেছেন।
খ. স্যার আইজাক নিউটন আমেরিকা আবিস্কার করেছেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পক্ষে প্রচারণা চালানো বার্মিংহাম সায়েন্স সিটির ড. পাম ওয়াডেল বলেছেন, জরিপের কিছু ফলাফল হাস্যকর। শিশুরা বিজ্ঞানের হিরোদের চেয়ে সিনেমার হিরোদের বেশী চেনে। বিজ্ঞানীর পরিবর্তে এরা নামকরা গায়কদের ব্যাপারে আগ্রহী বেশী। মজার ব্যাপার হচ্ছে ৯ থেকে ১০ বছরের ৭০ শতাংশ শিশু আবার বিজ্ঞানে নোবেল পাওয়ার ব্যাপারে অনেক আগ্রহী। ১১ থেকে ১৫ বছরের শিশুদের মধ্যে এই হার আবার ৩৩ শতাংশ।
পাদ টিকা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একবার লন্ডন গেছেন। ইংল্যান্ডে প্রবাসী বাঙ্গালীদের মধ্যে কাড়াকাড়ি পড়ে গেছে কে কার আগে রবি ঠাকুরের সাথে দেখা করবে।
এক বাঙ্গালী যুবক দীর্ঘ আট বছর ধরে লন্ডনে ব্যারিস্টারী পড়ছে। পাশ আর করা হয়ে উঠেনি। এটা নিয়ে তার কোন মাথা ব্যাথাও নেই। কারণ তত দিনে সে ইংরেজদের আদব কায়দা ভালই রপ্ত কর নিয়েছে। সে আসল রবি ঠাকুরের সাথে দেখো করতে।
প্রথম সাক্ষাতেই সে উনার সাথে ইংরেজীতে কথাবার্তা বলা শুরু করে দেয়। এবং কথায় কথায় জানিয়ে দেয় দীর্ঘ দিন এদেশে থাকার কারণে বাংলা প্রায় সে ভুলেই গেছে তারচেয়ে ইংরেজীতে সে বেশী অভ্যস্ত।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যুবকের মুখের দিকে তাকিয়ে বলেন-বাঙ্গালীর ছেলে বাংলা বলতে ভুলে গেছ, এ কথা জানাবার আগে লজ্জা বোধ করা উচিত ছিল। কিন্তু তুমিতো দেখছি ইংরেজীটাও ভাল করে রপ্ত করতে পারনি।
** রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদাহরণ দেয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে-ব্রিটিশ সরকার একবার সিদ্ধান্ত নিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করা হোক। তখন সারা ভারতজুড়ে চলছিল ইংরেজ বিরোধী আন্দোলন। তাই রবি ঠাকুর ব্রিটিশদের কাছ থেকে এই উপাধি গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। তা না হলে আজকে আমাদের বলতে হত-স্যার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
তথ্য সূত্র: বিবিসি নিউজ।
বাবাও চোখ বড় বড় করে বলতে শুরু করেন-বাসায় আমরা বাচ্চাদের সামনে তেমন একটা বাংলা বলি না। ইংরেজীতে ভাল দখল না থাকার কারণে আমরা দিন দিন পিছিয়ে পড়ছি। ইংরেজী হচ্ছে অভিজাত একটি ভাষা। সারা পৃথিবী জুড়ে এর ব্যবহার। বাচ্চাদের ছোট বেলা থেকেই ইংরেজী শিক্ষা দিতে হবে। না হলে গোড়া দুর্বল থেকে যাবে।
এই মাথা মোটাদের আমি কোন ভাবেই বোঝাতে পারি না যে, ইংরেজী হচ্ছে আর দশটা ভাষার মতই বিদেশী একটি ভাষা। আগে নিজের মার্তৃ ভাষার চর্চা তারপর কারো যদি শখ থাকে তবে সে অন্য কোন বিদেশী ভাষার চর্চা করতে পারে। নিজের ভাষা না জেনে অন্য ভাষা বলার মধ্যে কোন গৌরবের ব্যাপার নাই।
বাংলাই সম্ভবত পৃথিবীর একমাত্র ভাষা যার জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছে। এবং ঐ দিনটিকে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা হিসেবে পালন করা হয়। ইংরেজরা দুইশত বছর এ দেশ শাসন করে গেছে। ফলে তাদের চিন্তাধারা এখনও আমাদের মাঝে রয়ে গেছে।
ডি.জে, ভি.জে, আর.জে এই জিনিসগুলি কি আমার বুঝতে অনেক দিন সময় লেগেছে। এরা বাংলা-ইংরেজী মিশিয়ে নতুন একটা ভাষার উদ্ভাবন করছে। হাই ফ্রেন্ডস, সো ভিউয়ারস, সো লিসেনারস কি যেন বলছিলাম.... কোন এক বিচিত্র কারণে কিছুক্ষণ এদের বকবক শুনলে আমার মাথা ভার হয়ে যায়। দুই চোখ আপনিই ঘুমে বুজে আসতে চায়।
আমাদের মাথায় কোন ভাবে ঢুকে গেছে ব্রিটিশ শিশুরা আমাদের বাচ্চাদের চেয়ে টলার, স্ট্রংগার, শার্পার (সম্ভবত বেশী হরলিক্স খাবার কারণে।)। এদের সব কিছু আমাদের অনুকরণ করে যেতে হবে। আমরা অপেক্ষায় আছি কখন আমাদের বাচ্চারা ব্রিটিশ শিশুদের মত হড়বড় করে ইংরেজী বলতে পারবে।
ব্রিটিশ শিশুদের আই.কিউ এর কিছু নমুনা-
ওয়ানপোল জরিপ সংস্থা অনলাইনে ব্রিটেনের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক হাজার শিক্ষার্থীর উপর জরিপ চালায়। জরিপের ফলাফল নিম্নরূপ:
১. প্রশ্ন: টেলিফোনের আবিস্কারক কে?
উত্তর: শতকরা দশ জনের উত্তর ছিল:
ক. রানী এলিজাবেথ।
খ. চার্লস ডারউইন।
গ. নোয়েল এন্ডমন্ডস।
২. প্রশ্ন: চন্দ্রপৃষ্টে প্রথম পা দেয়া ব্যক্তির নাম কি?
উত্তর: শতকরা বিশ জনের উত্তর ছিল:
ক. স্টার ওয়ারস সিনেমার প্রধান চরিত্র লুকে স্কাইওয়াকার।
খ. শিল্পপতি রিচার্ড ব্রানসন।
৩. প্রশ্ন: স্যার আইজাক নিউটন কি আবিস্কার করেছেন?
উত্তর: জরিপে অংশ নেয়া এক তৃতীয়াংশের উত্তর ছিল:
ক. স্যার আইজাক নিউটন আগুনের আবিস্কাররক।
জরিপে অংশ নেয়া ষোল শতাংশের উত্তর ছিল:
ক. স্যার আইজাক নিউটন ইন্টারনেটের আবিস্কারক।
ক. স্যার আইজাক নিউটন সৌর পদ্ধতি আবিস্কার করেছেন।
খ. স্যার আইজাক নিউটন আমেরিকা আবিস্কার করেছেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পক্ষে প্রচারণা চালানো বার্মিংহাম সায়েন্স সিটির ড. পাম ওয়াডেল বলেছেন, জরিপের কিছু ফলাফল হাস্যকর। শিশুরা বিজ্ঞানের হিরোদের চেয়ে সিনেমার হিরোদের বেশী চেনে। বিজ্ঞানীর পরিবর্তে এরা নামকরা গায়কদের ব্যাপারে আগ্রহী বেশী। মজার ব্যাপার হচ্ছে ৯ থেকে ১০ বছরের ৭০ শতাংশ শিশু আবার বিজ্ঞানে নোবেল পাওয়ার ব্যাপারে অনেক আগ্রহী। ১১ থেকে ১৫ বছরের শিশুদের মধ্যে এই হার আবার ৩৩ শতাংশ।
পাদ টিকা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একবার লন্ডন গেছেন। ইংল্যান্ডে প্রবাসী বাঙ্গালীদের মধ্যে কাড়াকাড়ি পড়ে গেছে কে কার আগে রবি ঠাকুরের সাথে দেখা করবে।
এক বাঙ্গালী যুবক দীর্ঘ আট বছর ধরে লন্ডনে ব্যারিস্টারী পড়ছে। পাশ আর করা হয়ে উঠেনি। এটা নিয়ে তার কোন মাথা ব্যাথাও নেই। কারণ তত দিনে সে ইংরেজদের আদব কায়দা ভালই রপ্ত কর নিয়েছে। সে আসল রবি ঠাকুরের সাথে দেখো করতে।
প্রথম সাক্ষাতেই সে উনার সাথে ইংরেজীতে কথাবার্তা বলা শুরু করে দেয়। এবং কথায় কথায় জানিয়ে দেয় দীর্ঘ দিন এদেশে থাকার কারণে বাংলা প্রায় সে ভুলেই গেছে তারচেয়ে ইংরেজীতে সে বেশী অভ্যস্ত।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যুবকের মুখের দিকে তাকিয়ে বলেন-বাঙ্গালীর ছেলে বাংলা বলতে ভুলে গেছ, এ কথা জানাবার আগে লজ্জা বোধ করা উচিত ছিল। কিন্তু তুমিতো দেখছি ইংরেজীটাও ভাল করে রপ্ত করতে পারনি।
** রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদাহরণ দেয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে-ব্রিটিশ সরকার একবার সিদ্ধান্ত নিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করা হোক। তখন সারা ভারতজুড়ে চলছিল ইংরেজ বিরোধী আন্দোলন। তাই রবি ঠাকুর ব্রিটিশদের কাছ থেকে এই উপাধি গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। তা না হলে আজকে আমাদের বলতে হত-স্যার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
তথ্য সূত্র: বিবিসি নিউজ।
Subscribe to:
Posts (Atom)