আজ সকাল থেকেই হাসানের মন খুব খারাপ। কাজে যেতে ইচ্ছে করছে না। কত কাল হয়ে গেছে দেশ ছেড়ে সে প্রবাসে পড়ে রয়েছে। এখন আর মাস বছর মনে থাকে না। পরিবারের লোকজনের চেহারাও এখন অনেকটা ঝাপসা হয়ে এসেছে।
কত দিন বাবা-মা, ভাই-বোনদের দেখে না। ছোট ভাই-বোনটা কত বড় হয়েছে। হাসানের কাছে তাদের বয়স বাড়েনি। সেই অনেক কাল আগে তাদের সেই ছোট্রটি দেখে এসেছে। এখনও তার চোখে তাদের সেই ছেলেবেলাটাই ভেসে উঠে।
দেশে এখন কোন কাল চলছে। শীতকাল নাকি বর্ষা কাল। এই মরুর দেশেও মাঝে মাঝে বৃষ্টি হয়। কিন্তু সেই বৃষ্টির পানিতে দেশের বৃষ্টির মত মন আকুলি বিকুলি করে না।
শরীরটা কয়েক দিন ধরে ভাল যাচ্ছে না। থেকে থেকে জ্বর আসে। কিন্তু কাজে না গিয়ে কোন উপায় নেই। যে মালিকের কারখানায় সে কাজ করে সেই মালিক নিজের দামী হাত ঘড়িটা হারিয়ে ফেললে যেটুকু দুঃখ পাবে হাসান মারা গেলে সেটুকুও পাবে না। মালিকের কাছে তার পাসপোর্ট আটকানো রয়েছে। মালিক যতদিন না চাইবে ততদিন হাসান দেশে ফিরে যেতে পারবে না। অনেক দিন দেশের সাথে তার যোগাযোগ বন্ধ। মাস শেষে শুধু নাম মাত্র বেতন আর তিন বেলা খেতে দেয়া হয়। বাকী বেতন মালিক কেটে রেখে দেয় । মালিক যখন তাকে দেশে ফিরতে দেবে তখন তাকে তার পাওনা টাকা বুঝিয়ে দেয়া হবে। হাসান জানে বেশির ভাগ শ্রমিকের ক্ষেত্রেই মালিক তাদের কথা রক্ষা করে না। কিছু বলতে গেলে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। অবৈধ বাঙালী শ্রমিকদের সাথে এই দেশের পুলিশ জন্তুর মত আচরণ করে।
মাঝে মাঝে রাতে হাসান চুপি চুপি কাঁদে। তার তখন চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে-বাবা ও বাব আমাকে তুমি দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাও। আমি আর এখানে থাকব না। এখানে আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। ভাল চাকরির লোভে দেশে বাবার জমিজমা মার গহনা বিক্রি করে বিদেশে এসেছে। এখন ইচ্ছে করলেও খালি হাতে দেশে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। মাঝে মাঝে হাসান দেশে ফোন করলে মা ফোন ধরে কাঁদেন আর বলেন ও বাব তুই ভাল আছিস। হাসান কোন উত্তর দিতে পারে না। শুধু তার বুকের ভেতর কান্না দলা পাকিয়ে উঠে।
অনেক দেশে পোষা প্রাণীদের অধিকার সংরক্ষণের জন্যে অনেক মানবাধিকার সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের মতো অধিকার বঞ্চিত শ্রমিকদের জন্যে কেউ কি কখনও মাথা ঘামায়। তারাতো ঐ সব পোষা প্রাণীদের চেয়েও মানবেতর দিনযাপন করে থাকে।
হাসান সময় মতই অফিসে এসে পৌছে। আজ মালিক অফিসে আসেননি। প্রবাসীদের নিয়ে এখানে কি একটা অনুষ্ঠান হচ্ছে। দেশ থেকে বিভিন্ন মিডিয়া থেকে অনেক লোকজন এসেছে। পুরো অনুষ্ঠান যারা স্পন্সর করছেন, তার মধ্যে হাসানের মালিকও একজন। হাসানের মতো লোকদের ঐ সব অনুষ্ঠানে যাওয়ার সৌভাগ্য কখনই হবে না। সারাদিন অমানুষিক পরিশ্রমের পর রাতে বাড়ী ফিরে টিভিতে হাসান অনুষ্ঠানের পুনঃপ্রচার দেখতে পায়। অনুষ্ঠানের সবাই খুব আনন্দ করছে। চারদিকে চোখ ধাঁধাঁনো লেজার শো। আনন্দ শুধুই আনন্দ। হাসানের চোখ এক সময় ঝাপসা হয়ে আসে। এখন আর সে টিভিতে কিছুই দেখতে পাচ্ছে না।
প্রতি বছর প্রবাসী বাঙালীদের নিয়ে এমনি আরও অনেক অনুষ্ঠান হবে কিন্তু তার মত লোকদের ভাগ্যের কখনও কোন পরিবর্তন হবে না। কারও কাছে এত সময় নেই যারা তাদের নিয়ে মাথা ঘামাবে। তাদের হয়ে সবার কাছে দুটি কথা বলবে। সবাই আছে অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত। দর্শকদের যে কোন ভাবে একটি উপভোগ্য বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান তাদের উপহার দিতে হবে। দেশের সব টিভি চ্যানেল ব্যস্ত হয়ে পড়বে কার আগে কে ঐ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। পত্রিকায় ফলাও করে ছাপা হবে-মরুর বুকে হয়ে গেল প্রবাসী বাঙালীদের নিয়ে আনন্দঘন এক জমকালো অনুষ্ঠান। প্রবাসীদের নিয়ে এ ধরনের অনুষ্ঠান আরও বেশী বেশী হওয়া দরকার। কারণ এরাই হচ্ছেন আমাদের দেশের চালিকা শক্তি। এদের পাঠানো কষ্টের উপার্জনের টাকা দিয়েই দেশে চলছে।
** কিছুদিন পূর্বে কুয়েতে বাংলাদেশী শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর আন্দোলনের পরবর্তী ফলাফল আমরা জানি। কয়েকজন শ্রমিকের ভুল সিদ্ধান্তের দায় দায়িত্ব নিতে হয়েছে শত শত শ্রমিকদের। প্রবাসী শ্রমিকরা যখন দেশে ফেরত আসে তখন এয়ারপোর্টে তাদের নামার ছবি ছাপা হয় বিভিন্ন দৈনিকে। সেখানে শ্রমিকদের পায়ে কোন জুতা নেই। যাদের আছে তাদের দুই পায়ে দুই ধরনের জুতা। এই ছবির পর আর কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রবাসে তারা কিরকম দীন হীন অবস্থায় বাস করে এটা হচ্ছে তার নমুনা।
কুয়েত সরকার তাদের প্রতি যে অন্যায় আচরণ করেছে তখন সেখানকার বাংলাদেশী দুতাবাসের কাজ কি ছিল। তারা কেন তখন একটি কার্যকরী ভূমিকা নেয়নি। প্রবাসে কখনও বাঙালীরা কোন সমস্যায় পড়লে বাংলাদেশী দূতাবাসের খুব ভাল সহায়তা পেয়েছে বলে আমার জানা নেই। যার জন্যে একই কাজের জন্যে একজন বাঙালীকে যে অর্থ দেয়া হয় সেই একই কাজের জন্যে একজন ইন্ডিয়ান কে তার তিন গুন অর্থ দেয়া হয়। তাহলে এত অর্থ অপচয় করে বিদেশে এই সব দূতাবাস রাখার দরকার কি। তাই এদের কাছ থেকে আমরা আজ আর কোন কিছু প্রত্যাশা করি না।
মিডিয়া প্রবাসে বেশ কিছু প্রশংসনীয় কাজ করছে। প্রবাসীদের নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তারা বিদেশে দেশের সংস্কৃতিকে সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি তারা যদি ঐ সব হতভাগ্য প্রবাসী বাঙালীদের কথা সমগ্র প্রবাসীদের সামনে তুলে ধরতে পারে তবে তা অনেক বড় একটা কাজ হবে। মিডিয়ার শক্তি অনেক তবে সে যদি তার শক্তিকে শুধু মাত্র ব্যাবসায়িক কাজে না লাগিয়ে যথাযথ ভাবে তার শক্তিকে মানুষের প্রয়োজনে কাজে লাগায়।
Monday, May 17, 2010
Wednesday, May 12, 2010
ভালোবাসার অশ্রু
রিক্সাওয়ালা ছোকরার চেহারা দেখলে মনে হবে বেচারা এই মাত্র সদ্য ভুমিষ্ট হয়েছে। হাসান মনে মনে গাল দেয়-হারামজাদা। রিক্সা নয় যেন হারামজাদা হেলিকপ্টার চালাচ্ছিল। তবে হাসানই তাকে তাড়াতাড়ি চালানোর জন্যে উৎসাহ দিচ্ছিল। আনিকা তার জন্যে কলা ভবনের সামনে অপেক্ষা করছে। এমনিতেই দেরী হয়ে গেছে।
ছোকরা রিক্সাওয়ালা ১০-১২ বছরের ছোট একটি বাচ্চা ছেলের গায়ের উপর রিক্সা উঠিয়ে দিয়েছে। একটু সুযোগ পেলে অবশ্য হাসান কেটে পড়তে পারত। কিন্তু লোকজন এরই মধ্যে জটলা পাকিয়ে ফেলেছে। রক্তে বাচ্চাটির কাপড় চোপড় ভিজে যাচ্ছে।
আহারে কার বাচ্চা এমন করে এক্সিডেন্ট করল। চারদিক থেকে বিভিন্ন মন্তব্য ভেসে আসতে থাকে। তাড়াতাড়ি একে হাসপাতালে পৌঁছানো দরকার। দেখা যাচ্ছে লোকজন সবাই বেশ সহানুভুতি সম্পন্ন।
পাবলিক সেন্টিমেন্টস খুব ভয়ঙ্কর জিনিস। মারপিটের কাজ পাবলিক খুব ভাল পারে। আর পাবলিক একবার মার শুরু করলে ইন্নালিল্লাহি না পড়ে ক্ষান্ত হয় না। তাই খুব সাবধানে এগুতে হবে। চিন্তা ভাবনা করে চাল দিতে হবে। চালে ভুল হলে সর্বনাশ।
হাসান ঠাস ঠাস করে রিক্সাওয়ালা ছোকরার দুই গালে চড় বসিয়ে দেয়। ফাজিল তোকে কে বলেছিল এভাবে রিক্সা চালাতে। আমি বার বার করে তোকে সাবধান করলাম। তোরা হলি গিয়ে লাত্থি-উষ্টার মানুষ। মুখের কোন কথা তোদের ভাল লাগে না।
প্রথম পর্ব শেষ। এবার লোকজন ভাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
হাসান চোখ মুখ করুন করে ফেলে।
আহারে কোন মায়ের বুকের ধন। ভাইরা আসুন একটু সাহায্য করেন। একে হাসপাতালে পৌছানোর ব্যবস্থা করি।
এবার কাজ হল। একজন দুইজন করে লোকজন আস্তে আস্তে কেটে পড়তে শুরু করল। শেষ পর্যন্ত হাসান আর রিক্সাওয়ালা রয়ে গেল।
কে যায় উটকো ঝামেলাতে জড়াতে। রাস্তায় ভিড় করে এক্সসিডেন্টে আহত কোন ব্যক্তিকে দেখে আহা উহু করা এক জিনিস। এখানে যে কোন সময় কেটে পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। আর দায়িত্ব নিয়ে তাকে হাসপাতালে পৌছে দিয়ে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা আরেক জিনিস। এর মানেই হল বজ্র আঁটুনিতে আটকে পড়া। তার অভিভাবককে খবর দাও। বেশী আহত হলে পুলিশ এসে জেরা করবে। যত্তসব ফালতু দরবার।
হাসান রিক্সাওয়ালা ছোকরাকে কেটে পড়তে ইশারা দিয়ে নিজেও কেটে পড়ার প্রস্তুতি নেয়। কিছুদূর গিয়ে পেছনে ফিরে দেখে ছোকরা তার গায়ের শার্ট খুলে বাচ্চাটির মাথার রক্ত মুছে দিচ্ছে। শালার মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি। তাকে ঝামেলা থেকে বাচানোর চেষ্টা করছি আর সে কিনা গাধার মত কাজ করছে।
হাসান হন হন করে এগিয়ে আসে।
এ্যাই তুই বসে রয়েছিস কি মনে করে তাড়াতাড়ি ভাগ এখান থেকে।
এ্যাইটুকু একটা বাচ্চারে এইভাবে একলা ফাল্যাইয়া চ্যইললা যামু। এরে হাসপাতালে না নিলে এতো মইরা যাইব।
হাসানের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। ব্যাটা বলে কি। তুই হাতেম তাই এর শেষ বংশধর নাকি। এখন সমস্যা হচ্ছে রিক্সাওয়ালা ছোকরাকে কোনভাবেই নাড়ানো যাচ্ছে না। ফলে হাসানও যেতে পারছে না। কারণ এখন সে চলে গেলে সামান্য এই রিক্সাওয়ালার কাছে হেরে যেতে হবে। এটা কোন ভাবে মেনে নেয়া যায় না। কোথায় আমি হাসান একজন ইউনিভার্সিটিতে পড়া ব্রিলিয়ান্ট একজন স্টুডেন্ট আর কোথায় এই রিক্সা ড্রাইভার। যে কাজটা আমার করা দরকার তা এই ছোকরা করে ফেললে আমার তো মান সন্মান নিয়ে টানাটানি পড়ে যাবে।
হাসান সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। হাসান বাচ্চাটাকে নিয়ে রিক্সার সিটে উঠে বসে। রক্তে অবশ্য হাসানের কাপড় নষ্ট হচ্ছে। কি আর করা। আনিকার সাথেও আজ আর দেখা হচ্ছে না। আজ হাসানের জন্মদিন। আনিকা তাকে উইশ করার জন্যে গিফট নিয়ে অপেক্ষা করছে। খুব রেগে যাবে। এমনিতেই আনিকা অল্পতেই রেগে অস্থির হয়ে যায়। হাসানের একবার মনে হয় সব ফেলে সে চলে যায়। কিন্তু সে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রিক্সায় বসে থাকে।
এ্যাই তুই কাছের কোন হাসপাতালে রিক্সা নিয়ে চল।
আনন্দে ছোকরার দাঁত বেরিয়ে পড়ে। মহা উৎসাহে সে রিক্সা টেনে নিয়ে চলে। হাসান বুঝতে পারছে না গর্দ্ধভটা এত খুশির কি দেখল।
সারাদিন হাসানের হাসপাতালেই কাটে। আজকাল হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা করানোও মহা ঝামেলার ব্যাপার। কিভাবে এক্সসিডেন্টে হল। পেশেন্ট আপনার কি হয়। প্রভৃতি নানান ধরনের প্রশ্ন।
বাচ্চাটির পকেটে তার স্কুলের আইডি কার্ড থাকাতে সেখান থেকে তার বাড়ির ঠিকানা নিয়ে তার মা-বাবাকে খবর দেয়া হয়েছে। তারা এসে পড়লে হাসানের ছুটি। বাকী ঝামেলা তারাই সামলাক। এর মধ্যে অবশ্য হাসান উধাও হয়ে যেতে পারত। কিন্তু বাচ্চার মা-বাবা অনুরোধ করেন তারা না আসা পর্যন্ত সে যেন হাসপাতালেই থাকে।
বাচ্চার মা-বাবা চলে এসেছেন। মা থেকে থেকে চোখ মুছছেন। বাবা কয়েকটা পাঁচশত টাকার নোট হাসানের পকেটে গুজে দেন।
বাবা তুমি আমার ছেলের মত। আমাদের একমাত্র ছেলের জন্যে তুমি যা করলে তোমার এই ঋণ আমরা কখনও শোধ করতে পারব না। না হলে আজকাল কে কার জন্যে এতকিছু করে। শুধু চিকিৎসার খরচ বাবদ তোমাকে এই টাকা কটি দিলাম। ফিরিয়ে দিলে আমরা মনে খুব কষ্ট পাব।
হাসান মনে মনে ভাবে এরা বোধ হয় জানে না তাদের ছেলে হাসানেরই রিক্সা দিয়ে এক্সসিডেন্টে করেছে। আর আসলেই তার হাসপাতালের ডাক্তার ওষুধ প্রভৃতির পেছনে অনেক টাকা চলে গেছে। তাই এই টাকা সে ফিরিয়ে দেবে এত বোকা সে নয়। তারপরও সে চেহারায় গোবেচারা একটি ভাব ফুটিয়ে তোলে যেন খুব অনিচ্ছা সত্বেও সে এই টাকা নিচ্ছে।
এবার বিদায়ের পালা। সৌজন্যমূলক দু একটা কথা বলে হাসান বিদায় নেয়। একটু পরে হাসান ঘাড় ফিরিয়ে দেখে মা-বাবা দু জনেই তার গমন পথের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। দু জনের চোখেই পানি টলমল করছে। সেন্টিমেন্টস জিনিসটা হাসান একদম সহ্য করতে পারে না। কিন্তু এই মুহূর্তে সব কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। তাই সে তাড়াতাড়ি ঘাড় ফিরিয়ে নেয়। কারণ তাদের এই অশ্রু ভালোবাসার অশ্রু। এর দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে তার চোখও ভিজে আসবে। সে তার চোখের পানি কাওকে দেখতে দিতে চাচ্ছে না।
বাইরে বেরিয়ে সে অবাক হয়, সেই রিক্সাওয়ালা ছোকরা এখনও রয়েছে। বাইরে বারান্দার এক কোনে বসে রয়েছে।
হাসান তাকে ধমক দিতে গিয়েও নিজেকে সামলে নেয়। রাগী গলায় বলে- কিরে তুই বসে আছিস কি মনে করে। তোরতো এমনিতেই সারাদিন কোন রোজগার হয়নি।
কেমন গাধা দেখ। ধমক শুনেও কি রকম দাঁত বের করে রেখেছে। যেন সারাদিন রোজগার না হওয়াটা কোন চিন্তার বিষয় না। হাসান ঘোর লাগা চোখে ছোকরার দিকে তাকিয়ে থাকে। এই সামান্য পুঁচকে ছোকরা নিজের অজান্তে আজ হাসানকে অনেক কিছু শিখিয়ে দিয়ে গেছে।
হাসান তার পকেট থেকে পাঁচশত টাকার নোট কটি বের করে ছোকরার হাতে ধরিয়ে দেয়।
বাড়ী চলে যা। বাচ্চা ভাল আছে। তার মা-বাবা চলে এসেছেন। আর কোন চিন্তা নেই।
তাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে হাসান হন হন করে হাঁটতে শুরু করে দেয়। একবারও সে পিছনে ফিরে তাকায় না।
** একদিন মা তার মধ্যে আরেকটি প্রাণের অস্তিত্ব অনুভব করে। ধীরে ধীরে মাতৃত্বের লক্ষণগুলি প্রকট হতে শুরু করে। মা প্রতিক্ষার প্রহরগুণে। তারপর একদিন বাবুটা পৃথিবীতে আসে। মা বাবুটাকে সর্বক্ষণ আগলে রাখে। তাকে নিয়ে মার কত স্বপ্ন। মার হাত ধরে সে হাঁটতে শিখে।
একসময় বাবুটা বড় হতে শুরু করে। দৈহিক উচ্চতায় একদিন মাকেও সে ছাড়িয়ে যায়। এখন আর মার দুর্বল হাতের তার আর কোন প্রয়োজন নাই। মা চেয়ে চেয়ে দেখে বাবুটা কত দ্রুত বদলে যাচ্ছে। দিনে দিনে দূরত্ব বাড়তে শুরু করে। এক সময় বাবুটা কেমন অচেনা হয়ে পড়ে। মা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। দুই চোখ বেড়ে গড়িয়ে পড়ে অশ্রু। ভালোবাসার অশ্রু তার বাবুটার জন্য।
৯ মে বিশ্ব মা দিবস। আমার মনে হয় মা দিবস বলে আসলে আলাদা কোন কিছু নেই। বছরের সব দিনই হোক মায়ের জন্য।
ছোকরা রিক্সাওয়ালা ১০-১২ বছরের ছোট একটি বাচ্চা ছেলের গায়ের উপর রিক্সা উঠিয়ে দিয়েছে। একটু সুযোগ পেলে অবশ্য হাসান কেটে পড়তে পারত। কিন্তু লোকজন এরই মধ্যে জটলা পাকিয়ে ফেলেছে। রক্তে বাচ্চাটির কাপড় চোপড় ভিজে যাচ্ছে।
আহারে কার বাচ্চা এমন করে এক্সিডেন্ট করল। চারদিক থেকে বিভিন্ন মন্তব্য ভেসে আসতে থাকে। তাড়াতাড়ি একে হাসপাতালে পৌঁছানো দরকার। দেখা যাচ্ছে লোকজন সবাই বেশ সহানুভুতি সম্পন্ন।
পাবলিক সেন্টিমেন্টস খুব ভয়ঙ্কর জিনিস। মারপিটের কাজ পাবলিক খুব ভাল পারে। আর পাবলিক একবার মার শুরু করলে ইন্নালিল্লাহি না পড়ে ক্ষান্ত হয় না। তাই খুব সাবধানে এগুতে হবে। চিন্তা ভাবনা করে চাল দিতে হবে। চালে ভুল হলে সর্বনাশ।
হাসান ঠাস ঠাস করে রিক্সাওয়ালা ছোকরার দুই গালে চড় বসিয়ে দেয়। ফাজিল তোকে কে বলেছিল এভাবে রিক্সা চালাতে। আমি বার বার করে তোকে সাবধান করলাম। তোরা হলি গিয়ে লাত্থি-উষ্টার মানুষ। মুখের কোন কথা তোদের ভাল লাগে না।
প্রথম পর্ব শেষ। এবার লোকজন ভাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
হাসান চোখ মুখ করুন করে ফেলে।
আহারে কোন মায়ের বুকের ধন। ভাইরা আসুন একটু সাহায্য করেন। একে হাসপাতালে পৌছানোর ব্যবস্থা করি।
এবার কাজ হল। একজন দুইজন করে লোকজন আস্তে আস্তে কেটে পড়তে শুরু করল। শেষ পর্যন্ত হাসান আর রিক্সাওয়ালা রয়ে গেল।
কে যায় উটকো ঝামেলাতে জড়াতে। রাস্তায় ভিড় করে এক্সসিডেন্টে আহত কোন ব্যক্তিকে দেখে আহা উহু করা এক জিনিস। এখানে যে কোন সময় কেটে পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। আর দায়িত্ব নিয়ে তাকে হাসপাতালে পৌছে দিয়ে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা আরেক জিনিস। এর মানেই হল বজ্র আঁটুনিতে আটকে পড়া। তার অভিভাবককে খবর দাও। বেশী আহত হলে পুলিশ এসে জেরা করবে। যত্তসব ফালতু দরবার।
হাসান রিক্সাওয়ালা ছোকরাকে কেটে পড়তে ইশারা দিয়ে নিজেও কেটে পড়ার প্রস্তুতি নেয়। কিছুদূর গিয়ে পেছনে ফিরে দেখে ছোকরা তার গায়ের শার্ট খুলে বাচ্চাটির মাথার রক্ত মুছে দিচ্ছে। শালার মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি। তাকে ঝামেলা থেকে বাচানোর চেষ্টা করছি আর সে কিনা গাধার মত কাজ করছে।
হাসান হন হন করে এগিয়ে আসে।
এ্যাই তুই বসে রয়েছিস কি মনে করে তাড়াতাড়ি ভাগ এখান থেকে।
এ্যাইটুকু একটা বাচ্চারে এইভাবে একলা ফাল্যাইয়া চ্যইললা যামু। এরে হাসপাতালে না নিলে এতো মইরা যাইব।
হাসানের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। ব্যাটা বলে কি। তুই হাতেম তাই এর শেষ বংশধর নাকি। এখন সমস্যা হচ্ছে রিক্সাওয়ালা ছোকরাকে কোনভাবেই নাড়ানো যাচ্ছে না। ফলে হাসানও যেতে পারছে না। কারণ এখন সে চলে গেলে সামান্য এই রিক্সাওয়ালার কাছে হেরে যেতে হবে। এটা কোন ভাবে মেনে নেয়া যায় না। কোথায় আমি হাসান একজন ইউনিভার্সিটিতে পড়া ব্রিলিয়ান্ট একজন স্টুডেন্ট আর কোথায় এই রিক্সা ড্রাইভার। যে কাজটা আমার করা দরকার তা এই ছোকরা করে ফেললে আমার তো মান সন্মান নিয়ে টানাটানি পড়ে যাবে।
হাসান সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। হাসান বাচ্চাটাকে নিয়ে রিক্সার সিটে উঠে বসে। রক্তে অবশ্য হাসানের কাপড় নষ্ট হচ্ছে। কি আর করা। আনিকার সাথেও আজ আর দেখা হচ্ছে না। আজ হাসানের জন্মদিন। আনিকা তাকে উইশ করার জন্যে গিফট নিয়ে অপেক্ষা করছে। খুব রেগে যাবে। এমনিতেই আনিকা অল্পতেই রেগে অস্থির হয়ে যায়। হাসানের একবার মনে হয় সব ফেলে সে চলে যায়। কিন্তু সে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রিক্সায় বসে থাকে।
এ্যাই তুই কাছের কোন হাসপাতালে রিক্সা নিয়ে চল।
আনন্দে ছোকরার দাঁত বেরিয়ে পড়ে। মহা উৎসাহে সে রিক্সা টেনে নিয়ে চলে। হাসান বুঝতে পারছে না গর্দ্ধভটা এত খুশির কি দেখল।
সারাদিন হাসানের হাসপাতালেই কাটে। আজকাল হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা করানোও মহা ঝামেলার ব্যাপার। কিভাবে এক্সসিডেন্টে হল। পেশেন্ট আপনার কি হয়। প্রভৃতি নানান ধরনের প্রশ্ন।
বাচ্চাটির পকেটে তার স্কুলের আইডি কার্ড থাকাতে সেখান থেকে তার বাড়ির ঠিকানা নিয়ে তার মা-বাবাকে খবর দেয়া হয়েছে। তারা এসে পড়লে হাসানের ছুটি। বাকী ঝামেলা তারাই সামলাক। এর মধ্যে অবশ্য হাসান উধাও হয়ে যেতে পারত। কিন্তু বাচ্চার মা-বাবা অনুরোধ করেন তারা না আসা পর্যন্ত সে যেন হাসপাতালেই থাকে।
বাচ্চার মা-বাবা চলে এসেছেন। মা থেকে থেকে চোখ মুছছেন। বাবা কয়েকটা পাঁচশত টাকার নোট হাসানের পকেটে গুজে দেন।
বাবা তুমি আমার ছেলের মত। আমাদের একমাত্র ছেলের জন্যে তুমি যা করলে তোমার এই ঋণ আমরা কখনও শোধ করতে পারব না। না হলে আজকাল কে কার জন্যে এতকিছু করে। শুধু চিকিৎসার খরচ বাবদ তোমাকে এই টাকা কটি দিলাম। ফিরিয়ে দিলে আমরা মনে খুব কষ্ট পাব।
হাসান মনে মনে ভাবে এরা বোধ হয় জানে না তাদের ছেলে হাসানেরই রিক্সা দিয়ে এক্সসিডেন্টে করেছে। আর আসলেই তার হাসপাতালের ডাক্তার ওষুধ প্রভৃতির পেছনে অনেক টাকা চলে গেছে। তাই এই টাকা সে ফিরিয়ে দেবে এত বোকা সে নয়। তারপরও সে চেহারায় গোবেচারা একটি ভাব ফুটিয়ে তোলে যেন খুব অনিচ্ছা সত্বেও সে এই টাকা নিচ্ছে।
এবার বিদায়ের পালা। সৌজন্যমূলক দু একটা কথা বলে হাসান বিদায় নেয়। একটু পরে হাসান ঘাড় ফিরিয়ে দেখে মা-বাবা দু জনেই তার গমন পথের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। দু জনের চোখেই পানি টলমল করছে। সেন্টিমেন্টস জিনিসটা হাসান একদম সহ্য করতে পারে না। কিন্তু এই মুহূর্তে সব কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। তাই সে তাড়াতাড়ি ঘাড় ফিরিয়ে নেয়। কারণ তাদের এই অশ্রু ভালোবাসার অশ্রু। এর দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে তার চোখও ভিজে আসবে। সে তার চোখের পানি কাওকে দেখতে দিতে চাচ্ছে না।
বাইরে বেরিয়ে সে অবাক হয়, সেই রিক্সাওয়ালা ছোকরা এখনও রয়েছে। বাইরে বারান্দার এক কোনে বসে রয়েছে।
হাসান তাকে ধমক দিতে গিয়েও নিজেকে সামলে নেয়। রাগী গলায় বলে- কিরে তুই বসে আছিস কি মনে করে। তোরতো এমনিতেই সারাদিন কোন রোজগার হয়নি।
কেমন গাধা দেখ। ধমক শুনেও কি রকম দাঁত বের করে রেখেছে। যেন সারাদিন রোজগার না হওয়াটা কোন চিন্তার বিষয় না। হাসান ঘোর লাগা চোখে ছোকরার দিকে তাকিয়ে থাকে। এই সামান্য পুঁচকে ছোকরা নিজের অজান্তে আজ হাসানকে অনেক কিছু শিখিয়ে দিয়ে গেছে।
হাসান তার পকেট থেকে পাঁচশত টাকার নোট কটি বের করে ছোকরার হাতে ধরিয়ে দেয়।
বাড়ী চলে যা। বাচ্চা ভাল আছে। তার মা-বাবা চলে এসেছেন। আর কোন চিন্তা নেই।
তাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে হাসান হন হন করে হাঁটতে শুরু করে দেয়। একবারও সে পিছনে ফিরে তাকায় না।
** একদিন মা তার মধ্যে আরেকটি প্রাণের অস্তিত্ব অনুভব করে। ধীরে ধীরে মাতৃত্বের লক্ষণগুলি প্রকট হতে শুরু করে। মা প্রতিক্ষার প্রহরগুণে। তারপর একদিন বাবুটা পৃথিবীতে আসে। মা বাবুটাকে সর্বক্ষণ আগলে রাখে। তাকে নিয়ে মার কত স্বপ্ন। মার হাত ধরে সে হাঁটতে শিখে।
একসময় বাবুটা বড় হতে শুরু করে। দৈহিক উচ্চতায় একদিন মাকেও সে ছাড়িয়ে যায়। এখন আর মার দুর্বল হাতের তার আর কোন প্রয়োজন নাই। মা চেয়ে চেয়ে দেখে বাবুটা কত দ্রুত বদলে যাচ্ছে। দিনে দিনে দূরত্ব বাড়তে শুরু করে। এক সময় বাবুটা কেমন অচেনা হয়ে পড়ে। মা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। দুই চোখ বেড়ে গড়িয়ে পড়ে অশ্রু। ভালোবাসার অশ্রু তার বাবুটার জন্য।
৯ মে বিশ্ব মা দিবস। আমার মনে হয় মা দিবস বলে আসলে আলাদা কোন কিছু নেই। বছরের সব দিনই হোক মায়ের জন্য।
Saturday, May 8, 2010
জাস্টিস!
১. যুক্তরাষ্ট্রের বেটি বুলক (বয়স ৬৪) নামে এক মহিলা ফুসফুস ক্যান্সারে মারা যান ২০০৩ সালে। তিনি টানা ৪৭ বছর ফিলিপ মরিস কোম্পানীর সিগারেট পান করেছেন। তিনি বুকে ব্যথা অনুভব করলে ২০০১ সালে ঐ কোম্পানীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এর প্রেক্ষিতে লস এঞ্জেলেসের একটি আদালত ২০০২ সালে এক রায়ে ঐ কোম্পানীকে ২ কোটি ৮০ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে বলেন। পরে কোম্পানী আপিল করলে আদালত সম্প্রতি চূড়ান্ত রায়ে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক কমিয়ে ১ কোটি ৩৮ লাখ ডলার করেন এবং তা বুলকের মেয়েকে দেয়ার নির্দেশ দেন।– সূত্র: বিবিসি নিউজ।
২. অন্যায্যভাবে দাম নির্ধারণের জন্য যুক্তরাজ্যের ডজনখানেক সিগারেট কোম্পানী, চেইনশপ ও খুচরা বিপনন সংস্থাকে রেকর্ড পরিমাণ জরিমানা করেছে অফিস অব ফেয়ার ট্রেডিং (OFT)। প্রতিষ্ঠানটি সাত বছর ধরে তদন্ত করে দেখেছে সিগারেট কোম্পানীগুলি খুচরা বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলির সাথে গোপন কারসাজি করে বাজারে প্রতিযোগিতামূলক মূল্য ধরে রাখে। এতে মুক্তবাজার অর্থনীতির মৌল ধারনারই লঙ্ঘন হয়। এই অনৈতিক কর্মকান্ডের দায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ২২ কোটি ৫০ লক্ষ পাউন্ড জরিমানা করেছে OFT। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১ কোটি ২০ লক্ষ পাউন্ড জরিমানা গুণতে হয়েছে ইম্পেরিয়াল টোব্যাকো কোম্পানীকে। যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর ১৩ বিলিয়ন ডলারের সিগারেট বিক্রি হয়। - সূত্র: গার্ডিয়ান, ১৯ এপ্রিল ২০১০।
উপরের দুটি ঘটনার কোনটাই আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ঘটেনি। কিন্তু সম্ভব। অনেকে হয়ত হাসিতে ভেঙ্গে পড়ছেন। যে দেশের সিগারেট কোম্পানীগুলি সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দাপটের সাথে ব্যবসা করে যাচ্ছে। মিডিয়াগুলিও যাদের বিরুদ্ধে টু শব্দ করার সাহস পায় না। তাদেরকে আবার করা হবে জরিমানা!
নীচের নিউজ ২ টা দেখুন-
১. কক্সবাজারের বাকশালী নদীর ফেরিঘাট বরাদ্দের টেন্ডার বাতিল করে রেট, টোল ও সীমানা নির্ধারণ করে পুনঃটেন্ডার আহবানের জন্য গত ১১ এপ্রিল হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু হাইকোর্টের এই নির্দেশ অমান্য করে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক গিয়াসউদ্দিন আহমেদ পূর্বের টেন্ডার বহাল রাখেন। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে একাধিক আদেশ দেয়ায় গত ২০ এপ্রিল আদালত অবমাননার মামলা দায়েরের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রুল জারি করে ও গিয়াসউদ্দিন আহমেদকে সশরীরে হাজির হবার নির্দেশ দেন।
আদালত অবমাননার অভিযোগে জেলা প্রশাসক গিয়াসউদ্দিন আহমেদকে ৩ ঘন্টা ৫ মিনিট আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এই সময় হাইকোর্ট তাকে তীব্র ভাষায় তিরস্কার করে বলেন-তিনি আমাদের (আদালতের) একাধিক আদেশ অমান্য করেছেন। তিনি তো নিজেকে লর্ড ভাবেন। জেলা প্রশাসক জনসাধারণের গোলাম। তিনি তো জেলার মালিক নন। জনগণের সেবক। জনগণের করের টাকায় তিনি বেতন পান। এটা তাকে উপলব্ধি করতে হবে এবং আইন মেনে চলতে হবে। হাইকোর্টে আদেশ পাবার পরেও তিনি কিভাবে তা অমান্য করে ৪/৫ টি আদেশ দেন। তিনি আদালতের আদেশ অমান্য করে ধৃষ্টতার চরমে দেখিয়েছেন।
এ সময় গিয়াসউদ্দিন আহমেদের পক্ষের কৌসুলী বারবার ক্ষমা প্রার্থনা করলে আদালত তাকে শর্ত স্বাপেক্ষে ক্ষমা করে দেন।
বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধূরী ও বিচারপতি মো. দেলোয়ার হোসেনকে নিয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দেন। - সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ৩ মে ২০১০।
২. পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ায় সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনে পুরিশের নিস্ক্রিয়তার বিষয়ে ব্যাখা দিতে পুলিশ সুপার (এসপি) কে হাইকোর্ট থেকে গতকাল সকালে কোর্টে হাজির হবার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু তিনি সে সময় না আসায় বিকেলে তাকে জরুরি তলব করে এনে কাঠগড়ায় দাঁড় করান বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি দেরোয়ার হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।এ সময় এসপি নাফিউল তার কৃতকর্মের জন্য হাত জোড় করে ক্ষমা চাইলে আদালত তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন।
হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে করা জনস্বার্থের একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে এসপিকে আদালতে তলব করা হয়। মঠবাড়িয়ায় সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে তাদের নিজস্ব বাড়ি-ঘরে বসবাসে সুযোগ করে দিতে পিরোজপুরের এসপি ও মঠবাড়িয়া থানার ওসি কে গতকাল নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সূত্র: আমাদের সময়, ৭ মে ২০১০
-যে দেশে বিচারের জন্য আদালতের পেছনে ঘুরতে ঘুরতে একটি লোক হয়ে পড়ে নিঃস্ব, তার জীবনের বেশীরভাগ মূল্যবান সময় চলে যায় ন্যায় বিচার পাবার আশায় আশায়। সেখানে এ ধরনের খবর অবশ্যই আমাদেরকে আশাবাদী করে তোলে।
** একটি দেশের আদালতের রয়েছে অফুরন্ত ক্ষমতা। কিন্তু আফসোস বিচারপ্রতিরা তা সব সময় প্রয়োগ করেন না।
২. অন্যায্যভাবে দাম নির্ধারণের জন্য যুক্তরাজ্যের ডজনখানেক সিগারেট কোম্পানী, চেইনশপ ও খুচরা বিপনন সংস্থাকে রেকর্ড পরিমাণ জরিমানা করেছে অফিস অব ফেয়ার ট্রেডিং (OFT)। প্রতিষ্ঠানটি সাত বছর ধরে তদন্ত করে দেখেছে সিগারেট কোম্পানীগুলি খুচরা বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলির সাথে গোপন কারসাজি করে বাজারে প্রতিযোগিতামূলক মূল্য ধরে রাখে। এতে মুক্তবাজার অর্থনীতির মৌল ধারনারই লঙ্ঘন হয়। এই অনৈতিক কর্মকান্ডের দায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ২২ কোটি ৫০ লক্ষ পাউন্ড জরিমানা করেছে OFT। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১ কোটি ২০ লক্ষ পাউন্ড জরিমানা গুণতে হয়েছে ইম্পেরিয়াল টোব্যাকো কোম্পানীকে। যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর ১৩ বিলিয়ন ডলারের সিগারেট বিক্রি হয়। - সূত্র: গার্ডিয়ান, ১৯ এপ্রিল ২০১০।
উপরের দুটি ঘটনার কোনটাই আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ঘটেনি। কিন্তু সম্ভব। অনেকে হয়ত হাসিতে ভেঙ্গে পড়ছেন। যে দেশের সিগারেট কোম্পানীগুলি সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দাপটের সাথে ব্যবসা করে যাচ্ছে। মিডিয়াগুলিও যাদের বিরুদ্ধে টু শব্দ করার সাহস পায় না। তাদেরকে আবার করা হবে জরিমানা!
নীচের নিউজ ২ টা দেখুন-
১. কক্সবাজারের বাকশালী নদীর ফেরিঘাট বরাদ্দের টেন্ডার বাতিল করে রেট, টোল ও সীমানা নির্ধারণ করে পুনঃটেন্ডার আহবানের জন্য গত ১১ এপ্রিল হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু হাইকোর্টের এই নির্দেশ অমান্য করে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক গিয়াসউদ্দিন আহমেদ পূর্বের টেন্ডার বহাল রাখেন। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে একাধিক আদেশ দেয়ায় গত ২০ এপ্রিল আদালত অবমাননার মামলা দায়েরের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রুল জারি করে ও গিয়াসউদ্দিন আহমেদকে সশরীরে হাজির হবার নির্দেশ দেন।
আদালত অবমাননার অভিযোগে জেলা প্রশাসক গিয়াসউদ্দিন আহমেদকে ৩ ঘন্টা ৫ মিনিট আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এই সময় হাইকোর্ট তাকে তীব্র ভাষায় তিরস্কার করে বলেন-তিনি আমাদের (আদালতের) একাধিক আদেশ অমান্য করেছেন। তিনি তো নিজেকে লর্ড ভাবেন। জেলা প্রশাসক জনসাধারণের গোলাম। তিনি তো জেলার মালিক নন। জনগণের সেবক। জনগণের করের টাকায় তিনি বেতন পান। এটা তাকে উপলব্ধি করতে হবে এবং আইন মেনে চলতে হবে। হাইকোর্টে আদেশ পাবার পরেও তিনি কিভাবে তা অমান্য করে ৪/৫ টি আদেশ দেন। তিনি আদালতের আদেশ অমান্য করে ধৃষ্টতার চরমে দেখিয়েছেন।
এ সময় গিয়াসউদ্দিন আহমেদের পক্ষের কৌসুলী বারবার ক্ষমা প্রার্থনা করলে আদালত তাকে শর্ত স্বাপেক্ষে ক্ষমা করে দেন।
বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধূরী ও বিচারপতি মো. দেলোয়ার হোসেনকে নিয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দেন। - সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ৩ মে ২০১০।
২. পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ায় সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনে পুরিশের নিস্ক্রিয়তার বিষয়ে ব্যাখা দিতে পুলিশ সুপার (এসপি) কে হাইকোর্ট থেকে গতকাল সকালে কোর্টে হাজির হবার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু তিনি সে সময় না আসায় বিকেলে তাকে জরুরি তলব করে এনে কাঠগড়ায় দাঁড় করান বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি দেরোয়ার হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।এ সময় এসপি নাফিউল তার কৃতকর্মের জন্য হাত জোড় করে ক্ষমা চাইলে আদালত তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন।
হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে করা জনস্বার্থের একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে এসপিকে আদালতে তলব করা হয়। মঠবাড়িয়ায় সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে তাদের নিজস্ব বাড়ি-ঘরে বসবাসে সুযোগ করে দিতে পিরোজপুরের এসপি ও মঠবাড়িয়া থানার ওসি কে গতকাল নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সূত্র: আমাদের সময়, ৭ মে ২০১০
-যে দেশে বিচারের জন্য আদালতের পেছনে ঘুরতে ঘুরতে একটি লোক হয়ে পড়ে নিঃস্ব, তার জীবনের বেশীরভাগ মূল্যবান সময় চলে যায় ন্যায় বিচার পাবার আশায় আশায়। সেখানে এ ধরনের খবর অবশ্যই আমাদেরকে আশাবাদী করে তোলে।
** একটি দেশের আদালতের রয়েছে অফুরন্ত ক্ষমতা। কিন্তু আফসোস বিচারপ্রতিরা তা সব সময় প্রয়োগ করেন না।
Wednesday, May 5, 2010
ঈশ্বরের ঠিকানা
মাঝে মাঝে এই হাসপাতালের চার দেয়ালের ভিতরে কেমন দম বন্ধ হয়ে আসতে চায়। শাহেদ খুবই যুক্তিবাদী একটি ছেলে। সে কখনও প্রকৃতির মাঝে রহস্য খোঁজার চেষ্টা করেনি। প্রকৃতিতে রহস্য বলে কোন কিছু নেই। তার বিশ্বাস প্রকৃতিতে কোন কিছু এমনিতেই ঘটে না। সব কিছুর পেছনে একটি কারণ রয়েছে। যুক্তির বাইরে কোন কিছুতে সে কখনই বিশ্বাস করে না।
বিশ্বব্রম্মান্ডের কোথাও কি এমন কোন শক্তি লুকিয়ে আছে যা এই মহাবিশ্বের সব কিছুকে নিয়ন্ত্রণ করছে। তার মতে এটা একদমই বাজে কথা। বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করে দেখিয়ে দিয়েছেন একটি বিন্দু থেকে এই মহাবিশ্বের সৃষ্টি। তারপর তা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে গ্রহ, নক্ষত্র আর সব কিছুর। যদিও এই থিওরি তার মনে জন্ম দিয়েছে অনেক অজানা সব প্রশ্নের। বিগব্যাং এর পূর্বে কি ছিল? প্রাণের সৃস্টি কিভাবে হল? নিজে নিজে যদি প্রাণের সৃষ্টি হয়ে থাকে তবে ল্যাবরেটরিতে কেন আমরা প্রাণ সৃষ্টি করতে পারছি না? তবে তার বিশ্বাস একদিন মানুষ এই সব প্রশ্নেরও উত্তর খোঁজে বের করে ফেলবে। তখন আর সৃষ্টির রহস্য বলে কোন কিছু থাকবে না।
তার মতে ভাল মন্দের শিক্ষা দেয়ার জন্য ও সৎ জীবন যাপনের জন্য ধর্মগ্রন্থগুলি মানুষই বিভিন্ন সময়ে তৈরী করে গেছে। এখানে যে সৃষ্টিকর্তার কথা বলা হয়েছে তা শুধুই মানুষকে ভয় দেখাবার জন্য। যাতে করে তারা অন্যায় কাজ করতে ভয় পায়।
ধীরে ধীরে শাহেদের জীবন রেখা সংক্ষিপ্ত হয়ে আসছে। সে ক্যান্সারে আক্রান্ত। ডাক্তার সময় বেঁধে দিয়েছেন। এগিয়ে আসছে মৃত্যু। এখন শুধু অপেক্ষার পালা। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখিয়ে দিয়েছেন মানুষ অমর নয়, মরণশীল। শাহেদেরও তা ভাল করে জানা আছে। মরতেতো হবেই, একদিন আগে আর একদিন পরে।
তারপরও মাঝে মাঝে মন বিদ্রোহী হয়ে উঠে। মনে হয় যদি এই বিশ্বব্রম্মান্ডের কোথাও কোন এক সুপার পাওয়ার থাকত, যে সব কিছুই করতে পারত তবে শাহেদ তার কাছে আরও কয়েকটা দিন সময় চাইতে পারত। ধুর, কি সব বোকা আস্তিকবাদীদের মতো সে চিন্তা ভাবনা করতে শুরু করেছে। সৃষ্টিকর্তা বলতে কোন কিছু নেই। মানুষ তার কল্পনার মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তাকে তৈরী করে নিয়েছে। সে নিজে একজন ঘোর নাস্তিকবাদী। তাহলে কেন সে এই সব যুক্তি ছাড়া জিনিস কল্পনা করবে। প্রকৃতির সব কিছু তার নিজস্ব নিয়মে চলবে। এখানে কারও ইচ্ছা অনিচ্ছায় কিছু যায় আসে না।
আজ বাইরে বর্ষার প্রথম বৃষ্টি হচ্ছে। শাহেদ হাসপাতালের জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকে। নিঃশ্বাসে ভেসে আসছে ভেজা মাটির ঘ্রাণ। গাছের পাতাগুলি সব বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে যাচ্ছে। আহা কত সাধারণ, কিন্তু আজ মনে হচ্ছে কি অপূর্ব একটি দৃশ্য। ইচ্ছা করলেও সে আজ বৃষ্টির পানি ছুতে পারবে না। ক্যান্সার তার সারা শরীরে বাসা বেধে ফেলেছে। এখন সে বিছানা থেকেই উঠতে পারে না। অনেক চেষ্টা করে তার হাতটুকু সামনে বাড়িয়ে দেয়। সে জানে এতদূর থেকে সে বৃষ্টি স্পর্শ করতে পারবে না। ধপ করে তার হাতটা বিছানার উপর এলিয়ে পড়ে ।
একসময় শাহেদের সব চিন্তা ভাবনা কেমন এলোমেলো হয়ে আসে। মাথায় আবার ভোতা যন্ত্রনা শুরু হয়। নিজের অজান্তেই মনে মনে বলতে থাকে-হে মহাশক্তি, আমাকে একবার শুধু ঐ জানালা পর্যন্ত পৌছার শক্তিটুকু দান কর। প্রাণপন চেষ্টা করে সে উঠে বসে। ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে থাকে জানালার দিকে। অনেক দিন পর আজ সে উঠে দাঁড়াতে পারছে। আরেকটু, তাহলেই সে পৌছে যেতে পারবে। অবশেষে সে পৌছতে পারে। শাহেদ চমকে উঠে। তাহলে কি কোন অদৃশ্য শক্তি তার মনের ইচ্ছা পূরণ করে চলেছে। শাহেদ হাত বাড়িয়ে দেয় জানালার বাইরে। কত দিন পর আজ বৃষ্টির স্পর্শ অনুভব করছে। আহ্ কি শান্তি। শাহেদের দুই চোখ ভিজে আসে। হায়! বেঁচে থাকা এত আনন্দের কেন।
ইস্ এখন যদি কোন মিরাকল ঘটত। ঐশ্বরিক কোন শক্তির কল্যাণে সে যদি হঠাৎ করে ভাল হয়ে যেত। তবে কি তার এত দিনের বিশ্বাসে চিড় ধরতে আরম্ভ করেছে। শাহেদ মাথা থেকে এ ধরণের চিন্তা সরিয়ে দিতে চেষ্টা করে। ঈশ্বর বলে কোন কিছুর অস্তিত্ব নেই। এ সব শুধুই মানুষের অবচেতন মনের কল্পনা। কিন্তু শাহেদের চোখ প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য অবলোকন করতে করতে কি যেন খোঁজে ফিরে। আকাশের সীমানা ছাড়িয়ে তার দৃষ্টি চলে যায় দূরে, আরো দূরে। এই বিশ্বব্রম্মান্ডের কোথাও কি তাহলে লুকিয়ে রয়েছে এমন কোন ঐশ্বরিক শক্তি বা ঈশ্বর যিনি সব কিছুকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। যার জাদুর স্পর্শে সব কিছু বদলে যেতে পারে।
শাহেদ চোখ বন্ধ করে ফেলে। ফিস ফিস করে বলতে থাকে-হে অজানা ঐশ্বরিক শক্তি, আমাকে আর কয়েকটা দিনের আয়ু দান কর। আমি এই প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য আর কয়েকটি দিন দেখে যেতে চাই।
শাহেদ মারা যায় এর কিছুক্ষণ পরই । একজন ক্যান্সার আক্রান্ত লোকের স্বাভাবিক মৃত্যু। কোন মিরাকল ঘটেনি । প্রকৃতিতে সব কিছু তার মত করে ঘটে। প্রকৃতি তার সব রহস্য মানুষের কাছে প্রকাশ করে না। স্রষ্টা সব সময় তার সৃষ্টি নিজের মত করে পরিচালনা করেন। স্রষ্টা তার সব ক্ষমতা মানুষকে দেখাতে পছন্দ করেন না।
(** মে ফ্লাওয়ার। শুধু মে মাসেই এই ফুল ফোটে। এই ফুলটিকে দেখে আমি হঠাৎ করে চমকে উঠি। বুঝতে পারি মে মাস এসে গেছে। এই সাইকেলের কোন ব্যতিক্রম ঘটে না। প্রকৃতি অনিয়ম পছন্দ করে না। মনে হয় যেন সামান্য এই ফুলের মাধ্যমে প্রকৃতি তার সীমাহীন ক্ষমতার একটি ক্ষুদ্র নমুনা আমাদের সামনে রেখে দিয়েছে।)
Tuesday, May 4, 2010
টিপস: কিভাবে অল্প সময়ের মধ্য একজন জনপ্রিয় লেখক হবেন।
স্যার, আমায় চিনতে পেরেছেন?’
-না।
ফাস্ট ইয়ার, সায়েন্স ডিপার্টমেন্ট। আমি আপনার সবগুলি ক্লাস নিয়মিত এটেন্ড করতাম।’
-হ্যা, এই বার চিনতে পেরেছি। আমার সবগুলি পরীক্ষায় তুমি নিয়মিত ফেল মারতে। তা এখন কি করছ?
এই স্যার, লেখালেখি করে পেট চালাই আরকি।’
-আচ্ছা। তাহলে কেউ যদি তোমার পেটের দায়িত্ব নিয়ে নেয় তবে তুমি আর লেখালেখি করবে না।
ঠিক তা নয় স্যার। আমার স্বপ্ন আপনার মত একজন জনপ্রিয় সাই-ফাই লেখক হওয়া।’
-সাই বাবার নাম শুনে ছিলাম। সাই-ফাই আবার কি জিনিস, ঠিক বুঝলাম না।
ও আল্লা! এটা আধুনিক সায়েন্স ফিকশন। সংক্ষেপে সাই-ফাই। আমার ধারণা সায়েন্সের ছাত্র হওয়াতে আমি এই লাইনে ভাল করব। তাই আপনার কাছে এসেছি একটি ভাল সায়েন্স ফিকশন নামাতে হলে কি কি লাগে তার টিপস জানতে।’
-তোমার ধারণা বাজারের ফর্দ লেখার মত যে কেউ চাইলেই লেখালেখি শুরু করে দিতে পারে।
স্যার আমার এই স্ক্রিপ্টটা পড়লেই আপনি বুঝতে পারবেন আমি কত জাদরেল লেখক।’
-ঠিক আছে তুমি রেখে যাও আমি সময় করে দেখব।
স্যার আমি আপনাকে একটু পড়ে শুনাই।
এতো ভালই মুসিবতে পড়া গেল।
এক দল অভিযাত্রী উত্তর মেরু অভিযানে বের হয়েছে। জুল ভার্নের-ক্যাপটেন হ্যাটেরাস’ নামে এ রকম একটি কাহিনী আছে। আমারটা আরও ভয়াবহ। টেম্পেরেচার-২৯৯ ডিগ্রী সেঃ। যেখানে শূন্য ডিগ্রীতে পানি বরফ হয়ে যায়। তাহলে বুঝেন অবস্থা। কঠিন অবস্থা। সবার অবস্থা কেরাসিন। সব চেয়ে বেশী সমস্যা হচ্ছে পেশাব করা নিয়ে। কেউ পেশাব করতে পারছে না। পেশাব জমে বরফ হয়ে গেছে। তারপর……..’
-থামো, আমরা ধারণা জুলভার্ন বেঁচে থাকলে তোমার এই কাহিনী শুনে নির্ঘাত সুইসাইড করার চেষ্টা করতেন। পদার্থ বিদ্যার সূত্র অনুযায়ী -২৭৩ ডিগ্রীর নীচে টেম্পেরেচার পৌছতে পারে না। সেখানে টেম্পেরেচার-২৯৯ ডিগ্রী সেঃ তুমি কোথায় পেলে।
স্যার, এবার তাহলে আরেকটা শুনাই। এবার একদল অভিযাত্রী মহাকাশ পর্যবেক্ষণে বের হয়েছে। নভোযান পৃথিবীর সীমা ছাড়িয়ে পৌছে গেল মহাকাশে। আমি জুলভার্নের- এ জার্নি টু দ্যা মুন’ গল্পটিকে কাট ছাট করে চালিয়ে দেব। কেউ ধরতে পারবে না। অভিযাত্রীদের মধ্যে রয়েছে এক পাড় মাতাল। এক মুহূর্ত এ্যালকোহল না হলে তার চলে না। পকেট থেকে একটু পর পর বোতল বের করে চুমুক দিচ্ছে। তারপর তারা নামল চন্দ্র পৃষ্টে। চাঁদে হাঁটা খুব কষ্টকর। একেক জনের পা যেন দশ মণ ভারী হয়ে রয়েছে। উঠতেই চায় না।’
-স্টপ। লেখক চিৎকার দিয়ে উঠেন। আরে আগেতো সায়েন্স, তারপর না ফিকশন। মহাশূন্যে গিয়ে কেউ চুমুক দিয়ে তরল পান করছে এটাতো আমি বাপের জন্মে শুনিনি। কোন নভোযান যখন পৃথিবীর অভিকর্ষ বলকে অতিক্রম করে যাবে তখন মহাশূন্যে থাকা অবস্থায় ইচ্ছা করলেও বোতল থেকে উপুড় করে পানি ঢালা যাবে না। আর চন্দ্র পৃষ্টেও একই জিনিস ঘটবে। অভিকর্ষ বলের কারণে মানুষ তার ওজন হারাবে। অভিযাত্রীরা এমনিতেই নিজেদের ওজনশূন্য অনুভব করবেন। সেই জায়গায় পা দশ মণ ভারী হয়ে আছে-যত্তসব।
স্যার তাহলে আরেকটা শুনাই।’
আমাকে এবার মুক্তি দাও। আর তুমি অন্য লাইনে চেষ্টা কর।
স্যার প্লীজ, এই লাস্ট। এবারের কাহিনী অতি আধুনিক । মেট্রিক্স ছবিতো আপনি নিশ্য়ই দেখে থাকবেন। অনেকটা তার ছায়া অবলম্বনে লেখা। আমার গল্পের নায়ক পুলিশ অফিসার ক্রিমিনল ধরতে ছুটে বেরাচ্ছে। পরনে তার বিশেষ পোশাক। নীল প্যান্ট, নীচে লাল আন্ডারওয়্যার দেখা যাচ্ছে।
-এক মিনিট। প্যান্টের নীচে তুমি কিভাবে আন্ডারওয়্যার দেখতে পেলে।
এটা আধুনিক স্বচ্ছ পলিমারের প্যান্ট। আর আগের সুপারম্যান প্যান্টের উপরে আন্ডারওয়্যার পরত। কিন্তু আমার আধুনিক সুপার হিরো এত আবুল নয়। পাঠক যখন ভাবতে শুরু করে দিয়েছে পুলিশ ক্রিমিনাল ধাওয়া করছে এ আর এমন নতুন কি। তখনই আমি আসল চমক দেখাব। কারণ আমার হিরো কোন মানুষ নয়। মানুষের মত দেখতে একটি নবম স্কেলের রোবট।’
-থামো। তুমি এই মুহূর্তে তোমার স্ক্রিপ্ট নিয়ে এখান থেকে বিদায় হবে। তুমি আর কিছুক্ষণ থাকলে আমাকেও জুলভার্নের মত অকালে বিদায় নিতে হবে। নীল প্যান্টের নীচে, লাল আন্ডারওয়্যার। রঙ্গীন কাপড়ের নীচে অন্য কোন রঙ্গীন কাপড় কাল দেখাবে। আর তুমি দেখছ লাল।
তুমি এই কঠিন লাইনে চেষ্টা বাদ দিয়ে প্রথমে হালকা মানের লেখা দিয়ে শুরু কর। যেমন- বাচ্চাদের ছড়া। প্রেমের কবিতা ইত্যাদি।
ঠিক আছে স্যার, আমি পরবর্তীতে আরও ভাল স্ক্রীপ্ট নিয়ে আপনার কাছে আসব। আমাকে একজন ভাল সাই-ফাই লেখক হতেই হবে। ’
এক বছর পর। এই লেখক এখনও পুরো দমে তার লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন তিনি বাংলা সিনেমার কাহিনী লেখেন। এখানে যুক্তি-অযৌক্তিক এর কোন বালাই নেই।
নায়িকা রোড এ্যাকসিডেন্টে আহত। হাসপাতালে নেবার সময় নেই। রক্ত দরকার। নায়ক পকেট থেকে নেশা করার সিরিঞ্জ বের করে নিজের শরীরের রক্ত টেনে বের করে নায়িকার শরীরে ঢুকাতে শুরু করল। ব্লাড মেচিং এর কোন দরকার নেই। ভালোবাসার মাঝে রক্তের গ্রুপ কোন সমস্যা নয়। একটু পর নায়িকা চোখ মেলল। চৈত্রের ভর দুপুরে শুরু হল বৃষ্টি। আর তারসাথে বৃষ্টি ভেজা হেভী জোসীলা নাচ-গান।
নায়ক গেয়ে উঠল- নেশা আছে হেরোইনে, নেশা আছে প্যাথেডিনে
তারচাইতেও অধিক নেশা কইন্যা তোমার যৌবন সুধাতে…এ…এ…এ।
নায়িকা গেয়ে উঠল- আমার আঁচল উড়াইয়া নিল মরার বাতাসে
আমার যৌবন ভাসিয়া গেল বৃষ্টির জলে….এ….এ….এ।
এখানে একটি তিন ঘন্টা ছবি চলার মত কাহিনী হলেই চলে। আর কাহিনীরও তেমন কিছু নেই। কয়েকটি হিন্দী-ইংরেজী ছবির কাহিনী কাট-পেস্ট করে দিলেই চলে। বর্তমানে তিনি এখন জনপ্রিয় একজন কাহিনী লেখক।
** সমস্ত ঘটনা কাল্পনিক। বাস্তবতার সাথে এর মিল খুঁজতে চাইলে যে কেউ নিজ দায়িত্বে তা করতে পারেন।
(আইজাক আসিমভ একজন জাদরেল সায়েন্স ফিকশন লেখক। ফাউন্ডেশন’ উনার বিশ্ব বিখ্যাত একটি উপন্যাস। বইটি কিনেছিলাম বহু আগে কিন্তু আজ পর্যন্ত শেষ করে উঠতে পারিনি। সম্ভবত এর কঠিন সব টেকনিক্যাল ব্যাপার স্যাপারের কারণে।
আর্থার সি ক্লার্ক আরেকজন জাদরেল সায়েন্স ফিকশন লেখক। বর্তমানে বাস করছেন শ্রীলঙ্কায়। উনার বেশ কিছু চমৎকার গল্প রয়েছে কিন্তু বেশীরভাগ লেখাই আমার বোধগম্যের বাইরে। এটা লেখকের সমস্যা না, আমার সমস্যা।
সায়েন্স ফিকশন এর সব পাঠকতো আর সায়েন্স এর বিষয়গুলি খুব ভাল ভাবে বোঝেন এমন নয়। তাহলে এই লেখাগুলি কি সাধারণ পাঠকদের জন্য নয়?
জুল ভার্নের বেশীর ভাগ লেখাই আমি এক নিঃশ্বাসে পড়ে গিয়েছি। তিনি এডভেঞ্চার গল্পের ফাঁকে ফাঁকে সায়েন্স এর বিষয়গুলি বর্ণনা করে গেছেন। জাফর ইকবালের সায়েন্স ফিকশন বুঝতে খুব একটা কষ্ট করতে হয় না। সায়েন্স ফিকশন এর মধ্যে তিনি সাধারণ মানুষের মানবিক দিকগুলি ফুটিয়ে তুলেছেন। অথচ এই লেখাগুলিকে বিশ্ব বিখ্যাত সায়েন্স ফিকশনের সাথে এক কাতারে না ফেলে কোন উপায় নেই।
সম্ভবত বোদ্ধাদের মাঝে এই ধারণা চালু আছে যত কঠিন করে লেখা হবে সায়েন্স ফিকশন ততই উন্ততমানের হবে। পাঠক বুঝুক বা নাই বুঝুক। বাচ্চারা এটা তোমাদের জন্য নয়।)
-না।
ফাস্ট ইয়ার, সায়েন্স ডিপার্টমেন্ট। আমি আপনার সবগুলি ক্লাস নিয়মিত এটেন্ড করতাম।’
-হ্যা, এই বার চিনতে পেরেছি। আমার সবগুলি পরীক্ষায় তুমি নিয়মিত ফেল মারতে। তা এখন কি করছ?
এই স্যার, লেখালেখি করে পেট চালাই আরকি।’
-আচ্ছা। তাহলে কেউ যদি তোমার পেটের দায়িত্ব নিয়ে নেয় তবে তুমি আর লেখালেখি করবে না।
ঠিক তা নয় স্যার। আমার স্বপ্ন আপনার মত একজন জনপ্রিয় সাই-ফাই লেখক হওয়া।’
-সাই বাবার নাম শুনে ছিলাম। সাই-ফাই আবার কি জিনিস, ঠিক বুঝলাম না।
ও আল্লা! এটা আধুনিক সায়েন্স ফিকশন। সংক্ষেপে সাই-ফাই। আমার ধারণা সায়েন্সের ছাত্র হওয়াতে আমি এই লাইনে ভাল করব। তাই আপনার কাছে এসেছি একটি ভাল সায়েন্স ফিকশন নামাতে হলে কি কি লাগে তার টিপস জানতে।’
-তোমার ধারণা বাজারের ফর্দ লেখার মত যে কেউ চাইলেই লেখালেখি শুরু করে দিতে পারে।
স্যার আমার এই স্ক্রিপ্টটা পড়লেই আপনি বুঝতে পারবেন আমি কত জাদরেল লেখক।’
-ঠিক আছে তুমি রেখে যাও আমি সময় করে দেখব।
স্যার আমি আপনাকে একটু পড়ে শুনাই।
এতো ভালই মুসিবতে পড়া গেল।
এক দল অভিযাত্রী উত্তর মেরু অভিযানে বের হয়েছে। জুল ভার্নের-ক্যাপটেন হ্যাটেরাস’ নামে এ রকম একটি কাহিনী আছে। আমারটা আরও ভয়াবহ। টেম্পেরেচার-২৯৯ ডিগ্রী সেঃ। যেখানে শূন্য ডিগ্রীতে পানি বরফ হয়ে যায়। তাহলে বুঝেন অবস্থা। কঠিন অবস্থা। সবার অবস্থা কেরাসিন। সব চেয়ে বেশী সমস্যা হচ্ছে পেশাব করা নিয়ে। কেউ পেশাব করতে পারছে না। পেশাব জমে বরফ হয়ে গেছে। তারপর……..’
-থামো, আমরা ধারণা জুলভার্ন বেঁচে থাকলে তোমার এই কাহিনী শুনে নির্ঘাত সুইসাইড করার চেষ্টা করতেন। পদার্থ বিদ্যার সূত্র অনুযায়ী -২৭৩ ডিগ্রীর নীচে টেম্পেরেচার পৌছতে পারে না। সেখানে টেম্পেরেচার-২৯৯ ডিগ্রী সেঃ তুমি কোথায় পেলে।
স্যার, এবার তাহলে আরেকটা শুনাই। এবার একদল অভিযাত্রী মহাকাশ পর্যবেক্ষণে বের হয়েছে। নভোযান পৃথিবীর সীমা ছাড়িয়ে পৌছে গেল মহাকাশে। আমি জুলভার্নের- এ জার্নি টু দ্যা মুন’ গল্পটিকে কাট ছাট করে চালিয়ে দেব। কেউ ধরতে পারবে না। অভিযাত্রীদের মধ্যে রয়েছে এক পাড় মাতাল। এক মুহূর্ত এ্যালকোহল না হলে তার চলে না। পকেট থেকে একটু পর পর বোতল বের করে চুমুক দিচ্ছে। তারপর তারা নামল চন্দ্র পৃষ্টে। চাঁদে হাঁটা খুব কষ্টকর। একেক জনের পা যেন দশ মণ ভারী হয়ে রয়েছে। উঠতেই চায় না।’
-স্টপ। লেখক চিৎকার দিয়ে উঠেন। আরে আগেতো সায়েন্স, তারপর না ফিকশন। মহাশূন্যে গিয়ে কেউ চুমুক দিয়ে তরল পান করছে এটাতো আমি বাপের জন্মে শুনিনি। কোন নভোযান যখন পৃথিবীর অভিকর্ষ বলকে অতিক্রম করে যাবে তখন মহাশূন্যে থাকা অবস্থায় ইচ্ছা করলেও বোতল থেকে উপুড় করে পানি ঢালা যাবে না। আর চন্দ্র পৃষ্টেও একই জিনিস ঘটবে। অভিকর্ষ বলের কারণে মানুষ তার ওজন হারাবে। অভিযাত্রীরা এমনিতেই নিজেদের ওজনশূন্য অনুভব করবেন। সেই জায়গায় পা দশ মণ ভারী হয়ে আছে-যত্তসব।
স্যার তাহলে আরেকটা শুনাই।’
আমাকে এবার মুক্তি দাও। আর তুমি অন্য লাইনে চেষ্টা কর।
স্যার প্লীজ, এই লাস্ট। এবারের কাহিনী অতি আধুনিক । মেট্রিক্স ছবিতো আপনি নিশ্য়ই দেখে থাকবেন। অনেকটা তার ছায়া অবলম্বনে লেখা। আমার গল্পের নায়ক পুলিশ অফিসার ক্রিমিনল ধরতে ছুটে বেরাচ্ছে। পরনে তার বিশেষ পোশাক। নীল প্যান্ট, নীচে লাল আন্ডারওয়্যার দেখা যাচ্ছে।
-এক মিনিট। প্যান্টের নীচে তুমি কিভাবে আন্ডারওয়্যার দেখতে পেলে।
এটা আধুনিক স্বচ্ছ পলিমারের প্যান্ট। আর আগের সুপারম্যান প্যান্টের উপরে আন্ডারওয়্যার পরত। কিন্তু আমার আধুনিক সুপার হিরো এত আবুল নয়। পাঠক যখন ভাবতে শুরু করে দিয়েছে পুলিশ ক্রিমিনাল ধাওয়া করছে এ আর এমন নতুন কি। তখনই আমি আসল চমক দেখাব। কারণ আমার হিরো কোন মানুষ নয়। মানুষের মত দেখতে একটি নবম স্কেলের রোবট।’
-থামো। তুমি এই মুহূর্তে তোমার স্ক্রিপ্ট নিয়ে এখান থেকে বিদায় হবে। তুমি আর কিছুক্ষণ থাকলে আমাকেও জুলভার্নের মত অকালে বিদায় নিতে হবে। নীল প্যান্টের নীচে, লাল আন্ডারওয়্যার। রঙ্গীন কাপড়ের নীচে অন্য কোন রঙ্গীন কাপড় কাল দেখাবে। আর তুমি দেখছ লাল।
তুমি এই কঠিন লাইনে চেষ্টা বাদ দিয়ে প্রথমে হালকা মানের লেখা দিয়ে শুরু কর। যেমন- বাচ্চাদের ছড়া। প্রেমের কবিতা ইত্যাদি।
ঠিক আছে স্যার, আমি পরবর্তীতে আরও ভাল স্ক্রীপ্ট নিয়ে আপনার কাছে আসব। আমাকে একজন ভাল সাই-ফাই লেখক হতেই হবে। ’
এক বছর পর। এই লেখক এখনও পুরো দমে তার লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন তিনি বাংলা সিনেমার কাহিনী লেখেন। এখানে যুক্তি-অযৌক্তিক এর কোন বালাই নেই।
নায়িকা রোড এ্যাকসিডেন্টে আহত। হাসপাতালে নেবার সময় নেই। রক্ত দরকার। নায়ক পকেট থেকে নেশা করার সিরিঞ্জ বের করে নিজের শরীরের রক্ত টেনে বের করে নায়িকার শরীরে ঢুকাতে শুরু করল। ব্লাড মেচিং এর কোন দরকার নেই। ভালোবাসার মাঝে রক্তের গ্রুপ কোন সমস্যা নয়। একটু পর নায়িকা চোখ মেলল। চৈত্রের ভর দুপুরে শুরু হল বৃষ্টি। আর তারসাথে বৃষ্টি ভেজা হেভী জোসীলা নাচ-গান।
নায়ক গেয়ে উঠল- নেশা আছে হেরোইনে, নেশা আছে প্যাথেডিনে
তারচাইতেও অধিক নেশা কইন্যা তোমার যৌবন সুধাতে…এ…এ…এ।
নায়িকা গেয়ে উঠল- আমার আঁচল উড়াইয়া নিল মরার বাতাসে
আমার যৌবন ভাসিয়া গেল বৃষ্টির জলে….এ….এ….এ।
এখানে একটি তিন ঘন্টা ছবি চলার মত কাহিনী হলেই চলে। আর কাহিনীরও তেমন কিছু নেই। কয়েকটি হিন্দী-ইংরেজী ছবির কাহিনী কাট-পেস্ট করে দিলেই চলে। বর্তমানে তিনি এখন জনপ্রিয় একজন কাহিনী লেখক।
** সমস্ত ঘটনা কাল্পনিক। বাস্তবতার সাথে এর মিল খুঁজতে চাইলে যে কেউ নিজ দায়িত্বে তা করতে পারেন।
(আইজাক আসিমভ একজন জাদরেল সায়েন্স ফিকশন লেখক। ফাউন্ডেশন’ উনার বিশ্ব বিখ্যাত একটি উপন্যাস। বইটি কিনেছিলাম বহু আগে কিন্তু আজ পর্যন্ত শেষ করে উঠতে পারিনি। সম্ভবত এর কঠিন সব টেকনিক্যাল ব্যাপার স্যাপারের কারণে।
আর্থার সি ক্লার্ক আরেকজন জাদরেল সায়েন্স ফিকশন লেখক। বর্তমানে বাস করছেন শ্রীলঙ্কায়। উনার বেশ কিছু চমৎকার গল্প রয়েছে কিন্তু বেশীরভাগ লেখাই আমার বোধগম্যের বাইরে। এটা লেখকের সমস্যা না, আমার সমস্যা।
সায়েন্স ফিকশন এর সব পাঠকতো আর সায়েন্স এর বিষয়গুলি খুব ভাল ভাবে বোঝেন এমন নয়। তাহলে এই লেখাগুলি কি সাধারণ পাঠকদের জন্য নয়?
জুল ভার্নের বেশীর ভাগ লেখাই আমি এক নিঃশ্বাসে পড়ে গিয়েছি। তিনি এডভেঞ্চার গল্পের ফাঁকে ফাঁকে সায়েন্স এর বিষয়গুলি বর্ণনা করে গেছেন। জাফর ইকবালের সায়েন্স ফিকশন বুঝতে খুব একটা কষ্ট করতে হয় না। সায়েন্স ফিকশন এর মধ্যে তিনি সাধারণ মানুষের মানবিক দিকগুলি ফুটিয়ে তুলেছেন। অথচ এই লেখাগুলিকে বিশ্ব বিখ্যাত সায়েন্স ফিকশনের সাথে এক কাতারে না ফেলে কোন উপায় নেই।
সম্ভবত বোদ্ধাদের মাঝে এই ধারণা চালু আছে যত কঠিন করে লেখা হবে সায়েন্স ফিকশন ততই উন্ততমানের হবে। পাঠক বুঝুক বা নাই বুঝুক। বাচ্চারা এটা তোমাদের জন্য নয়।)
Monday, May 3, 2010
অন্ধকারের যাত্রী
তুহিন তুই বোস, তোর ট্রেন তিন ঘন্টা পর আসবে- আমি আসছি।'
আসলাম সেই যে উধাও হল এখন র্পযন্ত কোন খবর নেই।
তুহিনের মেজাজ ক্রমশ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এই ভুতূড়ে স্টশেনে ট্ট্রেনের জন্যে কতক্ষণ বসে থাকতে হবে কে জানে। কয়েক দিন ধরে এমনিতেই তার দম ফেলার সময় নেই। তারপরও আসলামের বোনের বিয়েতে এক দিনের ছুটি নিয়ে এই মফস্বলে আসতে হয়েছে। আজই ঢাকা ফিরে যেতে হবে।
এমনিতেই স্টেশনে তেমন লোকজন নেই তারপর মাথার উপরে টিমটিম করে যে স্বল্প পাওয়ারের বাল্ব জ্বলছে তাতে করে রাতের এই অন্ধকার তেমন দূর হচ্ছে না।
সবচেয়ে অদ্ভূত ব্যপার হচ্ছে স্টেশনের বেঞ্চে তার পাশে বাইশ-তেইশ বছরের এক মেয়ে বসে রয়েছে। সম্ভবত এই ট্রেনেরই যাত্রী হবে। প্রথমে তুহনি ভূত ভেবে ভয় পেয়েছিল। নাহ্ ভূতের পা উল্টা হয়। এর পা ঠিকই আছে।
ভয়ে ভয়ে তুহিন জিজ্ঞেস করে, আপনি কি ট্রেনের জন্যে অপেক্ষা করছেন? ট্ট্রেন তিন ঘন্টা লেট। আপনি একা আপনার সাথে কি আর কেউ নেই।
আপনার কোন অসুবিধা আছে। আর একা কই, আপনে আছেন না।
তুহনি কিছুই বুঝতে পারে না। এই মেয়ের সমস্যা কি।
কি ব্যপার আপনে এই ভাবে তাকাই আছেন কেন? কোন সময় মেয়ে মানুষ দেখেন নাই।
আপনি এ রকম বাজে ভাবে কথা বলছনে কেন?-তুহিন অবাক হয়।
আমি বাজে মেয়ে, এই জন্যে বাজে ভাবে কথা বলছি।
তুহিন হতভম্ব। কোন কথা বলতে পারে না।
আপনে কি করেন? - মেয়েটি একটু পর জানতে চায়।
আমি সফটওয়্যার বিক্রি করি। আর আপনি কি করেন?
আমি আত্না বিক্রি করি।
বুঝলাম না।
বেশী বুইঝা লাভ নাই। আপনের ঐ জিনিস কি ওয়্যার বিক্রি কইরা প্রতিদিন কত পান?
বিশ-পঞ্চাশ হাজার টাকার নীচে কোন সফটওয়্যার আমরা বানাই না।
মেয়েটির চোখে মুখে বিস্ময় ফুটে উঠে। জানেন আত্না বিক্রি কইরা প্রতিদিন আমি মাত্র ১০০-২০০ টাকা পাই।
আমি বুঝতে পারছি না আপনি কি বলছেন?
আপনে ভদ্রলোক তো তাই বুঝতে পারছনে না। আপনার মত ভদ্রলোকরা প্রতিদিন আমার কাছে আসে, তারার নোংরা হাত আমার গায়ে রাখে তারপর ঘন্টা হিসাব কইরা তারা আমার আত্না কিননা নেয়।
হঠাৎ করে তুহিনের মনে হয় চারদিকে এতো খোলা বাতাস তারপরও সে ঠিক মতো নি:শ্বাস নিতে পারছে না। অনেক্ষণ পর জিঞ্জেস করে-তুমি এরকম এক অন্ধকার জীবন কেন বেছে নিলে?
মেয়েটির মুখে বিষন্ন হাসি দেখা দেয়। কেউ কি আর ইচ্ছা কইরা এই জীবন বাইছা নেয়। সৃষ্টিকর্তা আমার ভাগ্যে এইটা রাখছেন। প্রতদিনি সকালে যখন আয়নায় নিজের চেহারা দেখি তখন খুব লজ্জা হয়। নিজেকে ঘৃণা করতে ইচ্ছা করে। তারপর আবার সব কিছু ভুইলা যাইতে হয়।
দুনিয়াতে খাওয়ার কষ্ট সবচাইতে বড় কষ্ট। এর জন্যেই আপনে সফটওয়্যার বেচেন, আর আমি বেচি আত্না। দুইটাই ব্যবসা। পার্থক্য শুধু, একটা আলো আর একটা আঁধারের।
সৃষ্টিকর্তাকে দোষারোপ করছ কেন? তিনি তো কারো অমঙ্গল চান না।
শুনছি পরকালে দোজখে একটা লোকের বার বার মৃত্যু ঘটব, তারপর তারে বার বার জীবিত কইরা শাস্তি দেয়া হইব। আর এইখানে প্রতদিনি আমার আত্নার মৃত্যু ঘটে। এইটা সৃষ্টিকর্তার কেমন বিচার।
তুহিন কোন কথা বলতে পারে না। নিজের ভেতরে এক ধরনের শূন্যতা অনুভব কর। এটা কি এই মেয়ের জন্য? সে জানে না।
দীর্ঘশ্বাস ফেলে তুহনি বলে- আমি যদি তোমাকে ঢাকা নিয়ে যেতে চাই তবে কি তুমি আমার সাথে যাবে? অন্তত চেষ্টা করে দেখতে দোষ কি, নতুন ভাবে আবার সব কিছু শুরু করা যায় কিনা।
ঢাকা তো আমি এই ট্রেনেই আপনার সাথে যাচ্ছি, কিন্তু তারপর আমি যাব আমার রাস্তায় আর আপনি আপনার পথে।
দেখ তুমি চাইলে আমি ঢাকাতে তোমার জন্যে কাজের ব্যবস্থা করে দিতে পারি।
উপরে তাকায় দেখেন ভোর হইয়া আসছে। ভোরের আলোয় রাতের অন্ধকারের কোন কথা আপনার মনে থাকব না। কারো থাকে না। মেয়েটির মুখে চাপা হাসি ফুটে উঠ।
ভোররে আলো আঁধারের মাঝে তুহিনের মনে হয়, এ রকম র্স্বগীয় হাসি সে অনেক দিন দেখেনি।
(** একবার একজনের মন্তব্যে আমি খুব আহত হয়েছিলাম। উনার কথা ছিল সেক্স ইন্ডাস্ট্রি বিলিয়ন ডলারের ইন্ডাস্ট্রি। এটাকে কখনই পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে না। সমাজে এর প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে। সুতরাং এটা বন্ধ করা নিয়ে অযথা লাফালাফি করার কোন দরকার নাই।
আমি উনাকে শুধু একটা কথাই বলেছিলাম- ধরুন আপনার পরিবারের কেউ সেখানে রয়েছে তারপরও কি আপনি এই কথাই বলবেন। তিনি আরেকটু হলেই আমার উপর ঝাপিয়ে পড়তেন।
ফ্রান্সে বোরকা পড়লে ১০০০ ডলার জরিমানা। সম্প্রাত বেলজিয়ামেও রাস্তায় বোরকা পড়ে বের হবার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বোরকার পড়ার কারণে নাকি নারীদের স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে। একজন মুসলিম মহিলা যদি তার ধর্মীয় আবেগ থেকে কোন শালীন পোষাক বেছে নেয় তাহলে সমস্যা কোথায়। এমনতো না যে সেখানে মহিলাদের জোর করে বোরকা পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। স্বোচ্ছায় তারা এটাকে বেছে নিয়েছেন। তাহলে স্বাধীনতা খর্বের প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে। আর যারা এই আইনটি পাশ করেছেন তারা এটা করার আগে কতজন মুসলিম মহিলার মতামত নিয়েছেন?
হায় সভ্য দেশ! সভ্য দেশের আইন! বোরকা পড়লে নারীদের স্বাধীনতা, অধিকার খর্ব হয়। আর বিলিয়ন ডলারের সেক্স ইন্ডাস্ট্রি থাকলে কোন সমস্য নাই। এটাতে নারীদের অধিকার খর্ব হচ্ছে না।)
আসলাম সেই যে উধাও হল এখন র্পযন্ত কোন খবর নেই।
তুহিনের মেজাজ ক্রমশ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এই ভুতূড়ে স্টশেনে ট্ট্রেনের জন্যে কতক্ষণ বসে থাকতে হবে কে জানে। কয়েক দিন ধরে এমনিতেই তার দম ফেলার সময় নেই। তারপরও আসলামের বোনের বিয়েতে এক দিনের ছুটি নিয়ে এই মফস্বলে আসতে হয়েছে। আজই ঢাকা ফিরে যেতে হবে।
এমনিতেই স্টেশনে তেমন লোকজন নেই তারপর মাথার উপরে টিমটিম করে যে স্বল্প পাওয়ারের বাল্ব জ্বলছে তাতে করে রাতের এই অন্ধকার তেমন দূর হচ্ছে না।
সবচেয়ে অদ্ভূত ব্যপার হচ্ছে স্টেশনের বেঞ্চে তার পাশে বাইশ-তেইশ বছরের এক মেয়ে বসে রয়েছে। সম্ভবত এই ট্রেনেরই যাত্রী হবে। প্রথমে তুহনি ভূত ভেবে ভয় পেয়েছিল। নাহ্ ভূতের পা উল্টা হয়। এর পা ঠিকই আছে।
ভয়ে ভয়ে তুহিন জিজ্ঞেস করে, আপনি কি ট্রেনের জন্যে অপেক্ষা করছেন? ট্ট্রেন তিন ঘন্টা লেট। আপনি একা আপনার সাথে কি আর কেউ নেই।
আপনার কোন অসুবিধা আছে। আর একা কই, আপনে আছেন না।
তুহনি কিছুই বুঝতে পারে না। এই মেয়ের সমস্যা কি।
কি ব্যপার আপনে এই ভাবে তাকাই আছেন কেন? কোন সময় মেয়ে মানুষ দেখেন নাই।
আপনি এ রকম বাজে ভাবে কথা বলছনে কেন?-তুহিন অবাক হয়।
আমি বাজে মেয়ে, এই জন্যে বাজে ভাবে কথা বলছি।
তুহিন হতভম্ব। কোন কথা বলতে পারে না।
আপনে কি করেন? - মেয়েটি একটু পর জানতে চায়।
আমি সফটওয়্যার বিক্রি করি। আর আপনি কি করেন?
আমি আত্না বিক্রি করি।
বুঝলাম না।
বেশী বুইঝা লাভ নাই। আপনের ঐ জিনিস কি ওয়্যার বিক্রি কইরা প্রতিদিন কত পান?
বিশ-পঞ্চাশ হাজার টাকার নীচে কোন সফটওয়্যার আমরা বানাই না।
মেয়েটির চোখে মুখে বিস্ময় ফুটে উঠে। জানেন আত্না বিক্রি কইরা প্রতিদিন আমি মাত্র ১০০-২০০ টাকা পাই।
আমি বুঝতে পারছি না আপনি কি বলছেন?
আপনে ভদ্রলোক তো তাই বুঝতে পারছনে না। আপনার মত ভদ্রলোকরা প্রতিদিন আমার কাছে আসে, তারার নোংরা হাত আমার গায়ে রাখে তারপর ঘন্টা হিসাব কইরা তারা আমার আত্না কিননা নেয়।
হঠাৎ করে তুহিনের মনে হয় চারদিকে এতো খোলা বাতাস তারপরও সে ঠিক মতো নি:শ্বাস নিতে পারছে না। অনেক্ষণ পর জিঞ্জেস করে-তুমি এরকম এক অন্ধকার জীবন কেন বেছে নিলে?
মেয়েটির মুখে বিষন্ন হাসি দেখা দেয়। কেউ কি আর ইচ্ছা কইরা এই জীবন বাইছা নেয়। সৃষ্টিকর্তা আমার ভাগ্যে এইটা রাখছেন। প্রতদিনি সকালে যখন আয়নায় নিজের চেহারা দেখি তখন খুব লজ্জা হয়। নিজেকে ঘৃণা করতে ইচ্ছা করে। তারপর আবার সব কিছু ভুইলা যাইতে হয়।
দুনিয়াতে খাওয়ার কষ্ট সবচাইতে বড় কষ্ট। এর জন্যেই আপনে সফটওয়্যার বেচেন, আর আমি বেচি আত্না। দুইটাই ব্যবসা। পার্থক্য শুধু, একটা আলো আর একটা আঁধারের।
সৃষ্টিকর্তাকে দোষারোপ করছ কেন? তিনি তো কারো অমঙ্গল চান না।
শুনছি পরকালে দোজখে একটা লোকের বার বার মৃত্যু ঘটব, তারপর তারে বার বার জীবিত কইরা শাস্তি দেয়া হইব। আর এইখানে প্রতদিনি আমার আত্নার মৃত্যু ঘটে। এইটা সৃষ্টিকর্তার কেমন বিচার।
তুহিন কোন কথা বলতে পারে না। নিজের ভেতরে এক ধরনের শূন্যতা অনুভব কর। এটা কি এই মেয়ের জন্য? সে জানে না।
দীর্ঘশ্বাস ফেলে তুহনি বলে- আমি যদি তোমাকে ঢাকা নিয়ে যেতে চাই তবে কি তুমি আমার সাথে যাবে? অন্তত চেষ্টা করে দেখতে দোষ কি, নতুন ভাবে আবার সব কিছু শুরু করা যায় কিনা।
ঢাকা তো আমি এই ট্রেনেই আপনার সাথে যাচ্ছি, কিন্তু তারপর আমি যাব আমার রাস্তায় আর আপনি আপনার পথে।
দেখ তুমি চাইলে আমি ঢাকাতে তোমার জন্যে কাজের ব্যবস্থা করে দিতে পারি।
উপরে তাকায় দেখেন ভোর হইয়া আসছে। ভোরের আলোয় রাতের অন্ধকারের কোন কথা আপনার মনে থাকব না। কারো থাকে না। মেয়েটির মুখে চাপা হাসি ফুটে উঠ।
ভোররে আলো আঁধারের মাঝে তুহিনের মনে হয়, এ রকম র্স্বগীয় হাসি সে অনেক দিন দেখেনি।
(** একবার একজনের মন্তব্যে আমি খুব আহত হয়েছিলাম। উনার কথা ছিল সেক্স ইন্ডাস্ট্রি বিলিয়ন ডলারের ইন্ডাস্ট্রি। এটাকে কখনই পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে না। সমাজে এর প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে। সুতরাং এটা বন্ধ করা নিয়ে অযথা লাফালাফি করার কোন দরকার নাই।
আমি উনাকে শুধু একটা কথাই বলেছিলাম- ধরুন আপনার পরিবারের কেউ সেখানে রয়েছে তারপরও কি আপনি এই কথাই বলবেন। তিনি আরেকটু হলেই আমার উপর ঝাপিয়ে পড়তেন।
ফ্রান্সে বোরকা পড়লে ১০০০ ডলার জরিমানা। সম্প্রাত বেলজিয়ামেও রাস্তায় বোরকা পড়ে বের হবার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বোরকার পড়ার কারণে নাকি নারীদের স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে। একজন মুসলিম মহিলা যদি তার ধর্মীয় আবেগ থেকে কোন শালীন পোষাক বেছে নেয় তাহলে সমস্যা কোথায়। এমনতো না যে সেখানে মহিলাদের জোর করে বোরকা পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। স্বোচ্ছায় তারা এটাকে বেছে নিয়েছেন। তাহলে স্বাধীনতা খর্বের প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে। আর যারা এই আইনটি পাশ করেছেন তারা এটা করার আগে কতজন মুসলিম মহিলার মতামত নিয়েছেন?
হায় সভ্য দেশ! সভ্য দেশের আইন! বোরকা পড়লে নারীদের স্বাধীনতা, অধিকার খর্ব হয়। আর বিলিয়ন ডলারের সেক্স ইন্ডাস্ট্রি থাকলে কোন সমস্য নাই। এটাতে নারীদের অধিকার খর্ব হচ্ছে না।)
Tuesday, April 20, 2010
জনপ্রিয় ব্লগার হবার টিপস !
‘স্যার, আমি কিভাবে আপনার মত একজন জাদরেল ব্লগার হতে পারব? অল্প দিনের মধ্যেই আপনার পেইজের হিটের সংখ্যা এক লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে। একটি গাধার আত্ন কাহিনী লিখে ব্লগে ছেড়ে দিলেও হিটের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়। শ দুয়েক মন্তব্য চলে আসে। বেশীর ভাগ ব্লগারের প্রিয় পোস্টের লিস্টে আপনার পোস্ট শোভা পায়। এটা কিভাবে সম্ভব হয়েছে?’
-তুমি কি অল্প সময়ের মধ্যে একজন জনপ্রিয় ব্লগার হতে চাও?
'জ্বী স্যার, কিন্তু আমি তো ভাল লেখতে জানি না।'
-তোমাদের নতুন ব্লগারদের এই একটি সমস্যা। চট করে একটি কমেন্টস করে বসবে। তোমাকে কে বলেছে যে ভাল ব্লগার হতে হলে ভাল লেখালেখি জানতে হবে। এই পদ্ধতিতে আগালে কয়েক বছর লেগে যাবে তোমার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে। আমার পলিসি হচ্ছে অল্প সময়ে অধিক মুনাফা অর্জন।
'স্যার, আমাকে তাহলে দয়া করে কিছু টিপস দিয়ে দেন।'
-১ম টিপস: লগ ইন টা জরুরী। আমি অনেক সময় টানা কয়েক দিন লগ ইন অবস্থায় থাকি। তবে মনে করো না যে লগ ইন করে থাকা মানে তোমাকে সারাক্ষণ কম্পিউটারের সামনে বসে থেকে খাওয়া ,বাথরুম সেখানেই সারতে হবে। লগ ইন করে তুমি হাওয়া হয়ে গেলে কেউতো আর তোমাকে দেখতে পাচ্ছে না। কিছু ব্লগ সাইটে ঢুকলে কিছু ব্লগারকে তুমি সব সময় লগ ইন অবস্থায় পাবে। তোমার মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন জাগছে এরা তাহলে ঘুমায় কখন।
-২য় টিপস: তোমার কয়েকটা নিক থাকতে হবে। মানুষের যেমন কয়েকটি নাম থাকে। অফিসে এক নাম, বাড়ীতে এক নাম, গার্লফ্রেন্ড এর কাছে এক নাম। একটি পোস্ট দিবে তারপর নিজের অন্য একটি নিক থেকে সেই পোস্টে মন্তব্য করবে। মন্তব্য আর কিছুই নয়: + পিলাস দিলাম। এখানে আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করলে হৃদয়ের টান বাড়ে। সবশেষে পোস্ট নিয়ে যাবে প্রিয় পোস্টের তালিকায়।
-৩য় টিপস: আস্তিক নাস্তিক বিষয়ক পোস্ট। আস্তিক বিষয়ক পোস্ট হলে ড. জাকির নায়েকের কিছু বক্তব্য তুলে ধরা যেতে পারে। ইউ টিউব থেকে নিয়ে আসলেই হবে।
আর নাস্তিক বিষয়ক পোস্ট হলে আরজ আলী মাতুব্বর এর নাস্তিকের ধর্ম কথা থেকে কিছু অংশ তুলে ধরতে হবে। জাস্ট, কপি পেস্ট করে দিলেই হবে।
-৪র্থ টিপস: ধর্ম বিষয়ক পোস্ট। বাজার থেকে অখ্যাত কিছু মৌলানাদের সম্পাদিত হাদিসের সংকলন সংগ্রহ করা যেতে পারে। এর মধ্য থেকে যে সব হাদিস নিয়ে বেশী বিতর্ক রয়েছে সেগুলি দেয়া যেতে পারে। যেমন- ইসলামে পর্দা প্রথা, নারীর অধিকার, মাজার প্রসঙ্গ ইত্যাদি।
-৫ম টিপস: ১৮ + কৌতুক। এ ব্যাপারে তোমার আদর্শ হতে পারেন সাবেক সাপ্তাহিক হায় হায় ম্যাগাজিনের সম্পাদক। তিনি সেক্সকে রীতিমতো শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যেতে সমর্থ হয়ে ছিলেন। আর না হলে নেটে এ্যাডাল্ট জোকস এরতো কোন কমতি নেই সেখান থেকে দুই একটা মেরে দিলে কেউ বুঝতে পারবে না।
'স্যার, আমি এভাবে জনপ্রিয় ব্লগার হতে চাই না। একজন ব্লগার এখানে লেখবে তার আনন্দের জন্য। একজন মমতা নিয়ে একটি পোস্ট দিবে অন্যরা সেখানে মন্তব্য করবে। ভাল লাগলে ভাল বলবে, নতুবা খারাপ লাগার কারণ ব্যাখা করবে। অবশ্যই তা শালীন এবং যৌক্তিক ভাবে।
জঙ্গলে একটি হরিণ সব সময় হিংস্র প্রাণীদের ভয়ে আতংকগ্রস্থ হয়ে থাকে। এই বুঝি কোন বাঘ তার ঘাড়ে লাফিয়ে পড়ল। অরণ্যের যে একটু নিজস্ব সৌন্দর্য রয়েছে একটি হরিণ কখনই তা উপলব্ধি করতে পারে না।
তেমনি আমাদের মত নতুন ব্লগাররা আপনার মত ব্লগারদের কারণেই এখানে লেখালেখি করতে ভয পায়। এই বুঝি কোন একটা পোস্ট বা মন্তব্যে আমি কোন ভুল করে ফেললাম। আর বিন্দুমাত্র দেরী না করে সবাই আমার উপর ঝাপিয়ে পড়ল। ব্লগের যে একটা নিজস্ব চমৎকার পরিবেশ রয়েছে আপনাদের কারণে আমরা তা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হই। আমরা ভুলে যাই প্রত্যেকেই আমরা এখানে মায়ার এক অদৃশ্য বন্ধনে আবদ্ধ। আবার এমন ব্লগারও এখানে আছেন যারা খুব সাধারণ একটি পোস্ট নিয়ে যে মন্তব্যটুকু করেন তা অনেক সময় হৃদয় ছুয়ে যায়। তাদের জন্যেই অনেক সময় লেখতে ইচ্ছে করে।'
-ব্যাটা ফাজিল তুই তাহলে এতক্ষণ আমার এত সময় নষ্ট করলি কেন। তুমি জান জিন্দা লাশ, মরা গাধা, জানের দুশমন- এগুলি কাদের নিক?
'না স্যার, আমি জানি না।'
-তুমি কি ছাতার ব্লগার হে। কিছুই দেখি জান না। এরা সবাই বড় বড় ব্লগার। এরা আমার পদ্ধতি অনুসরণ করে অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয় ব্লগারে পরিণত হয়েছে।
'স্যার, আপনি কি জানেন পরাণ ব্ন্ধু কার নিক?'
-না, আমি জানি না।
'আপনিও দেখি কিছুই জানেন না। এটা হচ্ছে আপনার পাশের ভাড়াটিয়ার নিক।'
-তো, এটার সাথে আমার কি সম্পর্ক?
'আপনি যখন ব্লগে আপনার রেটিং বাড়াতে ব্যস্ত থাকেন, তখন এই ভদ্রলোক আপনার বউ এর সাথে ডেটিং এ ব্যস্ত থাকে।'
** এই পোস্টটি রিপোস্ট। রিপোস্ট করার কারণটি বলছি। সকাল বেলা ফোনের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল। কাঁচা ঘুম ভাঙ্গাতে মেজাজ খুব খারাপ। ফোন করেছে প্রবাসী এক বন্ধু।
বন্ধুর হুংকার-তোরা কি শুরু করেছিস।
বেচারা মরুর দেশে পড়ে আছে। আরবরা এমনিতেই বাঙ্গালীদের দেখতে পারে না। নিশ্চয়ই কোন সমস্যা হয়েছে।
আমি উদ্বিগ্ন গলায় জানতে চাই-কি হয়েছে?
বন্ধু অনেক্ষণ হৈ চৈ করল। সারমর্ম যা বুঝলাম- জার্মানির আন্তর্জাতিক সম্প্রচার কেন্দ্র ডয়চে ভেলে বেস্ট অফ ব্লগস বা সেরা ব্লগ প্রতিযোগিতার ষষ্ঠ আসরের চূড়ান্ত বিজয়ীদের নাম ঘোষণার পর বিভিন্ন ব্লগে যে সব উল্টা পাল্টা মন্তব্য করা হচ্ছে তাই তার রাগের কারণ।
বন্ধুর পুনরায় হুংকার-আমি ভাবতাম আরবরা বর্বর অসভ্য। অথচ দেখ্ এখানে এই প্রতিযোগিতা নিয়ে তাদের কি উচ্ছাস। মিডিয়া থেকে শুরু করে সবাই ঝাপিয়ে পড়েছে কিভাবে আরবী ব্লগকে সব ভাষার ব্লগের মধ্যে শ্রেষ্ট করা যায়। প্রতিযোগিতায় কারা কারা আছে এটা তাদের কাছে মূখ্য নয়, মূখ্য হচ্ছে নিজের ভাষাটাকে যে কোন ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে হবে আমরাও পারি। আমি তাদের এই আবেগে মুগ্ধ।
আমি মিনমিন করে বলি-আমরাও উচ্ছাসিত।
আমার সাথে ফাজলামি করলে একটা চড় খাবি। তোদের ব্লগে যে সব আজে বাজে মন্তব্য করা হচ্ছে তোদের কি ধারণা আমরা প্রবাসীরা এইগুলি দেখে খুব আনন্দিত হচ্ছি। বিদেশীরা এমনিতেই আমাদের দেখতে পারে না। তারা যখন এইগুলি সম্পর্কে আমাদের কাছে জানতে চায় আমরা কোন উত্তর দিতে পারি না। এমনিতেই তারা আমাদের কাছে অনেক সময় জানতে চায় আমাদের দেশে ইলেকট্রিসিটি, খাবার পানি আছে কিনা। কারণ বাংলাদেশ থেকে সাহায্য চেয়ে তাদের দেশে যে সব ভিডিও পাঠানো হয় তাতে শুধু বন্যা আর জলোচ্ছাসে ঘর-দোর ভাসিয়ে নেয়ার ছবি। অথচ আমরা আবার তাদের কাছে বড় গলায় বলি বাঙ্গালী আবেগপ্রবণ জাতি। তোদের মোটা মাথায় কেন ঢুকছে না এটা করে তোরা প্রবাসী বাঙ্গালীদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলছিস। বাংলাকে তালিকাভুক্ত করতে দেরি হয়নি এরমধ্যেই তোদের ক্যাচাল শুরু হয়ে গেছে।
আমি তো তো করে বলার চেষ্টা করি-কিন্তু এদের দাবীওতো একেবারে উড়িয়ে দেয়ার মত না। তাদের মতে এমন অনেক ব্লগকে সিলেক্ট করা হয়েছে যেখানে ভিজিটর নাই, হিটের সংখ্যা নগন্য।
বন্ধু একটি গালি (সেন্সর) দিয়ে শুরু করল-সবচেয়ে বেশী হিট এবং ভিজিটরের আনাগোণা থাকে পর্ণো সাইটগুলিতে। ফাজিলের ফাজিল তোদের দরকার ছিল সেখান থেকে একটাকে বিজয়ী করা।
আমি পাল্টা যুক্তি হাতড়াতে শুরু করি। তার আগেই বন্ধুর রিসিভার আছড়ে ফেলার শব্দ আমি এত দূর থেকেও স্পষ্ট শুনতে পাই।
(এটি জাস্ট একটি ফান পোস্ট। একে গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করার কোনই প্রয়োজন নাই।)
-তুমি কি অল্প সময়ের মধ্যে একজন জনপ্রিয় ব্লগার হতে চাও?
'জ্বী স্যার, কিন্তু আমি তো ভাল লেখতে জানি না।'
-তোমাদের নতুন ব্লগারদের এই একটি সমস্যা। চট করে একটি কমেন্টস করে বসবে। তোমাকে কে বলেছে যে ভাল ব্লগার হতে হলে ভাল লেখালেখি জানতে হবে। এই পদ্ধতিতে আগালে কয়েক বছর লেগে যাবে তোমার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে। আমার পলিসি হচ্ছে অল্প সময়ে অধিক মুনাফা অর্জন।
'স্যার, আমাকে তাহলে দয়া করে কিছু টিপস দিয়ে দেন।'
-১ম টিপস: লগ ইন টা জরুরী। আমি অনেক সময় টানা কয়েক দিন লগ ইন অবস্থায় থাকি। তবে মনে করো না যে লগ ইন করে থাকা মানে তোমাকে সারাক্ষণ কম্পিউটারের সামনে বসে থেকে খাওয়া ,বাথরুম সেখানেই সারতে হবে। লগ ইন করে তুমি হাওয়া হয়ে গেলে কেউতো আর তোমাকে দেখতে পাচ্ছে না। কিছু ব্লগ সাইটে ঢুকলে কিছু ব্লগারকে তুমি সব সময় লগ ইন অবস্থায় পাবে। তোমার মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন জাগছে এরা তাহলে ঘুমায় কখন।
-২য় টিপস: তোমার কয়েকটা নিক থাকতে হবে। মানুষের যেমন কয়েকটি নাম থাকে। অফিসে এক নাম, বাড়ীতে এক নাম, গার্লফ্রেন্ড এর কাছে এক নাম। একটি পোস্ট দিবে তারপর নিজের অন্য একটি নিক থেকে সেই পোস্টে মন্তব্য করবে। মন্তব্য আর কিছুই নয়: + পিলাস দিলাম। এখানে আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করলে হৃদয়ের টান বাড়ে। সবশেষে পোস্ট নিয়ে যাবে প্রিয় পোস্টের তালিকায়।
-৩য় টিপস: আস্তিক নাস্তিক বিষয়ক পোস্ট। আস্তিক বিষয়ক পোস্ট হলে ড. জাকির নায়েকের কিছু বক্তব্য তুলে ধরা যেতে পারে। ইউ টিউব থেকে নিয়ে আসলেই হবে।
আর নাস্তিক বিষয়ক পোস্ট হলে আরজ আলী মাতুব্বর এর নাস্তিকের ধর্ম কথা থেকে কিছু অংশ তুলে ধরতে হবে। জাস্ট, কপি পেস্ট করে দিলেই হবে।
-৪র্থ টিপস: ধর্ম বিষয়ক পোস্ট। বাজার থেকে অখ্যাত কিছু মৌলানাদের সম্পাদিত হাদিসের সংকলন সংগ্রহ করা যেতে পারে। এর মধ্য থেকে যে সব হাদিস নিয়ে বেশী বিতর্ক রয়েছে সেগুলি দেয়া যেতে পারে। যেমন- ইসলামে পর্দা প্রথা, নারীর অধিকার, মাজার প্রসঙ্গ ইত্যাদি।
-৫ম টিপস: ১৮ + কৌতুক। এ ব্যাপারে তোমার আদর্শ হতে পারেন সাবেক সাপ্তাহিক হায় হায় ম্যাগাজিনের সম্পাদক। তিনি সেক্সকে রীতিমতো শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যেতে সমর্থ হয়ে ছিলেন। আর না হলে নেটে এ্যাডাল্ট জোকস এরতো কোন কমতি নেই সেখান থেকে দুই একটা মেরে দিলে কেউ বুঝতে পারবে না।
'স্যার, আমি এভাবে জনপ্রিয় ব্লগার হতে চাই না। একজন ব্লগার এখানে লেখবে তার আনন্দের জন্য। একজন মমতা নিয়ে একটি পোস্ট দিবে অন্যরা সেখানে মন্তব্য করবে। ভাল লাগলে ভাল বলবে, নতুবা খারাপ লাগার কারণ ব্যাখা করবে। অবশ্যই তা শালীন এবং যৌক্তিক ভাবে।
জঙ্গলে একটি হরিণ সব সময় হিংস্র প্রাণীদের ভয়ে আতংকগ্রস্থ হয়ে থাকে। এই বুঝি কোন বাঘ তার ঘাড়ে লাফিয়ে পড়ল। অরণ্যের যে একটু নিজস্ব সৌন্দর্য রয়েছে একটি হরিণ কখনই তা উপলব্ধি করতে পারে না।
তেমনি আমাদের মত নতুন ব্লগাররা আপনার মত ব্লগারদের কারণেই এখানে লেখালেখি করতে ভয পায়। এই বুঝি কোন একটা পোস্ট বা মন্তব্যে আমি কোন ভুল করে ফেললাম। আর বিন্দুমাত্র দেরী না করে সবাই আমার উপর ঝাপিয়ে পড়ল। ব্লগের যে একটা নিজস্ব চমৎকার পরিবেশ রয়েছে আপনাদের কারণে আমরা তা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হই। আমরা ভুলে যাই প্রত্যেকেই আমরা এখানে মায়ার এক অদৃশ্য বন্ধনে আবদ্ধ। আবার এমন ব্লগারও এখানে আছেন যারা খুব সাধারণ একটি পোস্ট নিয়ে যে মন্তব্যটুকু করেন তা অনেক সময় হৃদয় ছুয়ে যায়। তাদের জন্যেই অনেক সময় লেখতে ইচ্ছে করে।'
-ব্যাটা ফাজিল তুই তাহলে এতক্ষণ আমার এত সময় নষ্ট করলি কেন। তুমি জান জিন্দা লাশ, মরা গাধা, জানের দুশমন- এগুলি কাদের নিক?
'না স্যার, আমি জানি না।'
-তুমি কি ছাতার ব্লগার হে। কিছুই দেখি জান না। এরা সবাই বড় বড় ব্লগার। এরা আমার পদ্ধতি অনুসরণ করে অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয় ব্লগারে পরিণত হয়েছে।
'স্যার, আপনি কি জানেন পরাণ ব্ন্ধু কার নিক?'
-না, আমি জানি না।
'আপনিও দেখি কিছুই জানেন না। এটা হচ্ছে আপনার পাশের ভাড়াটিয়ার নিক।'
-তো, এটার সাথে আমার কি সম্পর্ক?
'আপনি যখন ব্লগে আপনার রেটিং বাড়াতে ব্যস্ত থাকেন, তখন এই ভদ্রলোক আপনার বউ এর সাথে ডেটিং এ ব্যস্ত থাকে।'
** এই পোস্টটি রিপোস্ট। রিপোস্ট করার কারণটি বলছি। সকাল বেলা ফোনের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল। কাঁচা ঘুম ভাঙ্গাতে মেজাজ খুব খারাপ। ফোন করেছে প্রবাসী এক বন্ধু।
বন্ধুর হুংকার-তোরা কি শুরু করেছিস।
বেচারা মরুর দেশে পড়ে আছে। আরবরা এমনিতেই বাঙ্গালীদের দেখতে পারে না। নিশ্চয়ই কোন সমস্যা হয়েছে।
আমি উদ্বিগ্ন গলায় জানতে চাই-কি হয়েছে?
বন্ধু অনেক্ষণ হৈ চৈ করল। সারমর্ম যা বুঝলাম- জার্মানির আন্তর্জাতিক সম্প্রচার কেন্দ্র ডয়চে ভেলে বেস্ট অফ ব্লগস বা সেরা ব্লগ প্রতিযোগিতার ষষ্ঠ আসরের চূড়ান্ত বিজয়ীদের নাম ঘোষণার পর বিভিন্ন ব্লগে যে সব উল্টা পাল্টা মন্তব্য করা হচ্ছে তাই তার রাগের কারণ।
বন্ধুর পুনরায় হুংকার-আমি ভাবতাম আরবরা বর্বর অসভ্য। অথচ দেখ্ এখানে এই প্রতিযোগিতা নিয়ে তাদের কি উচ্ছাস। মিডিয়া থেকে শুরু করে সবাই ঝাপিয়ে পড়েছে কিভাবে আরবী ব্লগকে সব ভাষার ব্লগের মধ্যে শ্রেষ্ট করা যায়। প্রতিযোগিতায় কারা কারা আছে এটা তাদের কাছে মূখ্য নয়, মূখ্য হচ্ছে নিজের ভাষাটাকে যে কোন ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে হবে আমরাও পারি। আমি তাদের এই আবেগে মুগ্ধ।
আমি মিনমিন করে বলি-আমরাও উচ্ছাসিত।
আমার সাথে ফাজলামি করলে একটা চড় খাবি। তোদের ব্লগে যে সব আজে বাজে মন্তব্য করা হচ্ছে তোদের কি ধারণা আমরা প্রবাসীরা এইগুলি দেখে খুব আনন্দিত হচ্ছি। বিদেশীরা এমনিতেই আমাদের দেখতে পারে না। তারা যখন এইগুলি সম্পর্কে আমাদের কাছে জানতে চায় আমরা কোন উত্তর দিতে পারি না। এমনিতেই তারা আমাদের কাছে অনেক সময় জানতে চায় আমাদের দেশে ইলেকট্রিসিটি, খাবার পানি আছে কিনা। কারণ বাংলাদেশ থেকে সাহায্য চেয়ে তাদের দেশে যে সব ভিডিও পাঠানো হয় তাতে শুধু বন্যা আর জলোচ্ছাসে ঘর-দোর ভাসিয়ে নেয়ার ছবি। অথচ আমরা আবার তাদের কাছে বড় গলায় বলি বাঙ্গালী আবেগপ্রবণ জাতি। তোদের মোটা মাথায় কেন ঢুকছে না এটা করে তোরা প্রবাসী বাঙ্গালীদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলছিস। বাংলাকে তালিকাভুক্ত করতে দেরি হয়নি এরমধ্যেই তোদের ক্যাচাল শুরু হয়ে গেছে।
আমি তো তো করে বলার চেষ্টা করি-কিন্তু এদের দাবীওতো একেবারে উড়িয়ে দেয়ার মত না। তাদের মতে এমন অনেক ব্লগকে সিলেক্ট করা হয়েছে যেখানে ভিজিটর নাই, হিটের সংখ্যা নগন্য।
বন্ধু একটি গালি (সেন্সর) দিয়ে শুরু করল-সবচেয়ে বেশী হিট এবং ভিজিটরের আনাগোণা থাকে পর্ণো সাইটগুলিতে। ফাজিলের ফাজিল তোদের দরকার ছিল সেখান থেকে একটাকে বিজয়ী করা।
আমি পাল্টা যুক্তি হাতড়াতে শুরু করি। তার আগেই বন্ধুর রিসিভার আছড়ে ফেলার শব্দ আমি এত দূর থেকেও স্পষ্ট শুনতে পাই।
(এটি জাস্ট একটি ফান পোস্ট। একে গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করার কোনই প্রয়োজন নাই।)
Saturday, April 17, 2010
শ্রেষ্ঠ বাংলা ব্লগ এবং কিছু কথা।
'কি করা হয়?'
-কিছু করা হয় না।
'এইটা কেমন কথা বললা। একজন ঝাড়ুদারওতো কিছু না কিছু করে। ঝাড়ু দিয়া আবর্জনা দূর করে।'
-আমি ব্লগিং করি।
'এইটা আবার কোন ধান্দাবাজি।'
-আমি লিখি।
'কোন পত্রিকায়?'
-কোন পত্রিকায় না।
'তাইলে কি বাজারের ফর্দ লেখ।'
-ঐ যে বললাম। আমি ব্লগে লেখি।
'বুঝাইয়া বল।'
-ব্লগ হচ্ছে একটি ইন্টারনেট ভিত্তিক সাইট। যেখানে সবাই তাদের চিন্তা ভাবনা শেয়ার করতে পারে।
'কেমন টাকা পয়সা দেয়।'
-কোন টাকা পয়সা দেয় না।
'তাইলে এখানে সময় নষ্ট করার দরকার কি। বাসে কান পাকার ওষুধ বিক্রি করলেওতো কিছু পয়সা কঁড়ি পাওয়া যায়।'
-এখানে আমরা নিজের আনন্দের জন্য লিখি।
'ভাল। পেট খালি থাকলেও যে আনন্দ করা যায় জানা ছিল না।
তা কি লেখা হয়। নতুন কোন ছবি মুক্তি পাইল। কোন নায়িকা কোন নায়কের সাথে পলায়ন করিল।'
-কোন নির্ধারিত একটি বিষয়ের উপরে এখানে লেখা হয় না। দৈনন্দিন ঘটনাবলি থেকে শুরু করে এমন কোন বিষয় নাই যা নিয়ে এখানে আলোচনা করা হয় না।
'তাইলে পত্রিকা আর নিউজ চ্যানেলগুলি কি বইসা বইসা মাছি মারব।'
-আপনি পত্রিকায় কোন খবর পরদিন সকালে জানতে পারছেন। আর টিভি চ্যানেলের কোন খবরের তাৎক্ষণিক কোন প্রত্রিক্রিয়া আপনি জানাতে পারছেন না। কিন্তু ব্লগে এটা সম্ভব। আপনি প্রতি মুহূর্তে বিভিন্ন ঘটনাবলি জানতে পারছেন এবং সাথে সাথে আমরা আমাদের প্রত্রিক্রিয়া জানাতে পারছি।
'ভাল। কিন্তু বিনা পারিশ্রমিকে এইসব কইরা লাভ কি।'
-এটা একটা ভার্চুয়াল জগত। এখানে আমরা কেউ কাউকে চিনি না। তারপরও সবাই এক মায়ার অদৃশ্য বাধনে বাঁধা। মনে হয় হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যাবে। কি দেশ থেকে কি বিদেশ থেকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একজন আরেক জনের সাথে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ি। এই ঝগড়া করছি আবার পরক্ষণেই মমতামাখা হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি। এই অনুভূতিকে কোন কিছুর সাথে তুলনা করা যাবে না। এ অনেকটা বর্ষার প্রথম ভেসে আসা ভেজা মাটির গন্ধের মত। বৃষ্টিতে ভেজা কদম ফুলের স্পর্শ। ছেলেবেলার মত বৃষ্টির পানিতে ভাসানো কাগজের নৌকার খেলা। আকাশে ভেসে বেড়ানো মেঘের খেলা। সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের সময় মায়াবী আলোর খেলা।
'ব্যাস ব্যাস আর বলতে হবে না। বুঝাই যাচ্ছে অনেক খেলাধুলা হয় এখানে। ঠিক আছে চালাই যাও। তোমার জন্য বিনা পয়সায় উপদেশ হচ্ছে-যতই তর্ক বির্তক কর না কেন সবার আগে মানুষকে শ্রদ্ধা করতে শিখ। মানুষকে ভালবাস তার মতামতকে সন্মান কর। না হলে কখনই একজন ভাল ব্লগার, সর্বোপরি একজন ভাল মানুষ হতে পারবা না।'
** বেস্ট অফ ব্লগস বা সেরা ব্লগ প্রতিযোগিতার ষষ্ঠ আসরের চূড়ান্ত বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করলো জার্মানির আন্তর্জাতিক সম্প্রচার কেন্দ্র ডয়চে ভেলে৷ যাতে আলী মাহমেদ-এর ব্লগ উঠে এলো শ্রেষ্ঠ বাংলা ব্লগ হিসেবে৷
অভিনন্দন এই প্রতিযোগিতার সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে। যারা অংশগ্রহণ করেছেন। যারা ভালবাসার ভোট দিয়েছেন। আমি এই প্রতিযোগিতা সম্পর্কে জানতে পারি অনেক পরে। সম্ভবত আরও ব্যাপক প্রচারনার দরকার ছিল। মনিটরের পর্দায় অন্যান্য ভাষার সাথে যখন আমার বাংলা ভাষাকে ধ্রুব তরার মত জ্বল জ্বল করে জ্বলতে দেখি তখন কি এক অজানা আনন্দে বুক ভরে আসে।
একটা জিনিস আমাকে খুব আহত করছে। বিভিন্ন ব্লগে এই প্রতিযোগিতা নিয়ে কিছু ব্লগার বিরূপ মন্তব্য করছেন। এটা করে এইসব ব্লগারদের যারা ভোট দিয়েছেন তাদের ভালবাসাকে অসন্মান করা হচ্ছে। কে কোন দলের, কে কোন সাইটে লেখেন এইসব দেখেতো আর আমরা তাদের ভোট করিনি। আমার বাংলা ভাষা বিশ্বের অন্যান্য ভাষার সাথে প্রতিযোগিতা করছে এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় কথা।
এভারেস্টের চূড়ায় অন্য দেশের পতাকার সাথে আমার দেশের পতাকাও উড়ছে। পতাকা যে বাঁশের মাথায় বাঁধা সেটা কোন ধরণের বাঁশ এটাতো আমাদের দেখার দেরকার নাই। যিনি এই পতাকা সেখানে নিয়ে গেছেন তিনি কি ঘোড়া না গাধায় চড়ে হিমালয় পাড়ি দিয়েছেন এটা নিয়েতো বিতর্ক করার কোন প্রয়োজন দেখি না। যে কাজটা আমি করতে পারিনি সেটা আরেকজন করে দেখিয়ে দিয়েছেন। অন্য দেশের পতাকা নিয়েতো কোন বিতর্ক নাই। তবে সমস্ত বিতর্ক আমার দেশের পতাকা নিয়ে কেন। সব দেশের পতাকার সাথে আমার দেশের পতাকাও সমান তালে উড়ছে এরচেয়ে বড় আনন্দের আর কি হতে পারে।
Monday, April 5, 2010
টোব্যাকো
বিগত অনেক বছর যাবত প্রতি বছর বাংলাদেশে সর্ব্বেচ্চ ভ্যাটদাতা কোম্পানীর দুর্লভ সন্মান লাভ করে একটি বহুজাতিক টোব্যাকো কোম্পানী। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় এই সব কোম্পানীগুলিই বোধহয় দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে। এই ভ্যাটের টাকাটা আসলে কে দিচ্ছে ঐ কোম্পানী না কি এই টাকাটা জনগণের পকেট থেকে কেটে রাখা হচ্ছে। প্রতি শলাকা সিগারেটের জন্য সরকারকে যে ভ্যাট দিতে হয় তা কোম্পানী কনজুমারদের কাছ থেকে আদায় করে নিচ্ছে।
১. জাতীয় আয়ের এক শতাংশ ব্যায় হচ্ছে সিগারেটের পেছনে।
২. দেশে প্রতি বছর ধুমপান জনিত বিভিন্ন রোগে মারা যায় প্রায় ৫৭,০০০ জন। আরও প্রায় ২ লক্ষ লোক বিভিন্ন ধরণের রোগে আক্রান্ত হয়।
৩. যত টাকা সরকারের রাজস্ব আদায় হচ্ছে তার চেয়ে বেশী টাকা চলে যাচ্ছে চিকিৎসা খাতের পেছনে।
৪. তামাক ব্যবহারের কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার পেছনে খরচ হয়ে বছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকারও বেশী।
৫. তামাক থেকে সরকার যে রাজস্ব পায় তা বাদ দিলে বছরে বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের ফলে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
৬. বাংলাদেশে ১৯৯৪-১৯৯৫ সালে দেশে উৎপাদিত সিগারেটের পরিমাণ ছিল ১৬০০ কোটি শলাকা যা ২০০৯-২০১০ সাল নাগাদ বেড়ে দাঁড়ায় ২৫০০ কোটি শলাকা।
৭. জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কতৃপক্ষের সূত্র অনুযাযী দেশে মোট জনসংখ্যার ৪৩.৩ শতাংশ তামাক ব্যবহার করে।
৮. তামাক চাষে ব্যবহার হয় ৪৯ হাজার হেক্টর জমি। উৎপাদিত হয় ৯৮ হাজার টন তামাক। বেসরকারী হিসাবে এর পরিমাণ অন্তত আরও তিনগুণ বেমী।
৯. একজন ধূমপাযী গড়ে প্রতিদিন ৫টি সিগারেট খান। সেই হিসাবে একজন ধূমপায়ী সিগারেটের পেছনে মাসে খরচ করেন গড়ে ৩৭৮ টাকা।
১০. রংপুর, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইলসহ দেশের অন্তত বিশটি জেলায় তামাক চাষ হচ্ছে। বিভিন্ন বিড়ি ও সিগারেট কোম্পানী চাষীদের বিনামূল্যে বীজ, সার, কিটনাশক দিয়ে সহায়তা করছে। অন্য যে কোন ফসলের চেয়ে কৃষকের তামাক চাষে তিনগুণ বেশী লাভ হয়।
১১. বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ এ সিনিয়র প্রজেক্ট অফিসার আমিনুল ইসলাম সুজন বলেন, বাংলাদেশে তামাক চাষের প্রসারের ফলে শাক-সবজির আবাদ কমায় এসব নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে। বৃহত্তর রংপুরে মঙ্গার জন্য তামাক চাষ দায়ী উল্লেখ করে তিনি বলেন-অর্তনীতিতে বিরুপ প্রভাব ফেলছে তামাক।
১২. তামাক চাষীরা থাকে সবচেয়ে ঝুকির মধ্যে। ত্বকের ক্যান্সার এর মধ্যে অন্যতম। সিগারেট কোম্পানীগুলি বাড়তি মুনাফার লোভ দেখিয়ে অন্য ফসলের পরিবর্তে চাষীদের তামাক চাষে উৎসাহিত করছে।
১৩. সিগারেটে মোট ৩০০০ এরও উপরে বিভিন্ন ধরণের ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে।
১৪. ধূমপান হার্ট এ্যাটাক, স্ট্রোক, ফুসফুস ক্যান্সার, মুখের ক্যান্সার, ব্রংকাইটিস, এর ঝুকি বাড়ায়। ধূমপায়ীদের তামাকের ধোয়ার আশে পাশে যারা থাকে তারাও সমান ঝুকির মধ্যে থাকে।
১৫. টোব্যাকো কোম্পানীগুলির মূল টার্গেট হচ্ছে ৩০ বছরের নীচের ধূমপায়ীরা। কারণ এরা হবে ভবিষ্যতের দীর্ঘমেয়াদী সম্পন্ন ভোক্তা।
১৬. World Health Organization (WHO) এর মতে ২০০৪ সাল নাগাদ বিশ্বে ধূমপানজনিত কারণে ৫.৪ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু ঘটেছে। এই আনুপাতিক হারে বিশ শতকের মধ্যে ১০০ মিলিয়ন লোক ধূমপানজনিত কারণে মারা যাবে।
১৭. ২০০০ সাল পর্যন্ত সারা বিশ্বে ধূমপায়ীর সংখ্যা ছিল ১.২২ বিলিয়ন। ২০১০ সাল নাগাদ তা বেড়ে দাঁড়ায় ১.৪৫ বিলিয়ন। ২০২৫ সাল নাগাদ তা বেড়ে দাঁড়াবে ১.৯ বিলিয়ন।
১৮. ২০০২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারা বিশ্বে শতকরা ২৫ ভাগ কিশোর (যাদের বয়স ১৩ থেকে ১৫ বছর) ধূমপানে আসক্ত। ৮০০০০ থেকে ১০০০০০ শিশু প্রতিদিন ধূমপানে আসক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে অর্ধেক শিশু এশিয়ান। এর মধ্যে অর্ধেক হচ্ছে আগামী ২০ থেকে ৩০ বছরের জন্য একেক জন ভোক্তা।
১৯. WHO এর মতে ২০০৪ সালে ৫৮.৮ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু ঘটে এর মধ্যে ৫.৪ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু হয় তামাক জনিত কারণে।
২০. প্রচারণার পেছনে সিগারেট কোম্পানীগুলি প্রতি বছর ১২.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে থাকে। এর বেশীর ভাগই ব্যয় হয়ে থাকে তৃতীয় বিম্বের দেশগুলিতে যেখানে টোব্যাকো সংক্রান্ত আইনগুলি তুলনামূলকভাবে শিথিল।
২১. একজন ধূমপায়ী পুরুষ এর জীবন থেকে গড়ে ১৩.২ বছর এবং একজন ধূমপায়ী মহিলার জীবন থেকে গড়ে ১৪.৫ বছর আয়ু হারিয়ে যাচ্ছে।
২২. বিশ্বব্যাংক পরিচালিত এক জরিযপ দেখা ১০ শতাংশ হারে তামাকের মূল্য বৃদ্ধির ফলে উন্নত বিশ্বে তামাকের ব্যবহার চার শতাংশ কমে। আর বাংলাদেমের মত উন্নয়শীল দেশে তামাকের ব্যবহার কমে ৮ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিসের ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. এম মোস্তফা জামান এর মতে দেশে তামাকের ব্যবহার বাড়ার পেছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে অন্য দ্রব্যের তুলনায় বিড়ি, সিগারেটের দাম বৃদ্ধি না পাওয়া।
তথ্য ষূত্র: উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন পত্রিকা।
ছবি সূত্র: ইন্টারনেট।
১. জাতীয় আয়ের এক শতাংশ ব্যায় হচ্ছে সিগারেটের পেছনে।
২. দেশে প্রতি বছর ধুমপান জনিত বিভিন্ন রোগে মারা যায় প্রায় ৫৭,০০০ জন। আরও প্রায় ২ লক্ষ লোক বিভিন্ন ধরণের রোগে আক্রান্ত হয়।
৩. যত টাকা সরকারের রাজস্ব আদায় হচ্ছে তার চেয়ে বেশী টাকা চলে যাচ্ছে চিকিৎসা খাতের পেছনে।
৪. তামাক ব্যবহারের কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার পেছনে খরচ হয়ে বছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকারও বেশী।
৫. তামাক থেকে সরকার যে রাজস্ব পায় তা বাদ দিলে বছরে বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের ফলে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
৬. বাংলাদেশে ১৯৯৪-১৯৯৫ সালে দেশে উৎপাদিত সিগারেটের পরিমাণ ছিল ১৬০০ কোটি শলাকা যা ২০০৯-২০১০ সাল নাগাদ বেড়ে দাঁড়ায় ২৫০০ কোটি শলাকা।
৭. জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কতৃপক্ষের সূত্র অনুযাযী দেশে মোট জনসংখ্যার ৪৩.৩ শতাংশ তামাক ব্যবহার করে।
৮. তামাক চাষে ব্যবহার হয় ৪৯ হাজার হেক্টর জমি। উৎপাদিত হয় ৯৮ হাজার টন তামাক। বেসরকারী হিসাবে এর পরিমাণ অন্তত আরও তিনগুণ বেমী।
৯. একজন ধূমপাযী গড়ে প্রতিদিন ৫টি সিগারেট খান। সেই হিসাবে একজন ধূমপায়ী সিগারেটের পেছনে মাসে খরচ করেন গড়ে ৩৭৮ টাকা।
১০. রংপুর, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইলসহ দেশের অন্তত বিশটি জেলায় তামাক চাষ হচ্ছে। বিভিন্ন বিড়ি ও সিগারেট কোম্পানী চাষীদের বিনামূল্যে বীজ, সার, কিটনাশক দিয়ে সহায়তা করছে। অন্য যে কোন ফসলের চেয়ে কৃষকের তামাক চাষে তিনগুণ বেশী লাভ হয়।
১১. বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ এ সিনিয়র প্রজেক্ট অফিসার আমিনুল ইসলাম সুজন বলেন, বাংলাদেশে তামাক চাষের প্রসারের ফলে শাক-সবজির আবাদ কমায় এসব নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে। বৃহত্তর রংপুরে মঙ্গার জন্য তামাক চাষ দায়ী উল্লেখ করে তিনি বলেন-অর্তনীতিতে বিরুপ প্রভাব ফেলছে তামাক।
১২. তামাক চাষীরা থাকে সবচেয়ে ঝুকির মধ্যে। ত্বকের ক্যান্সার এর মধ্যে অন্যতম। সিগারেট কোম্পানীগুলি বাড়তি মুনাফার লোভ দেখিয়ে অন্য ফসলের পরিবর্তে চাষীদের তামাক চাষে উৎসাহিত করছে।
১৩. সিগারেটে মোট ৩০০০ এরও উপরে বিভিন্ন ধরণের ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে।
১৪. ধূমপান হার্ট এ্যাটাক, স্ট্রোক, ফুসফুস ক্যান্সার, মুখের ক্যান্সার, ব্রংকাইটিস, এর ঝুকি বাড়ায়। ধূমপায়ীদের তামাকের ধোয়ার আশে পাশে যারা থাকে তারাও সমান ঝুকির মধ্যে থাকে।
১৫. টোব্যাকো কোম্পানীগুলির মূল টার্গেট হচ্ছে ৩০ বছরের নীচের ধূমপায়ীরা। কারণ এরা হবে ভবিষ্যতের দীর্ঘমেয়াদী সম্পন্ন ভোক্তা।
১৬. World Health Organization (WHO) এর মতে ২০০৪ সাল নাগাদ বিশ্বে ধূমপানজনিত কারণে ৫.৪ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু ঘটেছে। এই আনুপাতিক হারে বিশ শতকের মধ্যে ১০০ মিলিয়ন লোক ধূমপানজনিত কারণে মারা যাবে।
১৭. ২০০০ সাল পর্যন্ত সারা বিশ্বে ধূমপায়ীর সংখ্যা ছিল ১.২২ বিলিয়ন। ২০১০ সাল নাগাদ তা বেড়ে দাঁড়ায় ১.৪৫ বিলিয়ন। ২০২৫ সাল নাগাদ তা বেড়ে দাঁড়াবে ১.৯ বিলিয়ন।
১৮. ২০০২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারা বিশ্বে শতকরা ২৫ ভাগ কিশোর (যাদের বয়স ১৩ থেকে ১৫ বছর) ধূমপানে আসক্ত। ৮০০০০ থেকে ১০০০০০ শিশু প্রতিদিন ধূমপানে আসক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে অর্ধেক শিশু এশিয়ান। এর মধ্যে অর্ধেক হচ্ছে আগামী ২০ থেকে ৩০ বছরের জন্য একেক জন ভোক্তা।
১৯. WHO এর মতে ২০০৪ সালে ৫৮.৮ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু ঘটে এর মধ্যে ৫.৪ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু হয় তামাক জনিত কারণে।
২০. প্রচারণার পেছনে সিগারেট কোম্পানীগুলি প্রতি বছর ১২.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে থাকে। এর বেশীর ভাগই ব্যয় হয়ে থাকে তৃতীয় বিম্বের দেশগুলিতে যেখানে টোব্যাকো সংক্রান্ত আইনগুলি তুলনামূলকভাবে শিথিল।
২১. একজন ধূমপায়ী পুরুষ এর জীবন থেকে গড়ে ১৩.২ বছর এবং একজন ধূমপায়ী মহিলার জীবন থেকে গড়ে ১৪.৫ বছর আয়ু হারিয়ে যাচ্ছে।
২২. বিশ্বব্যাংক পরিচালিত এক জরিযপ দেখা ১০ শতাংশ হারে তামাকের মূল্য বৃদ্ধির ফলে উন্নত বিশ্বে তামাকের ব্যবহার চার শতাংশ কমে। আর বাংলাদেমের মত উন্নয়শীল দেশে তামাকের ব্যবহার কমে ৮ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিসের ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. এম মোস্তফা জামান এর মতে দেশে তামাকের ব্যবহার বাড়ার পেছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে অন্য দ্রব্যের তুলনায় বিড়ি, সিগারেটের দাম বৃদ্ধি না পাওয়া।
তথ্য ষূত্র: উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন পত্রিকা।
ছবি সূত্র: ইন্টারনেট।
Sunday, April 4, 2010
আই.কিউ
ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া এক বাচ্চার মা গর্ব করে বলছেন- আমার বাচ্চা বংলা লেখা দেখলে জানতে চায়-মম এটা কি বাংলা।
বাবাও চোখ বড় বড় করে বলতে শুরু করেন-বাসায় আমরা বাচ্চাদের সামনে তেমন একটা বাংলা বলি না। ইংরেজীতে ভাল দখল না থাকার কারণে আমরা দিন দিন পিছিয়ে পড়ছি। ইংরেজী হচ্ছে অভিজাত একটি ভাষা। সারা পৃথিবী জুড়ে এর ব্যবহার। বাচ্চাদের ছোট বেলা থেকেই ইংরেজী শিক্ষা দিতে হবে। না হলে গোড়া দুর্বল থেকে যাবে।
এই মাথা মোটাদের আমি কোন ভাবেই বোঝাতে পারি না যে, ইংরেজী হচ্ছে আর দশটা ভাষার মতই বিদেশী একটি ভাষা। আগে নিজের মার্তৃ ভাষার চর্চা তারপর কারো যদি শখ থাকে তবে সে অন্য কোন বিদেশী ভাষার চর্চা করতে পারে। নিজের ভাষা না জেনে অন্য ভাষা বলার মধ্যে কোন গৌরবের ব্যাপার নাই।
বাংলাই সম্ভবত পৃথিবীর একমাত্র ভাষা যার জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছে। এবং ঐ দিনটিকে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা হিসেবে পালন করা হয়। ইংরেজরা দুইশত বছর এ দেশ শাসন করে গেছে। ফলে তাদের চিন্তাধারা এখনও আমাদের মাঝে রয়ে গেছে।
ডি.জে, ভি.জে, আর.জে এই জিনিসগুলি কি আমার বুঝতে অনেক দিন সময় লেগেছে। এরা বাংলা-ইংরেজী মিশিয়ে নতুন একটা ভাষার উদ্ভাবন করছে। হাই ফ্রেন্ডস, সো ভিউয়ারস, সো লিসেনারস কি যেন বলছিলাম.... কোন এক বিচিত্র কারণে কিছুক্ষণ এদের বকবক শুনলে আমার মাথা ভার হয়ে যায়। দুই চোখ আপনিই ঘুমে বুজে আসতে চায়।
আমাদের মাথায় কোন ভাবে ঢুকে গেছে ব্রিটিশ শিশুরা আমাদের বাচ্চাদের চেয়ে টলার, স্ট্রংগার, শার্পার (সম্ভবত বেশী হরলিক্স খাবার কারণে।)। এদের সব কিছু আমাদের অনুকরণ করে যেতে হবে। আমরা অপেক্ষায় আছি কখন আমাদের বাচ্চারা ব্রিটিশ শিশুদের মত হড়বড় করে ইংরেজী বলতে পারবে।
ব্রিটিশ শিশুদের আই.কিউ এর কিছু নমুনা-
ওয়ানপোল জরিপ সংস্থা অনলাইনে ব্রিটেনের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক হাজার শিক্ষার্থীর উপর জরিপ চালায়। জরিপের ফলাফল নিম্নরূপ:
১. প্রশ্ন: টেলিফোনের আবিস্কারক কে?
উত্তর: শতকরা দশ জনের উত্তর ছিল:
ক. রানী এলিজাবেথ।
খ. চার্লস ডারউইন।
গ. নোয়েল এন্ডমন্ডস।
২. প্রশ্ন: চন্দ্রপৃষ্টে প্রথম পা দেয়া ব্যক্তির নাম কি?
উত্তর: শতকরা বিশ জনের উত্তর ছিল:
ক. স্টার ওয়ারস সিনেমার প্রধান চরিত্র লুকে স্কাইওয়াকার।
খ. শিল্পপতি রিচার্ড ব্রানসন।
৩. প্রশ্ন: স্যার আইজাক নিউটন কি আবিস্কার করেছেন?
উত্তর: জরিপে অংশ নেয়া এক তৃতীয়াংশের উত্তর ছিল:
ক. স্যার আইজাক নিউটন আগুনের আবিস্কাররক।
জরিপে অংশ নেয়া ষোল শতাংশের উত্তর ছিল:
ক. স্যার আইজাক নিউটন ইন্টারনেটের আবিস্কারক।
ক. স্যার আইজাক নিউটন সৌর পদ্ধতি আবিস্কার করেছেন।
খ. স্যার আইজাক নিউটন আমেরিকা আবিস্কার করেছেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পক্ষে প্রচারণা চালানো বার্মিংহাম সায়েন্স সিটির ড. পাম ওয়াডেল বলেছেন, জরিপের কিছু ফলাফল হাস্যকর। শিশুরা বিজ্ঞানের হিরোদের চেয়ে সিনেমার হিরোদের বেশী চেনে। বিজ্ঞানীর পরিবর্তে এরা নামকরা গায়কদের ব্যাপারে আগ্রহী বেশী। মজার ব্যাপার হচ্ছে ৯ থেকে ১০ বছরের ৭০ শতাংশ শিশু আবার বিজ্ঞানে নোবেল পাওয়ার ব্যাপারে অনেক আগ্রহী। ১১ থেকে ১৫ বছরের শিশুদের মধ্যে এই হার আবার ৩৩ শতাংশ।
পাদ টিকা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একবার লন্ডন গেছেন। ইংল্যান্ডে প্রবাসী বাঙ্গালীদের মধ্যে কাড়াকাড়ি পড়ে গেছে কে কার আগে রবি ঠাকুরের সাথে দেখা করবে।
এক বাঙ্গালী যুবক দীর্ঘ আট বছর ধরে লন্ডনে ব্যারিস্টারী পড়ছে। পাশ আর করা হয়ে উঠেনি। এটা নিয়ে তার কোন মাথা ব্যাথাও নেই। কারণ তত দিনে সে ইংরেজদের আদব কায়দা ভালই রপ্ত কর নিয়েছে। সে আসল রবি ঠাকুরের সাথে দেখো করতে।
প্রথম সাক্ষাতেই সে উনার সাথে ইংরেজীতে কথাবার্তা বলা শুরু করে দেয়। এবং কথায় কথায় জানিয়ে দেয় দীর্ঘ দিন এদেশে থাকার কারণে বাংলা প্রায় সে ভুলেই গেছে তারচেয়ে ইংরেজীতে সে বেশী অভ্যস্ত।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যুবকের মুখের দিকে তাকিয়ে বলেন-বাঙ্গালীর ছেলে বাংলা বলতে ভুলে গেছ, এ কথা জানাবার আগে লজ্জা বোধ করা উচিত ছিল। কিন্তু তুমিতো দেখছি ইংরেজীটাও ভাল করে রপ্ত করতে পারনি।
** রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদাহরণ দেয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে-ব্রিটিশ সরকার একবার সিদ্ধান্ত নিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করা হোক। তখন সারা ভারতজুড়ে চলছিল ইংরেজ বিরোধী আন্দোলন। তাই রবি ঠাকুর ব্রিটিশদের কাছ থেকে এই উপাধি গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। তা না হলে আজকে আমাদের বলতে হত-স্যার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
তথ্য সূত্র: বিবিসি নিউজ।
বাবাও চোখ বড় বড় করে বলতে শুরু করেন-বাসায় আমরা বাচ্চাদের সামনে তেমন একটা বাংলা বলি না। ইংরেজীতে ভাল দখল না থাকার কারণে আমরা দিন দিন পিছিয়ে পড়ছি। ইংরেজী হচ্ছে অভিজাত একটি ভাষা। সারা পৃথিবী জুড়ে এর ব্যবহার। বাচ্চাদের ছোট বেলা থেকেই ইংরেজী শিক্ষা দিতে হবে। না হলে গোড়া দুর্বল থেকে যাবে।
এই মাথা মোটাদের আমি কোন ভাবেই বোঝাতে পারি না যে, ইংরেজী হচ্ছে আর দশটা ভাষার মতই বিদেশী একটি ভাষা। আগে নিজের মার্তৃ ভাষার চর্চা তারপর কারো যদি শখ থাকে তবে সে অন্য কোন বিদেশী ভাষার চর্চা করতে পারে। নিজের ভাষা না জেনে অন্য ভাষা বলার মধ্যে কোন গৌরবের ব্যাপার নাই।
বাংলাই সম্ভবত পৃথিবীর একমাত্র ভাষা যার জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছে। এবং ঐ দিনটিকে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা হিসেবে পালন করা হয়। ইংরেজরা দুইশত বছর এ দেশ শাসন করে গেছে। ফলে তাদের চিন্তাধারা এখনও আমাদের মাঝে রয়ে গেছে।
ডি.জে, ভি.জে, আর.জে এই জিনিসগুলি কি আমার বুঝতে অনেক দিন সময় লেগেছে। এরা বাংলা-ইংরেজী মিশিয়ে নতুন একটা ভাষার উদ্ভাবন করছে। হাই ফ্রেন্ডস, সো ভিউয়ারস, সো লিসেনারস কি যেন বলছিলাম.... কোন এক বিচিত্র কারণে কিছুক্ষণ এদের বকবক শুনলে আমার মাথা ভার হয়ে যায়। দুই চোখ আপনিই ঘুমে বুজে আসতে চায়।
আমাদের মাথায় কোন ভাবে ঢুকে গেছে ব্রিটিশ শিশুরা আমাদের বাচ্চাদের চেয়ে টলার, স্ট্রংগার, শার্পার (সম্ভবত বেশী হরলিক্স খাবার কারণে।)। এদের সব কিছু আমাদের অনুকরণ করে যেতে হবে। আমরা অপেক্ষায় আছি কখন আমাদের বাচ্চারা ব্রিটিশ শিশুদের মত হড়বড় করে ইংরেজী বলতে পারবে।
ব্রিটিশ শিশুদের আই.কিউ এর কিছু নমুনা-
ওয়ানপোল জরিপ সংস্থা অনলাইনে ব্রিটেনের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক হাজার শিক্ষার্থীর উপর জরিপ চালায়। জরিপের ফলাফল নিম্নরূপ:
১. প্রশ্ন: টেলিফোনের আবিস্কারক কে?
উত্তর: শতকরা দশ জনের উত্তর ছিল:
ক. রানী এলিজাবেথ।
খ. চার্লস ডারউইন।
গ. নোয়েল এন্ডমন্ডস।
২. প্রশ্ন: চন্দ্রপৃষ্টে প্রথম পা দেয়া ব্যক্তির নাম কি?
উত্তর: শতকরা বিশ জনের উত্তর ছিল:
ক. স্টার ওয়ারস সিনেমার প্রধান চরিত্র লুকে স্কাইওয়াকার।
খ. শিল্পপতি রিচার্ড ব্রানসন।
৩. প্রশ্ন: স্যার আইজাক নিউটন কি আবিস্কার করেছেন?
উত্তর: জরিপে অংশ নেয়া এক তৃতীয়াংশের উত্তর ছিল:
ক. স্যার আইজাক নিউটন আগুনের আবিস্কাররক।
জরিপে অংশ নেয়া ষোল শতাংশের উত্তর ছিল:
ক. স্যার আইজাক নিউটন ইন্টারনেটের আবিস্কারক।
ক. স্যার আইজাক নিউটন সৌর পদ্ধতি আবিস্কার করেছেন।
খ. স্যার আইজাক নিউটন আমেরিকা আবিস্কার করেছেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পক্ষে প্রচারণা চালানো বার্মিংহাম সায়েন্স সিটির ড. পাম ওয়াডেল বলেছেন, জরিপের কিছু ফলাফল হাস্যকর। শিশুরা বিজ্ঞানের হিরোদের চেয়ে সিনেমার হিরোদের বেশী চেনে। বিজ্ঞানীর পরিবর্তে এরা নামকরা গায়কদের ব্যাপারে আগ্রহী বেশী। মজার ব্যাপার হচ্ছে ৯ থেকে ১০ বছরের ৭০ শতাংশ শিশু আবার বিজ্ঞানে নোবেল পাওয়ার ব্যাপারে অনেক আগ্রহী। ১১ থেকে ১৫ বছরের শিশুদের মধ্যে এই হার আবার ৩৩ শতাংশ।
পাদ টিকা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একবার লন্ডন গেছেন। ইংল্যান্ডে প্রবাসী বাঙ্গালীদের মধ্যে কাড়াকাড়ি পড়ে গেছে কে কার আগে রবি ঠাকুরের সাথে দেখা করবে।
এক বাঙ্গালী যুবক দীর্ঘ আট বছর ধরে লন্ডনে ব্যারিস্টারী পড়ছে। পাশ আর করা হয়ে উঠেনি। এটা নিয়ে তার কোন মাথা ব্যাথাও নেই। কারণ তত দিনে সে ইংরেজদের আদব কায়দা ভালই রপ্ত কর নিয়েছে। সে আসল রবি ঠাকুরের সাথে দেখো করতে।
প্রথম সাক্ষাতেই সে উনার সাথে ইংরেজীতে কথাবার্তা বলা শুরু করে দেয়। এবং কথায় কথায় জানিয়ে দেয় দীর্ঘ দিন এদেশে থাকার কারণে বাংলা প্রায় সে ভুলেই গেছে তারচেয়ে ইংরেজীতে সে বেশী অভ্যস্ত।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যুবকের মুখের দিকে তাকিয়ে বলেন-বাঙ্গালীর ছেলে বাংলা বলতে ভুলে গেছ, এ কথা জানাবার আগে লজ্জা বোধ করা উচিত ছিল। কিন্তু তুমিতো দেখছি ইংরেজীটাও ভাল করে রপ্ত করতে পারনি।
** রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদাহরণ দেয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে-ব্রিটিশ সরকার একবার সিদ্ধান্ত নিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করা হোক। তখন সারা ভারতজুড়ে চলছিল ইংরেজ বিরোধী আন্দোলন। তাই রবি ঠাকুর ব্রিটিশদের কাছ থেকে এই উপাধি গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। তা না হলে আজকে আমাদের বলতে হত-স্যার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
তথ্য সূত্র: বিবিসি নিউজ।
Wednesday, March 31, 2010
বিখ্যাতদের পাঠশালা
ছোট বেলায় দেখা সত্যজিত রায়ের অমর সৃষ্টি হীরক রাজার দেশের সেই পাগলা রাজার কথা এখনও মনে আছে।
‘জ্ঞানের কোন শেষ নাই, জ্ঞানের চেষ্টা বৃথা তাই। আজ থেকে তাই পাঠশালা বন্ধ।'
তখন মনে হয়েছিল ইস্ যদি সত্যি সত্যি সব পাঠশালা বন্ধ হয়ে যেত তবে কত মজাই না হত। রোজ রোজ বিরক্তিকর স্কুলে যাবার কোন ঝামেলাই তাহলে আর থাকত না।
আজ অনেক বছর পর মনে হয হায় কোথায় হারিয়ে গেল শৈশবের সেই সব সোনালী দিনগুলি। যদি সুযোগ থাকত তবে আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে যে কোন কিছুর বিনিময়ে আমার সেই সব সাদামাটা শৈশবের দিনগুলি ফেরত চাইতাম। সেই সব স্কুল পালানো দিনগুলি। সেইসব আনন্দ বেদনার মুহূর্তগুলি এখনও তাড়া করে ফেরে।
স্কুল পালানোর কথা বললেই অনেক বোদ্ধারা চোখ কোঁচকে ফেলবেন। কিন্তু অনেক বিখ্যাতদেরও রয়েছে পড়ায় ফাঁকি দেয়া, স্কুল পালানো এবং স্কুল থেকে বহিস্কারের ইতিহাস।
১. জেমস নেগল ফারসন: একজন আমেরিকান লেখক। উনাকে ফিলিপস অ্যকাডেমি থেকে বহিস্কার করা হয়েছিল। এক বদমেজাজী প্রশিক্ষককে পুকুরে ছুড়ে ফেলতে তিনি সাহায্য করে ছিলেন।
২. অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ: বড় হয়ে হতে চেয়েছিলেন গুন্ডা, কবি, দার্শনীক। শেষ পর্যন্ত এর কোনটাই হতে পারেননি। উনার বড় বড় নরম কান দুটি ক্লাস শিক্ষকের খুব প্রিয় ছিল। তাই ছোটবেলায় স্কুলে থাকতে শিক্ষকের বেতের বাড়ির বদলে উনাকে সব সময় কান মলা খেতে হয়েছে। ক্লাসে শিক্ষক প্রবেশ করেই ফিল্মি রংবাজ স্টাইলে উনার দুই কানের উপর ঝাপিয়ে পড়তেন।
৩. বেনিতা মুসোলিনি: ৯ বছর বয়সে স্কুলের এক শিক্ষক তাকে স্কেল দিয়ে বাড়ি দিলে তার দিকে কালির দোয়াত ছুড়ে মারেন। সে যাত্রা রক্ষা পেলেও পরবর্তীতে এক ছাত্রের নিতম্বে ছুরি মারার অপরাধে বিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃত হন।
৪. লিও ট্রটস্কি: একজন রাশিয়ান কমিউনিস্ট নেতা। ১০ বছর বয়সে স্কুলে শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে জোরে চিৎকার করতে বন্ধুদের উৎসাহ জোগান। ফলস্বরুপ বিদ্যালয় থেকে বহিস্কার।
৫. উইলিয়াম রেগুলফ হার্স্ট: আমেরিকান পত্রিকা প্রকাশক। স্কুলের পত্যেক শিক্ষককে একটি করে প্রস্রাবের পটি পাঠান। প্রতিটি পটিতে অলংকরন করে দেন সেই শিক্ষকের নাম আর ছবি। ফলে হার্ভাড থেকে হন বহিস্কৃত।
৬. এডগার অ্যালান পো: পর পর কয়েক সপ্তাহ ক্লাস করতে অস্বীকৃতি জানান। ফলে বিদ্যালয় থেকে করা হয় বহিস্কার।
৭. বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন: ছেলেবেলায় শিক্ষকরা উনাকে লেজী ডগ বলে সম্বোধন করতেন। তাদের ধারণা এই কুঁড়ের বাদশা ছেলে বড় হয়ে কোন কাজেই লাগবে না।
৮. লেখক হুমায়ূন আহমেদ: ক্লাস ওয়ানের প্রথম ক্লাসে মারামারি করে এক ছাত্রের সামনের একটি দাঁত ভেঙ্গে ফেলেন। ফলে হেডমাস্টার সাহেব উনাকে কান ধরে সারাক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার নির্দেশ দেন। ছাত্রছাত্রীদের উপদেশ দেন-এ মহাগুন্ডা। তোমরা সাবধানে থাকবে। খুব সাবধান। পুলিশের ছেলে গুন্ডা হওয়াই স্বাভাবিক। প্রথম শ্রেণীতে যতদিন তিনি ছিলেন প্রতিদিনই কোন না কোন কারণে উনাকে কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।
দ্বিতীয় শ্রেণীতে উঠার পর একদিন ক্লাসের এক সুন্দরী বালিকার কাছে গম্ভীর ভাবে জানতে চান বড় হয়ে সে তাঁকে বিযে করতে রাজী আছে কিনা। ফলে শিক্ষকের কাছে নালিশ এবং যথারীতি কপালে জোটে দুই হতে দুইটা ইট নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার শাস্তি।
৯. আহসান হাবীব: প্রখ্যাত কার্টুনিস্ট। ছেলেবেলায় ভর্তি হন কুমিল্লা জিলা স্কুলে। ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক জানতে চান-হাউ ওল্ড আর ইউ?
তিনি সগর্বে উত্তর দেন-নো আই এ্যাম নট ওল্ড।
শিক্ষক হেসে ফেলে বলেন-বাহ তুইতো ইংরেজীতে দারুণ ভাল রে!
সংগৃহীত
‘জ্ঞানের কোন শেষ নাই, জ্ঞানের চেষ্টা বৃথা তাই। আজ থেকে তাই পাঠশালা বন্ধ।'
তখন মনে হয়েছিল ইস্ যদি সত্যি সত্যি সব পাঠশালা বন্ধ হয়ে যেত তবে কত মজাই না হত। রোজ রোজ বিরক্তিকর স্কুলে যাবার কোন ঝামেলাই তাহলে আর থাকত না।
আজ অনেক বছর পর মনে হয হায় কোথায় হারিয়ে গেল শৈশবের সেই সব সোনালী দিনগুলি। যদি সুযোগ থাকত তবে আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে যে কোন কিছুর বিনিময়ে আমার সেই সব সাদামাটা শৈশবের দিনগুলি ফেরত চাইতাম। সেই সব স্কুল পালানো দিনগুলি। সেইসব আনন্দ বেদনার মুহূর্তগুলি এখনও তাড়া করে ফেরে।
স্কুল পালানোর কথা বললেই অনেক বোদ্ধারা চোখ কোঁচকে ফেলবেন। কিন্তু অনেক বিখ্যাতদেরও রয়েছে পড়ায় ফাঁকি দেয়া, স্কুল পালানো এবং স্কুল থেকে বহিস্কারের ইতিহাস।
১. জেমস নেগল ফারসন: একজন আমেরিকান লেখক। উনাকে ফিলিপস অ্যকাডেমি থেকে বহিস্কার করা হয়েছিল। এক বদমেজাজী প্রশিক্ষককে পুকুরে ছুড়ে ফেলতে তিনি সাহায্য করে ছিলেন।
২. অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ: বড় হয়ে হতে চেয়েছিলেন গুন্ডা, কবি, দার্শনীক। শেষ পর্যন্ত এর কোনটাই হতে পারেননি। উনার বড় বড় নরম কান দুটি ক্লাস শিক্ষকের খুব প্রিয় ছিল। তাই ছোটবেলায় স্কুলে থাকতে শিক্ষকের বেতের বাড়ির বদলে উনাকে সব সময় কান মলা খেতে হয়েছে। ক্লাসে শিক্ষক প্রবেশ করেই ফিল্মি রংবাজ স্টাইলে উনার দুই কানের উপর ঝাপিয়ে পড়তেন।
৩. বেনিতা মুসোলিনি: ৯ বছর বয়সে স্কুলের এক শিক্ষক তাকে স্কেল দিয়ে বাড়ি দিলে তার দিকে কালির দোয়াত ছুড়ে মারেন। সে যাত্রা রক্ষা পেলেও পরবর্তীতে এক ছাত্রের নিতম্বে ছুরি মারার অপরাধে বিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃত হন।
৪. লিও ট্রটস্কি: একজন রাশিয়ান কমিউনিস্ট নেতা। ১০ বছর বয়সে স্কুলে শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে জোরে চিৎকার করতে বন্ধুদের উৎসাহ জোগান। ফলস্বরুপ বিদ্যালয় থেকে বহিস্কার।
৫. উইলিয়াম রেগুলফ হার্স্ট: আমেরিকান পত্রিকা প্রকাশক। স্কুলের পত্যেক শিক্ষককে একটি করে প্রস্রাবের পটি পাঠান। প্রতিটি পটিতে অলংকরন করে দেন সেই শিক্ষকের নাম আর ছবি। ফলে হার্ভাড থেকে হন বহিস্কৃত।
৬. এডগার অ্যালান পো: পর পর কয়েক সপ্তাহ ক্লাস করতে অস্বীকৃতি জানান। ফলে বিদ্যালয় থেকে করা হয় বহিস্কার।
৭. বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন: ছেলেবেলায় শিক্ষকরা উনাকে লেজী ডগ বলে সম্বোধন করতেন। তাদের ধারণা এই কুঁড়ের বাদশা ছেলে বড় হয়ে কোন কাজেই লাগবে না।
৮. লেখক হুমায়ূন আহমেদ: ক্লাস ওয়ানের প্রথম ক্লাসে মারামারি করে এক ছাত্রের সামনের একটি দাঁত ভেঙ্গে ফেলেন। ফলে হেডমাস্টার সাহেব উনাকে কান ধরে সারাক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার নির্দেশ দেন। ছাত্রছাত্রীদের উপদেশ দেন-এ মহাগুন্ডা। তোমরা সাবধানে থাকবে। খুব সাবধান। পুলিশের ছেলে গুন্ডা হওয়াই স্বাভাবিক। প্রথম শ্রেণীতে যতদিন তিনি ছিলেন প্রতিদিনই কোন না কোন কারণে উনাকে কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।
দ্বিতীয় শ্রেণীতে উঠার পর একদিন ক্লাসের এক সুন্দরী বালিকার কাছে গম্ভীর ভাবে জানতে চান বড় হয়ে সে তাঁকে বিযে করতে রাজী আছে কিনা। ফলে শিক্ষকের কাছে নালিশ এবং যথারীতি কপালে জোটে দুই হতে দুইটা ইট নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার শাস্তি।
৯. আহসান হাবীব: প্রখ্যাত কার্টুনিস্ট। ছেলেবেলায় ভর্তি হন কুমিল্লা জিলা স্কুলে। ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক জানতে চান-হাউ ওল্ড আর ইউ?
তিনি সগর্বে উত্তর দেন-নো আই এ্যাম নট ওল্ড।
শিক্ষক হেসে ফেলে বলেন-বাহ তুইতো ইংরেজীতে দারুণ ভাল রে!
সংগৃহীত
বিখ্যাতদের আরও কিছু মজার ঘটনা।
১. শার্লক হোমসের অমর স্রষ্টা স্যার আর্থার কোনান ডয়েল প্যারিসে বেড়াতে গেছেন। একটা ট্যাক্সিতে উঠতেই ট্যাক্সি চালক তাঁকে
প্রশ্ন করল-কোথায় যাবেন মিস্টার ডয়েল?
আর্থার কোনান ডয়েল অবাক হয়ে জানতে চাইলেন-তুমি আমাকে চিনলে কি করে?
ড্রাইভার উত্তর দিল-কাগজে দেখেছিলাম লেখক স্যার আর্থার কোনান ডয়েল প্যারিসে এসেছেন। আর আপনার ডান হাতে আঙ্গুলে কালি লেগে আছে দেখে বুঝলাম যে আপনি লেখক। তাছাড়া আপনার চালচলন পোশাক দেখেই বুঝেছি যে আপনি নির্ঘাত ইংরেজ।
বাহ, তোমার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা যে আমার শার্লক হোমসের চেয়েও বেশী। সামান্য কয়েকটা লক্ষণ দেখেই তুমি আমাকে চিনে ফেললে।
অবশ্য আপনাকে চিনতে আরও একটা ব্যাপার সাহায্য করেছে।
সেটা কি? উৎসুক হয়ে কোনান ডয়েল জানতে চান।
আপনার হাতের ব্যাগের গায়ে বড় বড় করে আপনার নাম লেখা রয়েছে।
২. রানাঘাটের জমিদার গোপাল চৌধুরী ছিলেন ভীষণ মোটা। একবার তিনি হাতির পিঠে চড়ে পার্শ্ববর্তী জমিদারের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে যান। গোপাল চৌধুরীকে দেখতে লোকের ভীড় জমে যায়।
হাসতে হাসতে চৌধুরী সাহেব বললেন-কিহে তোমাদের গাঁয়ের লোকেরা কি এর আগে কখনও হাতি দেখেনি।
প্রতিবেশী জমিদারও কম যান না। তিনি উত্তর দেন-হাতি ওরা অনেক দেখেছ্ েকিন্তু হাতির পিঠে হাতি তারা আগে কখনও দেখেনি।
৩. প্রাচীন গ্রীক কবি ফিলেমোন একদিন দুপুরে খেতে এসে দেখেন যে একটি গাধা তার জন্য রাখা সব খাবার খেয়ে নিচ্ছে। ঘটনাটি দেখে উনার ভীষণ হাসি পায়। হাসি এতই বেদম আকার ধারণ করে যে একটু পর হেচকি উঠে মারা যান দুর্ভাগা কবি।
৪. আলবার্ট আইনস্টাইন পৃথিবী বিখ্যাত বিঙ্গানী হলেও তাঁর চালচলন ছিল একেবারেই সাধাসিধে। এমনকি তিনি ট্রেনে চলাফেরা করতেন তৃতীয় শ্রেণীর কামরায়।
একবার বেলজিয়ামের রানী তাঁকে ব্রাসেলস এ নিমন্ত্রণ করলে তিনি যথারীতি সাধারণ বেশে তৃতীয় শ্রেণীর কামরায় চেপে এসে নামলেন স্টেশনে। নেমে দেখলেন বেজায় ভিড়। ভিড়ের ফাঁক-ফোঁকর গলে তিনি কোন রকমে বাইরে বেরিয়ে হেঁটে এসে পৌছালেন রানীর প্রসাদে। রানী তো হঠাৎ করে আইনস্টাইনকে এভাবে সামনে দেখে হতভম্ব।
তিনি কোন মত বললেন-প্রফেসর আইনস্টাইন, আপনি এবাবে হেঁটে আসলেন, অথচ আপনাকে আনতে আমি স্টেশনে গাড়ী আর লোকজন পাঠালাম।
হবে হয়ত বললেন আইনস্টাইন। স্টেশনে তাহলে ভিড় বাধিয়েছিল আপনার পাঠানো লোকেরাই।
৫. প্রখ্যাত নাট্যকার জর্জ বার্নার্ড শ তার ‘সেন্ট জোন’ নাটকের প্রথম মঞ্চায়নের রাতে উপস্থিত থাকবার জন্য স্যার উন্সটন চার্চিলকে দুটি টিকেট পাঠান। সাথে একটি চিরকুট লিখে পাঠান- একটি টিকেট আপনার আর অন্যটি আপনার বন্ধুর জন্য। তবে আদৌ যদি আপনার কোন বন্ধু থেকে থাকে।
চার্চিলও শ কে একটি চিঠি পাঠান। তাতে লেখা ছিল- মঞ্চায়নের প্রথম রাতে উপস্থিত হতে পারছি না বলে দুঃখিত। সম্ভব হলে দ্বিতীয় রাতের জন্য টিকেট পাঠাবেন। অবশ্য আদৌ যদি আপনার নাটকের দ্বিতীয় রাত বলে কোন কিছু থেকে থাকে।
৬. প্রখ্যাত ইংরেজ লেখক সমারসেট মম বৃদ্ধ বয়সে ভীষণ অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তার এক ভক্ত ফোন করে উনার কাছে জানতে চাইল-কিছু ফুল আর ফলমূল পাঠালে তিনি তা গ্রহণ করবেন কিনা।
উত্তরে মম বলেন-ফলমূল পাঠাবার ক্ষেত্রে বলতে হয় তুমি বড্ড দেরী করে ফেলেছ। আর ফুল পাঠাবার সময় এখনও আসেনি।
৭. ইউলিসিস খ্যাত লেখক জেমস জয়েস এর কাছে একদিন এক তরুণ ভক্ত এসে বলল-যে হাত দিয়ে আপনি ইউলিসিস এর মত মহৎ সাহিত্যকর্ম রচনা করেছেন সেই হাতে কি আমি একবার চুমু খেতে পারি?
না-উত্তর দিলেন জয়েস। কারণ এই হাতে আমি অনেক মন্দ কাজও করেছি।
৮. ধনাঢ্য ব্যবসায়ী জন ডেভিড রকফেলারের ব্যক্তিগত জীবন ছিল খুব সাধাসিধে। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি অর্থ উপার্জন করেছিলেন বলে অযথা অপব্যায়ে তার মন সায় দিত না।
একবার ওয়াশিংটন ডিসিতে গিয়ে তিনি একটি হোটেলের সবচেয়ে কমদামী কক্ষটি নিজের জন্য ভাড়া করেন।
হোটেলের ম্যানেজার একদিন বলে বসে-স্যার আপনার ছেলে যখন এই হেটেলে আসে তখন সবচেয়ে দামী কক্ষটি ভাড়া নেন। অথচ আপনি সবচেয়ে কমদামি কক্ষটি ভাড়া নিলেন কেন?
রকফেলার জবাব দেন-কারণ আমার ছেলের বাবা পয়সাঅলা লোক। কিন্তু আমার বাব ছিলেন নিতান্তই গরীব।
৯. ভারতে জন্মগ্রহণকারী নোবেল বিজয়ী ইংরেজ লেখক রুডইয়ার্ড কিপলিং যে পত্রিকাটির গ্রাহক ছিলেন সেখানে একবার ভুলবশত কিপলিং এর মৃত’্য সংবাদ ছাপা হয়। সংবাদটি পড়ে তৎক্ষণাৎ কিপলিং পত্রিকা সম্পাদককে চিঠি লিখলেন-আপনার পত্রিকা মারফতে জানতে পারলাম যে আমার মৃত্যু হয়েছে। তাই দয়া করে আপনাদের গ্রাহক তালিকাটা থেকে আমার নামটি বাদ দিয়ে দিবেন।
১০. একবার ব্রিটিশ পুলিশ এক চোরকে খুঁজে বেড়াচ্ছিল যার চেহারার সাথে তখনকার প্রধানমন্ত্রী জন মেজরের চেহারার অনেক মিল ছিল। পুলিশ চোরের ছবি দিয়ে ধরিয়ে দিন বিঞ্জাপনও ছাপিয়েছিল।
লোকে জন মেজরকেই চোর ভেবে ভুল করতে পারে ভেবে তারা বিঞ্জাপনের নিচে লিখে দিল-প্রধানমন্ত্রী নন।
সংগ্রহ: আসমার ওসমান সম্পাদিত বিখ্যাতদের সত্যি জোকস।
প্রশ্ন করল-কোথায় যাবেন মিস্টার ডয়েল?
আর্থার কোনান ডয়েল অবাক হয়ে জানতে চাইলেন-তুমি আমাকে চিনলে কি করে?
ড্রাইভার উত্তর দিল-কাগজে দেখেছিলাম লেখক স্যার আর্থার কোনান ডয়েল প্যারিসে এসেছেন। আর আপনার ডান হাতে আঙ্গুলে কালি লেগে আছে দেখে বুঝলাম যে আপনি লেখক। তাছাড়া আপনার চালচলন পোশাক দেখেই বুঝেছি যে আপনি নির্ঘাত ইংরেজ।
বাহ, তোমার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা যে আমার শার্লক হোমসের চেয়েও বেশী। সামান্য কয়েকটা লক্ষণ দেখেই তুমি আমাকে চিনে ফেললে।
অবশ্য আপনাকে চিনতে আরও একটা ব্যাপার সাহায্য করেছে।
সেটা কি? উৎসুক হয়ে কোনান ডয়েল জানতে চান।
আপনার হাতের ব্যাগের গায়ে বড় বড় করে আপনার নাম লেখা রয়েছে।
২. রানাঘাটের জমিদার গোপাল চৌধুরী ছিলেন ভীষণ মোটা। একবার তিনি হাতির পিঠে চড়ে পার্শ্ববর্তী জমিদারের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে যান। গোপাল চৌধুরীকে দেখতে লোকের ভীড় জমে যায়।
হাসতে হাসতে চৌধুরী সাহেব বললেন-কিহে তোমাদের গাঁয়ের লোকেরা কি এর আগে কখনও হাতি দেখেনি।
প্রতিবেশী জমিদারও কম যান না। তিনি উত্তর দেন-হাতি ওরা অনেক দেখেছ্ েকিন্তু হাতির পিঠে হাতি তারা আগে কখনও দেখেনি।
৩. প্রাচীন গ্রীক কবি ফিলেমোন একদিন দুপুরে খেতে এসে দেখেন যে একটি গাধা তার জন্য রাখা সব খাবার খেয়ে নিচ্ছে। ঘটনাটি দেখে উনার ভীষণ হাসি পায়। হাসি এতই বেদম আকার ধারণ করে যে একটু পর হেচকি উঠে মারা যান দুর্ভাগা কবি।
৪. আলবার্ট আইনস্টাইন পৃথিবী বিখ্যাত বিঙ্গানী হলেও তাঁর চালচলন ছিল একেবারেই সাধাসিধে। এমনকি তিনি ট্রেনে চলাফেরা করতেন তৃতীয় শ্রেণীর কামরায়।
একবার বেলজিয়ামের রানী তাঁকে ব্রাসেলস এ নিমন্ত্রণ করলে তিনি যথারীতি সাধারণ বেশে তৃতীয় শ্রেণীর কামরায় চেপে এসে নামলেন স্টেশনে। নেমে দেখলেন বেজায় ভিড়। ভিড়ের ফাঁক-ফোঁকর গলে তিনি কোন রকমে বাইরে বেরিয়ে হেঁটে এসে পৌছালেন রানীর প্রসাদে। রানী তো হঠাৎ করে আইনস্টাইনকে এভাবে সামনে দেখে হতভম্ব।
তিনি কোন মত বললেন-প্রফেসর আইনস্টাইন, আপনি এবাবে হেঁটে আসলেন, অথচ আপনাকে আনতে আমি স্টেশনে গাড়ী আর লোকজন পাঠালাম।
হবে হয়ত বললেন আইনস্টাইন। স্টেশনে তাহলে ভিড় বাধিয়েছিল আপনার পাঠানো লোকেরাই।
৫. প্রখ্যাত নাট্যকার জর্জ বার্নার্ড শ তার ‘সেন্ট জোন’ নাটকের প্রথম মঞ্চায়নের রাতে উপস্থিত থাকবার জন্য স্যার উন্সটন চার্চিলকে দুটি টিকেট পাঠান। সাথে একটি চিরকুট লিখে পাঠান- একটি টিকেট আপনার আর অন্যটি আপনার বন্ধুর জন্য। তবে আদৌ যদি আপনার কোন বন্ধু থেকে থাকে।
চার্চিলও শ কে একটি চিঠি পাঠান। তাতে লেখা ছিল- মঞ্চায়নের প্রথম রাতে উপস্থিত হতে পারছি না বলে দুঃখিত। সম্ভব হলে দ্বিতীয় রাতের জন্য টিকেট পাঠাবেন। অবশ্য আদৌ যদি আপনার নাটকের দ্বিতীয় রাত বলে কোন কিছু থেকে থাকে।
৬. প্রখ্যাত ইংরেজ লেখক সমারসেট মম বৃদ্ধ বয়সে ভীষণ অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তার এক ভক্ত ফোন করে উনার কাছে জানতে চাইল-কিছু ফুল আর ফলমূল পাঠালে তিনি তা গ্রহণ করবেন কিনা।
উত্তরে মম বলেন-ফলমূল পাঠাবার ক্ষেত্রে বলতে হয় তুমি বড্ড দেরী করে ফেলেছ। আর ফুল পাঠাবার সময় এখনও আসেনি।
৭. ইউলিসিস খ্যাত লেখক জেমস জয়েস এর কাছে একদিন এক তরুণ ভক্ত এসে বলল-যে হাত দিয়ে আপনি ইউলিসিস এর মত মহৎ সাহিত্যকর্ম রচনা করেছেন সেই হাতে কি আমি একবার চুমু খেতে পারি?
না-উত্তর দিলেন জয়েস। কারণ এই হাতে আমি অনেক মন্দ কাজও করেছি।
৮. ধনাঢ্য ব্যবসায়ী জন ডেভিড রকফেলারের ব্যক্তিগত জীবন ছিল খুব সাধাসিধে। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি অর্থ উপার্জন করেছিলেন বলে অযথা অপব্যায়ে তার মন সায় দিত না।
একবার ওয়াশিংটন ডিসিতে গিয়ে তিনি একটি হোটেলের সবচেয়ে কমদামী কক্ষটি নিজের জন্য ভাড়া করেন।
হোটেলের ম্যানেজার একদিন বলে বসে-স্যার আপনার ছেলে যখন এই হেটেলে আসে তখন সবচেয়ে দামী কক্ষটি ভাড়া নেন। অথচ আপনি সবচেয়ে কমদামি কক্ষটি ভাড়া নিলেন কেন?
রকফেলার জবাব দেন-কারণ আমার ছেলের বাবা পয়সাঅলা লোক। কিন্তু আমার বাব ছিলেন নিতান্তই গরীব।
৯. ভারতে জন্মগ্রহণকারী নোবেল বিজয়ী ইংরেজ লেখক রুডইয়ার্ড কিপলিং যে পত্রিকাটির গ্রাহক ছিলেন সেখানে একবার ভুলবশত কিপলিং এর মৃত’্য সংবাদ ছাপা হয়। সংবাদটি পড়ে তৎক্ষণাৎ কিপলিং পত্রিকা সম্পাদককে চিঠি লিখলেন-আপনার পত্রিকা মারফতে জানতে পারলাম যে আমার মৃত্যু হয়েছে। তাই দয়া করে আপনাদের গ্রাহক তালিকাটা থেকে আমার নামটি বাদ দিয়ে দিবেন।
১০. একবার ব্রিটিশ পুলিশ এক চোরকে খুঁজে বেড়াচ্ছিল যার চেহারার সাথে তখনকার প্রধানমন্ত্রী জন মেজরের চেহারার অনেক মিল ছিল। পুলিশ চোরের ছবি দিয়ে ধরিয়ে দিন বিঞ্জাপনও ছাপিয়েছিল।
লোকে জন মেজরকেই চোর ভেবে ভুল করতে পারে ভেবে তারা বিঞ্জাপনের নিচে লিখে দিল-প্রধানমন্ত্রী নন।
সংগ্রহ: আসমার ওসমান সম্পাদিত বিখ্যাতদের সত্যি জোকস।
কিছু নতুন পুরাতন জোকস!
১. আমার কাছে সত্যই একটা ব্যাপার হাসির মনে হয় যখন শুনি মানুষ প্রশ্ন করে যে ভালবেসে বিয়ে করা ভাল নাকি পারিবারিক ভাবে বিয়ে করা ভাল। আমার কাছে মনে হয় একজন যেন অন্য একজনকে প্রশ্ন করছেঃ আত্মহত্যা ভাল নাকি খুন হওয়া ভাল।
২. মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল স্ত্রীর। চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে দেখলেন, স্বামী বিছানায় নেই। বিছানা থেকে নেমে গায়ে গাউন চাপালেন তিনি। তারপর স্বামীকে খুঁজতে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে এলেন।
বেশি খুঁজতে হলো না। রান্নাঘরের টেবিলেই বসে থাকতে দেখা গেল স্বামীপ্রবরকে। হাতে গরম এক কাপ কফি নিয়ে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে আছেন তিনি। দেখেই বোঝা যাচ্ছে, গভীর কোনো চিন্তায় মগ্ন। মাঝেমধ্যে অবশ্য হাতের রুমাল দিয়ে চোখ থেকে পানি মুছে নিচ্ছেন, তারপর কফি খাচ্ছেন।
‘কী হয়েছে তোমার?’ রান্নাঘরে ঢুকতে ঢুকতে চিন্তিতভাবে বললেন স্ত্রী। ‘এত রাতে রান্নাঘরে কেন?’
স্বামী তাঁর স্ত্রীর দিকে তাকালেন। তারপর গম্ভীর হয়ে বললেন, ‘হঠাৎ ২০ বছর আগের কথা মনে পড়ল। খেয়াল আছে তোমার, যেদিন আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিল। আর তার পর থেকেই তো আমরা ডেট করতে শুরু করেছিলাম। তোমার বয়স ছিল ষোলো। তোমার কি মনে পড়ে সেসব?’
স্ত্রী তাঁর স্বামীর চোখের পানি মুছে দিতে দিতে জবাব দিলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই মনে আছে।’
স্বামী একটু থেমে বললেন, ‘তোমার কি মনে আছে, পার্কে তোমার বাবা আমাদের হাতেনাতে ধরে ফেলেছিলেন?’
‘হ্যাঁ, আমার মনে আছে।’ একটা চেয়ার নিয়ে স্বামীর কাছে বসতে বসতে বললেন স্ত্রী।
স্বামী আবার বললেন, ‘মনে আছে, তোমার বাবা তখন রেগে গিয়ে আমার মুখে শটগান ধরে বলেছিলেন, ‘এক্ষুনি আমার মেয়েকে বিয়ে করো, নয়তো তোমাকে ২০ বছর জেল খাটাব আমি।’
স্ত্রী নরম সুরে বললেন, ‘আমার সবই মনে আছে।’
স্বামী আবার তাঁর গাল থেকে চোখের পানি মুছতে মুছতে বললেন, ‘আজকে আমি জেল থেকে ছাড়া পেতাম।’
৩. একটা উপদেশ- সবসময় মানিব্যাগে আপনি আপনার স্ত্রীর ছবি রাখুন। যখনই বড়ো কোনো সমস্যায় পড়বেন তখন মানিব্যাগ বের করে স্ত্রীর ছবিটা দেখবেন, আর মনে করবেন এর চেয়ে বড় সমস্যা আর কিছুই হতে পারে না।
৪. জামাতে ইসলামী, বিএনপি আর ঐক্যজোটের তিন র্কমী মদ্যপান করা অবস্থায় সৌদী আরবে ধরা পড়। সৌদী আরবে যেহেতু প্রকাশ্যে মদ্যপানের অপরাধ অত্যন্ত গুরুতর, তাই সেখানে এর শাস্তি হচ্ছে চাবুকের বিশ দোররা বাড়ি। আরবের শেখ যখন এই তিন কর্মীকে শাস্তির জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছিলেন, তখন শেখ বললেন, "আজ আমার প্রথম বউয়ের জন্মদিন, তাই আমি তোমাদের প্রত্যকেকে চাবুক মারার আগে একটা করে আর্জি জানাবার অনুমতি দিলাম এবং তোমাদরে আর্জি মঞ্জুর করা হবে।
লাইনের প্রথমে দাঁড়ানো ঐক্যজোটের কর্মী বলল, "শেখ তুমি যদি চাবুক মারার আগে পিঠের সাথে একটা বালিশ বেঁধে দিতে। তার আর্জি মোতাবকে বালিশ বেঁধে চাবুক মারা শুরু হলো। বালিশ চাবুকের বাড়ি ১০ টা র্পযন্ত নিল, তারপর বালিশ গেল ফেটে। ব্যথায় কুঁচকে রক্তাত্ব অবস্থায় তাকে সরানো হলো বিশ দোররার পর।
এর পরে লাইনে ছিল বিএনপির র্কমী। সে ঐক্যজোটের কর্মীর বেহাল অবস্থা দেখে আর্জি জানাল দু'টো বালিশ বাঁধার। তার আর্জি মোতাবকে ২টা বালিশ বেঁধে চাবুক মারা শুরু হলো। বালিশ চাবুকের বাড়ি ১৫ টা র্পযন্ত নিতে পারল, তার পর বালিশ গেল ফেটে। ব্যথায় কুঁচকে গোঙ্গানো অবস্থায় বিএনপি'র র্কমীকে সরানো হলো বিশ দোররার পর।
সবার শেষে লাইনে ছিল জামাত কর্মী। সে কোন কিছু বলার আগেই শেখ জামাত র্কমীকে বলল, "তুমি হচ্ছো গোলাম আযমের দলের লোক। তাই তুমি ২টা আর্জি রাখতে পার"। জামাতী কর্মী খুশীতে গদগদ হয়ে বলল, "হুযুর, আমি নাদানের মতো কাজ করেছি, তাই তুমি আমাকে চাবুকের ২০ দোররা না, ১০০ দোররা মার। শেখের চোখ আনন্দে জ্বলজল করে উঠল। বলল, "তার পরের আর্জি"? জামাত কর্মী ব্যথায় কুঁকড়ানো বিএনপি কর্মীকে আঙ্গুলের ইশারায় দেখিয়ে বলল, "বালিশ টালিশ না, তুমি ঐ ব্যাটারে (বিএনপি'র কর্মী) আমার পিঠের পেছনে বাইন্ধা দাও"।
৫. রাতে গাড়ি চালিয়ে ফিরছিলেন এক ভদ্রলোক। গাড়ি জ্যামে আটকে গেলে এক ভিক্ষুক এসে হাত পাতল।
: দয়া করে কিছু দিন স্যার !
: তুমি মদ খাও ?
: না স্যার।
: তুমি ধূমপান কর ?
: না।
: জুয়া খেল ?
: না।
: তুমি শিগগির আমার গাড়িতে উঠ।
: যা দেবার এখানেই দিন, স্যার।
: না, তোমাকে বাড়ি নিয়ে আমার স্ত্রীকে দেখাতে চাই যে, মদ, জুয়া, ধূমপান এ সবের সাথে না থাকলে মানুষের জীবনের কি ভয়াবহ অবস্থা হয়।
৬. এক দাওয়াতের অনুষ্ঠানে এক বাংলাদেশী ও এক আমেরিকান খেতে বসেছে।তো সেই দাওয়াতের অনুষ্ঠানে সোনার চামচ দেয়া হয়েছিল সবাইকে খাওয়ার সময় ব্যবহার করার জন্য।হঠাৎ আমেরিকানটা খাওয়ার মাঝখানে খুব সাবধানে নিজের প্যান্টের পকেটে একটা সোনার চামচ লুকিয়ে ফেললো।শুধু বাংলাদেশীটা এটা দেখল,কিন্তু কিছু বলল না।খাওয়া শেষে সবাই গল্প করছে।হঠাৎ বাংলাদেশীটা বলল,সে একটা ম্যাজিক দেখাবে।ম্যাজিক দেখতে সবাই তার চারপাশে এসে ভিড় করে দাড়ালো।তখন বাংলাদেশীটা একটা সোনার চামচ চাইল একজনের কাছ থেকে।সেই বাড়ির মালিকের ছেলে তাকে একটা সোনার চামচ এনে দিল।বাংলাদেশীটা সেই সোনার চামচটা তার নিজের প্যান্টের পকেটে ঢুকাল এবং আমেরিকানটাকে কাছে ডেকে এনে তার পকেট থেকে সোনার চামচ বের করল। সবাই খুব জোরে তালি দিয়ে ওঠল....আর আমেরিকানটা
৭. এক বন্ধুর মন খুব খারাপ। অন্য বন্ধু তাই দেখে কথা বলছেঃ
১ম বন্ধুঃ কিরে দোস্ত, মন খারাপ কেন? ওঃ তোর বউ সেই যে বাপের বাড়ি গেল, এখনও আসেনি, তাই?
২য় বন্ধুঃ নারে দোস্ত, আজকে তার ফিরে আসার কথা!
৮. একজন মানুষকে টেলিগ্রাম করা হলঃ বউ মারা গেছে, কবর দিব নাকি পুড়িয়ে ফেলব?
সেই মানুষ সাথে সাথে উত্তর পাঠালঃ কোন রিস্ক নেবার দরকার নাই; প্রথমে পোড়ান, তারপর সেই ছাই কবর দিন।
৯. স্ত্রীঃ স্বামী এবং স্ত্রীকে কখনো একসঙ্গে স্বর্গে ঢোকার অনুমতি দেয়া হয় না।
স্বামীঃ হ্যাঁ, এজন্যই এর নাম স্বর্গ।
১০. চল্লিশ বছর পার হবার হয়ে গেছে তবু বিয়ে করেনি এক লোক । একদিন একজন এর কারন জানতে চাইল ।
লোকপ্টি বলল সারা জীবন আমি একটা পারফেক্ট মেয়ের খোজ করেছি ।
তা একটি ও পাননি?
পেয়েছিলাম একটি কিন্তু সে আবার একটি পারফেক্ট ছেলের অপেক্ষায় ছিল।
১১. প্রশ্ন: রাজাকার আর এক বালতি গোবরের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
উত্তর: ঐ বালতিটা।
১২. কোনো মহিলা যখন গলার স্বর নামিয়ে কথা বলে তখন বুঝতে হবে তিনি কিছু চাইছেন ।
আর যখন গলা চড়া করে কথা বলে তখন বুঝতে হবে তিনি যা চেয়েছিলেন তা পান নি ।
১৩. এক ভদ্রলোক একটা মোটর গাড়ী দুঘটনার একেবারে চুরমার হয়ে গেছে । তিনি তার গাড়ী যেখানে বীমা করেছিলেন সেখানে গিয়ে টাকার দাবী করলেন । কোম্পানীর ম্যানেজার বললেন যে আপনাকে তো টাকা দেয়া হবে না । আপনাকে গাড়ীর বদলে একটা নতুন গাড়ী দেয়া হবে । ভদ্রলোক তো আৎকে ঊঠলেন । আরে আমার স্ত্রীর নামে বীমা করা , সে মরে গেলে কি আপনারা একই ব্যবস্থা করবেন ?
২. মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল স্ত্রীর। চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে দেখলেন, স্বামী বিছানায় নেই। বিছানা থেকে নেমে গায়ে গাউন চাপালেন তিনি। তারপর স্বামীকে খুঁজতে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে এলেন।
বেশি খুঁজতে হলো না। রান্নাঘরের টেবিলেই বসে থাকতে দেখা গেল স্বামীপ্রবরকে। হাতে গরম এক কাপ কফি নিয়ে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে আছেন তিনি। দেখেই বোঝা যাচ্ছে, গভীর কোনো চিন্তায় মগ্ন। মাঝেমধ্যে অবশ্য হাতের রুমাল দিয়ে চোখ থেকে পানি মুছে নিচ্ছেন, তারপর কফি খাচ্ছেন।
‘কী হয়েছে তোমার?’ রান্নাঘরে ঢুকতে ঢুকতে চিন্তিতভাবে বললেন স্ত্রী। ‘এত রাতে রান্নাঘরে কেন?’
স্বামী তাঁর স্ত্রীর দিকে তাকালেন। তারপর গম্ভীর হয়ে বললেন, ‘হঠাৎ ২০ বছর আগের কথা মনে পড়ল। খেয়াল আছে তোমার, যেদিন আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিল। আর তার পর থেকেই তো আমরা ডেট করতে শুরু করেছিলাম। তোমার বয়স ছিল ষোলো। তোমার কি মনে পড়ে সেসব?’
স্ত্রী তাঁর স্বামীর চোখের পানি মুছে দিতে দিতে জবাব দিলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই মনে আছে।’
স্বামী একটু থেমে বললেন, ‘তোমার কি মনে আছে, পার্কে তোমার বাবা আমাদের হাতেনাতে ধরে ফেলেছিলেন?’
‘হ্যাঁ, আমার মনে আছে।’ একটা চেয়ার নিয়ে স্বামীর কাছে বসতে বসতে বললেন স্ত্রী।
স্বামী আবার বললেন, ‘মনে আছে, তোমার বাবা তখন রেগে গিয়ে আমার মুখে শটগান ধরে বলেছিলেন, ‘এক্ষুনি আমার মেয়েকে বিয়ে করো, নয়তো তোমাকে ২০ বছর জেল খাটাব আমি।’
স্ত্রী নরম সুরে বললেন, ‘আমার সবই মনে আছে।’
স্বামী আবার তাঁর গাল থেকে চোখের পানি মুছতে মুছতে বললেন, ‘আজকে আমি জেল থেকে ছাড়া পেতাম।’
৩. একটা উপদেশ- সবসময় মানিব্যাগে আপনি আপনার স্ত্রীর ছবি রাখুন। যখনই বড়ো কোনো সমস্যায় পড়বেন তখন মানিব্যাগ বের করে স্ত্রীর ছবিটা দেখবেন, আর মনে করবেন এর চেয়ে বড় সমস্যা আর কিছুই হতে পারে না।
৪. জামাতে ইসলামী, বিএনপি আর ঐক্যজোটের তিন র্কমী মদ্যপান করা অবস্থায় সৌদী আরবে ধরা পড়। সৌদী আরবে যেহেতু প্রকাশ্যে মদ্যপানের অপরাধ অত্যন্ত গুরুতর, তাই সেখানে এর শাস্তি হচ্ছে চাবুকের বিশ দোররা বাড়ি। আরবের শেখ যখন এই তিন কর্মীকে শাস্তির জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছিলেন, তখন শেখ বললেন, "আজ আমার প্রথম বউয়ের জন্মদিন, তাই আমি তোমাদের প্রত্যকেকে চাবুক মারার আগে একটা করে আর্জি জানাবার অনুমতি দিলাম এবং তোমাদরে আর্জি মঞ্জুর করা হবে।
লাইনের প্রথমে দাঁড়ানো ঐক্যজোটের কর্মী বলল, "শেখ তুমি যদি চাবুক মারার আগে পিঠের সাথে একটা বালিশ বেঁধে দিতে। তার আর্জি মোতাবকে বালিশ বেঁধে চাবুক মারা শুরু হলো। বালিশ চাবুকের বাড়ি ১০ টা র্পযন্ত নিল, তারপর বালিশ গেল ফেটে। ব্যথায় কুঁচকে রক্তাত্ব অবস্থায় তাকে সরানো হলো বিশ দোররার পর।
এর পরে লাইনে ছিল বিএনপির র্কমী। সে ঐক্যজোটের কর্মীর বেহাল অবস্থা দেখে আর্জি জানাল দু'টো বালিশ বাঁধার। তার আর্জি মোতাবকে ২টা বালিশ বেঁধে চাবুক মারা শুরু হলো। বালিশ চাবুকের বাড়ি ১৫ টা র্পযন্ত নিতে পারল, তার পর বালিশ গেল ফেটে। ব্যথায় কুঁচকে গোঙ্গানো অবস্থায় বিএনপি'র র্কমীকে সরানো হলো বিশ দোররার পর।
সবার শেষে লাইনে ছিল জামাত কর্মী। সে কোন কিছু বলার আগেই শেখ জামাত র্কমীকে বলল, "তুমি হচ্ছো গোলাম আযমের দলের লোক। তাই তুমি ২টা আর্জি রাখতে পার"। জামাতী কর্মী খুশীতে গদগদ হয়ে বলল, "হুযুর, আমি নাদানের মতো কাজ করেছি, তাই তুমি আমাকে চাবুকের ২০ দোররা না, ১০০ দোররা মার। শেখের চোখ আনন্দে জ্বলজল করে উঠল। বলল, "তার পরের আর্জি"? জামাত কর্মী ব্যথায় কুঁকড়ানো বিএনপি কর্মীকে আঙ্গুলের ইশারায় দেখিয়ে বলল, "বালিশ টালিশ না, তুমি ঐ ব্যাটারে (বিএনপি'র কর্মী) আমার পিঠের পেছনে বাইন্ধা দাও"।
৫. রাতে গাড়ি চালিয়ে ফিরছিলেন এক ভদ্রলোক। গাড়ি জ্যামে আটকে গেলে এক ভিক্ষুক এসে হাত পাতল।
: দয়া করে কিছু দিন স্যার !
: তুমি মদ খাও ?
: না স্যার।
: তুমি ধূমপান কর ?
: না।
: জুয়া খেল ?
: না।
: তুমি শিগগির আমার গাড়িতে উঠ।
: যা দেবার এখানেই দিন, স্যার।
: না, তোমাকে বাড়ি নিয়ে আমার স্ত্রীকে দেখাতে চাই যে, মদ, জুয়া, ধূমপান এ সবের সাথে না থাকলে মানুষের জীবনের কি ভয়াবহ অবস্থা হয়।
৬. এক দাওয়াতের অনুষ্ঠানে এক বাংলাদেশী ও এক আমেরিকান খেতে বসেছে।তো সেই দাওয়াতের অনুষ্ঠানে সোনার চামচ দেয়া হয়েছিল সবাইকে খাওয়ার সময় ব্যবহার করার জন্য।হঠাৎ আমেরিকানটা খাওয়ার মাঝখানে খুব সাবধানে নিজের প্যান্টের পকেটে একটা সোনার চামচ লুকিয়ে ফেললো।শুধু বাংলাদেশীটা এটা দেখল,কিন্তু কিছু বলল না।খাওয়া শেষে সবাই গল্প করছে।হঠাৎ বাংলাদেশীটা বলল,সে একটা ম্যাজিক দেখাবে।ম্যাজিক দেখতে সবাই তার চারপাশে এসে ভিড় করে দাড়ালো।তখন বাংলাদেশীটা একটা সোনার চামচ চাইল একজনের কাছ থেকে।সেই বাড়ির মালিকের ছেলে তাকে একটা সোনার চামচ এনে দিল।বাংলাদেশীটা সেই সোনার চামচটা তার নিজের প্যান্টের পকেটে ঢুকাল এবং আমেরিকানটাকে কাছে ডেকে এনে তার পকেট থেকে সোনার চামচ বের করল। সবাই খুব জোরে তালি দিয়ে ওঠল....আর আমেরিকানটা
৭. এক বন্ধুর মন খুব খারাপ। অন্য বন্ধু তাই দেখে কথা বলছেঃ
১ম বন্ধুঃ কিরে দোস্ত, মন খারাপ কেন? ওঃ তোর বউ সেই যে বাপের বাড়ি গেল, এখনও আসেনি, তাই?
২য় বন্ধুঃ নারে দোস্ত, আজকে তার ফিরে আসার কথা!
৮. একজন মানুষকে টেলিগ্রাম করা হলঃ বউ মারা গেছে, কবর দিব নাকি পুড়িয়ে ফেলব?
সেই মানুষ সাথে সাথে উত্তর পাঠালঃ কোন রিস্ক নেবার দরকার নাই; প্রথমে পোড়ান, তারপর সেই ছাই কবর দিন।
৯. স্ত্রীঃ স্বামী এবং স্ত্রীকে কখনো একসঙ্গে স্বর্গে ঢোকার অনুমতি দেয়া হয় না।
স্বামীঃ হ্যাঁ, এজন্যই এর নাম স্বর্গ।
১০. চল্লিশ বছর পার হবার হয়ে গেছে তবু বিয়ে করেনি এক লোক । একদিন একজন এর কারন জানতে চাইল ।
লোকপ্টি বলল সারা জীবন আমি একটা পারফেক্ট মেয়ের খোজ করেছি ।
তা একটি ও পাননি?
পেয়েছিলাম একটি কিন্তু সে আবার একটি পারফেক্ট ছেলের অপেক্ষায় ছিল।
১১. প্রশ্ন: রাজাকার আর এক বালতি গোবরের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
উত্তর: ঐ বালতিটা।
১২. কোনো মহিলা যখন গলার স্বর নামিয়ে কথা বলে তখন বুঝতে হবে তিনি কিছু চাইছেন ।
আর যখন গলা চড়া করে কথা বলে তখন বুঝতে হবে তিনি যা চেয়েছিলেন তা পান নি ।
১৩. এক ভদ্রলোক একটা মোটর গাড়ী দুঘটনার একেবারে চুরমার হয়ে গেছে । তিনি তার গাড়ী যেখানে বীমা করেছিলেন সেখানে গিয়ে টাকার দাবী করলেন । কোম্পানীর ম্যানেজার বললেন যে আপনাকে তো টাকা দেয়া হবে না । আপনাকে গাড়ীর বদলে একটা নতুন গাড়ী দেয়া হবে । ভদ্রলোক তো আৎকে ঊঠলেন । আরে আমার স্ত্রীর নামে বীমা করা , সে মরে গেলে কি আপনারা একই ব্যবস্থা করবেন ?
Wednesday, March 24, 2010
জোঁক!
আমির আলির ছেলে আতংকে পেছন থেকে চেঁচিয়ে উঠে-বাবা জোঁক। আমির আলি তাকিয়ে দেখে তার পায়ে অনেকক্ষণ ধরে একটি জোক প্যাঁচিয়ে আছে। রক্ত খেয়ে একবারে ঢোল হয়ে আছে। ছেলের দিকে তাকিয়ে আমির আলী অভয়ের হাসি হাসে। ব্যাটা ভয় নাইরে। জমিতে কাজ করতে হইলে এমুন কিছু জোঁকের কামড় সহ্য করতে হয়।
সে টান দিয়ে জোঁকটি পা থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে। একেবারে কামড় দিয়ে ধরে আছে। অনেক্ষনের চেষ্টার পর ছাড়াতে পারে। ছেলে অবাক হয়ে বাবার দিকে তাকিয়ে আছে। তার বাবা কত সাহসী।
সারাদিনের অমানুষিক পরিশ্রমের পর বাপ ছেলে ঘরে ফিরে আসে। এই সময়টুকুর জন্য আমির আলি সারাদিন অপেক্ষা করে থাকে। বাবুর মা না খেয়ে তাদের দুইজনের জন্য ভাত বেড়ে বারান্দায় বসে থাকবে। তারা সবাই মিলে একসাথে খেতে বসবে। খাবার মাঝে টুকটাক সাংসারিক আলাপ চলবে। আহ, পরিবারের এই ভালবাসার কাছে সারাদিনের ক্লান্তি কত তুচ্ছ হয়ে পড়ে।
ঘরে এসে আমির আলি অবাক হয় অনেক লোকজন দেখে। এরা সব এসেছে ব্যাংক থেকে। পর পর কয়েকটি কিস্তির টাকা বাকী পড়াতে তারা তার গোলা থেকে ধান, ঘরের চালা সব খুলে নিয়ে যাচ্ছে। যাবার সময় শাসিয়ে দিয়ে যাচ্ছে বাকী টাকা কালকের মধ্যে শোধ না হলে পুলিশ দিয়ে তাকে ধরিয়ে দেয়া হবে।
আমির আলি ক্লান্তিতে ঘর্মাক্ত দেহ নিয়ে মাটিতে বসে পড়ে। অনেক দিন ধরে সংসারে টানাটানি যাচ্ছে। যা আয় হয় তার সব টাকাই ব্যংকের কিস্তি শোধ করতেই চলে যায়। এ বছর ভাল ফসল হয়েছে। ভেবে ছিল এবার হয়ত ব্যাংকের টাকা শোধ করে দিতে পারবে। কিন্তু সেই সময়টুকু আর সে পেল না। বাবুর মা বাবুকে কোলে নিয়ে নিরবে কাঁদছে। বারান্দার দাওয়ায় বাড়া ভাত তেমনিই পড়ে আছে।
ছেলে তাকিয়ে দেখে বাবার গাল বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। সে খুব অবাক হয়। তার বাবা কত সাহসী, কত বড় জোঁকটাকে কিভাবে টেনে পা থেকে টেনে ফেলে ছিলেন। তাহলে এই লোকগুলিকে তার বাবা কিছু বলছে না কেন। ধানগুলি সারা বছর ধরে তারা দুইজনে মিলে কত কষ্ট করে গোলায় তুলেছিল। লোকগুলি সব নিয়ে যাচ্ছে।
আমির আলি ছেলের চোখের দিকে তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নেয়। সে আজ আর ছেলেকে কোন অভয় বাণী দিতে পারে না। ছেলেকে সে কিভাবে বুঝাবে জমির জোঁক থেকে মুক্তি পাওয়া যায় কিন্তু এখন সামনে মানুষরূপী যে জোঁকগুলি দাড়িয়ে আছে তাদের হাত থেকে মুক্তির কোন উপায় তার জানা নাই। সত্যিকারের জোঁক কয়েক ফোটা রক্ত খেয়েই থেমে যায়। কিন্তু এই জোঁকগুলি অনবরত মানুষের রক্ত খেয়েই চলে।
ছেলে অনবরত ডেকেই চলেছে-বাবা, ও বাবা। আমির আলি লজ্জায় ছেলের দিকে মুখ তোলে তাকাতে পারছেন না। আজ তিনি জীবন যুদ্ধে পরাজিত এক ভীতু বাবা।
(স্যার ফজলে হাসান আবেদ বিশ্বের সবচেয়ে বড় এনজিও ব্র্যাক এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান। ১৯৭১ সালে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে তিনি ব্র্যাক, কালক্রমে যা দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি সংস্থায় পরিণত হয়। দেশের বাইরে এশিয়া এবং আফ্রিকার ৮টি দেশে ব্র্যাক এর কার্যক্রম বিস্তৃত। কাজের স্বীকৃতি হিসাবে পেয়েছেন রেমন ম্যাগসাসে পুরস্কার, ইউএনডিপি পুরস্কার, ক্লিনটন গোবাল সিটিজেন পুরস্কার এবং সবশেষে এ বছরই পেলেন ব্রিটেনের রাজপরিবার থেকে নাইট উপাধি।
আহ্ একটা মানুষের জীবনে এর চেয়ে বেশী আর কিইবা চাইবার থাকে। আমাদের এই সবুজ দেশটাকে বিশ্ব দরবারে তিনি নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। এর জন্য আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নাই।
কিন্তু স্যার আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন ব্র্যাক এর শাখাগুলি কর্মীদের জন্য মোটা অংকের বেতন আর ঝা চকচকে জৌলুস নিয়ে কিভাবে বেড়ে উঠছে। একমাত্র উচ্চহারের সুদের কারণেই এটা সম্ভবপর হয়েছে। ঋণ আদায়ের নামে আপনার লোকেরা দরিদ্র পরিবারগুলির উপর কি পরিমাণ অত্যাচার করে আপনার কি কোন ধারণা আছে।
এর পেছনে যে কত অসহায় পরিবারের কান্না লুকিয়ে আছে তা কি আপনি কখনও অনুভব করেছেন। আপনি কি রাতে একজন সাধারন লোকের মতই ঘুমাতে পারেন। অসহায় মুখগুলি কি দুঃস্বপ্ন হয়ে আপনাকে তাড়া করে ফেরে না। চোখ বন্ধ করলে কি এদের কান্নার শব্দ আপনার কানে ভেসে আসে না।
ধুর কি সব ফালতু সেন্টিমেন্টস নিয়ে কথা বলছি। এতসব দেখলে কি আর আপনার চলবে। আপনার যে এখনও নোবেল প্রাইজ পাওয়া বাকী। দরিদ্র লোকগুলির জীবিত লাশ পাড়ি দিয়ে আপনাকে যে এখনও হাঁটতে হবে অনেক অনেক দূরের পথ। পেছনে ফিরে তাকালে কি আর একজন সফল মানুষ হওয়া যায়।)
সে টান দিয়ে জোঁকটি পা থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে। একেবারে কামড় দিয়ে ধরে আছে। অনেক্ষনের চেষ্টার পর ছাড়াতে পারে। ছেলে অবাক হয়ে বাবার দিকে তাকিয়ে আছে। তার বাবা কত সাহসী।
সারাদিনের অমানুষিক পরিশ্রমের পর বাপ ছেলে ঘরে ফিরে আসে। এই সময়টুকুর জন্য আমির আলি সারাদিন অপেক্ষা করে থাকে। বাবুর মা না খেয়ে তাদের দুইজনের জন্য ভাত বেড়ে বারান্দায় বসে থাকবে। তারা সবাই মিলে একসাথে খেতে বসবে। খাবার মাঝে টুকটাক সাংসারিক আলাপ চলবে। আহ, পরিবারের এই ভালবাসার কাছে সারাদিনের ক্লান্তি কত তুচ্ছ হয়ে পড়ে।
ঘরে এসে আমির আলি অবাক হয় অনেক লোকজন দেখে। এরা সব এসেছে ব্যাংক থেকে। পর পর কয়েকটি কিস্তির টাকা বাকী পড়াতে তারা তার গোলা থেকে ধান, ঘরের চালা সব খুলে নিয়ে যাচ্ছে। যাবার সময় শাসিয়ে দিয়ে যাচ্ছে বাকী টাকা কালকের মধ্যে শোধ না হলে পুলিশ দিয়ে তাকে ধরিয়ে দেয়া হবে।
আমির আলি ক্লান্তিতে ঘর্মাক্ত দেহ নিয়ে মাটিতে বসে পড়ে। অনেক দিন ধরে সংসারে টানাটানি যাচ্ছে। যা আয় হয় তার সব টাকাই ব্যংকের কিস্তি শোধ করতেই চলে যায়। এ বছর ভাল ফসল হয়েছে। ভেবে ছিল এবার হয়ত ব্যাংকের টাকা শোধ করে দিতে পারবে। কিন্তু সেই সময়টুকু আর সে পেল না। বাবুর মা বাবুকে কোলে নিয়ে নিরবে কাঁদছে। বারান্দার দাওয়ায় বাড়া ভাত তেমনিই পড়ে আছে।
ছেলে তাকিয়ে দেখে বাবার গাল বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। সে খুব অবাক হয়। তার বাবা কত সাহসী, কত বড় জোঁকটাকে কিভাবে টেনে পা থেকে টেনে ফেলে ছিলেন। তাহলে এই লোকগুলিকে তার বাবা কিছু বলছে না কেন। ধানগুলি সারা বছর ধরে তারা দুইজনে মিলে কত কষ্ট করে গোলায় তুলেছিল। লোকগুলি সব নিয়ে যাচ্ছে।
আমির আলি ছেলের চোখের দিকে তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নেয়। সে আজ আর ছেলেকে কোন অভয় বাণী দিতে পারে না। ছেলেকে সে কিভাবে বুঝাবে জমির জোঁক থেকে মুক্তি পাওয়া যায় কিন্তু এখন সামনে মানুষরূপী যে জোঁকগুলি দাড়িয়ে আছে তাদের হাত থেকে মুক্তির কোন উপায় তার জানা নাই। সত্যিকারের জোঁক কয়েক ফোটা রক্ত খেয়েই থেমে যায়। কিন্তু এই জোঁকগুলি অনবরত মানুষের রক্ত খেয়েই চলে।
ছেলে অনবরত ডেকেই চলেছে-বাবা, ও বাবা। আমির আলি লজ্জায় ছেলের দিকে মুখ তোলে তাকাতে পারছেন না। আজ তিনি জীবন যুদ্ধে পরাজিত এক ভীতু বাবা।
(স্যার ফজলে হাসান আবেদ বিশ্বের সবচেয়ে বড় এনজিও ব্র্যাক এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান। ১৯৭১ সালে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে তিনি ব্র্যাক, কালক্রমে যা দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি সংস্থায় পরিণত হয়। দেশের বাইরে এশিয়া এবং আফ্রিকার ৮টি দেশে ব্র্যাক এর কার্যক্রম বিস্তৃত। কাজের স্বীকৃতি হিসাবে পেয়েছেন রেমন ম্যাগসাসে পুরস্কার, ইউএনডিপি পুরস্কার, ক্লিনটন গোবাল সিটিজেন পুরস্কার এবং সবশেষে এ বছরই পেলেন ব্রিটেনের রাজপরিবার থেকে নাইট উপাধি।
আহ্ একটা মানুষের জীবনে এর চেয়ে বেশী আর কিইবা চাইবার থাকে। আমাদের এই সবুজ দেশটাকে বিশ্ব দরবারে তিনি নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। এর জন্য আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নাই।
কিন্তু স্যার আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন ব্র্যাক এর শাখাগুলি কর্মীদের জন্য মোটা অংকের বেতন আর ঝা চকচকে জৌলুস নিয়ে কিভাবে বেড়ে উঠছে। একমাত্র উচ্চহারের সুদের কারণেই এটা সম্ভবপর হয়েছে। ঋণ আদায়ের নামে আপনার লোকেরা দরিদ্র পরিবারগুলির উপর কি পরিমাণ অত্যাচার করে আপনার কি কোন ধারণা আছে।
এর পেছনে যে কত অসহায় পরিবারের কান্না লুকিয়ে আছে তা কি আপনি কখনও অনুভব করেছেন। আপনি কি রাতে একজন সাধারন লোকের মতই ঘুমাতে পারেন। অসহায় মুখগুলি কি দুঃস্বপ্ন হয়ে আপনাকে তাড়া করে ফেরে না। চোখ বন্ধ করলে কি এদের কান্নার শব্দ আপনার কানে ভেসে আসে না।
ধুর কি সব ফালতু সেন্টিমেন্টস নিয়ে কথা বলছি। এতসব দেখলে কি আর আপনার চলবে। আপনার যে এখনও নোবেল প্রাইজ পাওয়া বাকী। দরিদ্র লোকগুলির জীবিত লাশ পাড়ি দিয়ে আপনাকে যে এখনও হাঁটতে হবে অনেক অনেক দূরের পথ। পেছনে ফিরে তাকালে কি আর একজন সফল মানুষ হওয়া যায়।)
Subscribe to:
Posts (Atom)